ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
সাতটা নয়, জেকব ব্লেকের গেঞ্জি টেনে ধরে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে পর-পর আটটা গুলি চালিয়েছিল পুলিশ! মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) সংবাদমাধ্যমের কাছে এমনটাই দাবি করলেন জেকবের বাবা। ‘‘কোমরের নীচ থেকে ছেলেটার শরীর এখন অসাড়। আটটা ফুটো— ওরা আমার ছেলেটাকে পুরো ঝাঁঝরা করে দিয়েছে। ও কি আর আদৌ উঠতে পারবে কোনও দিন?’’ বললেন সিনিয়র জেকব ব্লেক। যুবকের পক্ষাঘাত সাময়িক কিনা, নিশ্চিত করেননি চিকিৎসকেরা। তবে সূত্রের খবর, জেকবের শারীরিক পরিস্থিতি এখনও আশঙ্কাজনক।
গত রোববার (২৩ আগস্ট) প্রকাশ্য রাস্তায় মার্কিন পুলিশের ওই কৃষ্ণাঙ্গ-নির্যাতনের জেরে বিক্ষোভ-প্রতিবাদে সেদিন রাত থেকে উত্তপ্ত উইসকনসিন প্রদেশের কেনোশা শহর। কারফিউর তোয়াক্কা না-করেই পথে নেমেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। প্রতিবাদ মিছিল থেকেই পুলিশের দিকে উড়ে আসে বাজি, বোতল। শুধু হাতাহাতি নয়, বিক্ষোভ দমনে পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠিচার্জ ও প্রায় ৩০ মিনিট ধরে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানোর অভিযোগও উঠেছে।
গত কালই জেকবের মা বিক্ষোভকারীদের শান্তি বজায় রাখার আর্জি জানিয়েছিলেন। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মুখে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ বিক্ষোভে ফের উত্তাল হয়ে উঠল অ্যামেরিকা। টানা বিক্ষোভে কারফিউ ভেঙে পুলিশের চোখে চোখ রেখেই স্লোগান দিচ্ছে বিক্ষুব্ধ জনতা।
এবার বিক্ষোভ এতটাই তীব্র যে বিচার না হওয়া পর্যন্ত রাস্তায় থাকবে বলে জানিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। তারা স্লোগান দিচ্ছে, ‘নো জাস্টিস, নো পিস।’ তবে এত কিছুর পরেও রোববারের ওই ঘটনা নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে এখনও কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। এখনও পর্যন্ত অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারদের নামপ্রকাশ করা হয়নি। এক জন নিরস্ত্রকে কেন পিছন থেকে গুলি করতে হল, তারও ব্যাখ্যা মেলেনি পুলিশের তরফ থেকে।
ঘটনার যে ভিডিওটি রোববার থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, বছর বাইশের রেসিন হোয়াইট নামের এক যুবক জানিয়েছেন, সেটি তার ধারণ করা। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, ঘটনার সময়ে ‘ছুরি ফেলে দাও’ বলে বার বার পুলিশকে তিনি চিৎকার করতে শুনেছিলেন। অথচ জেকব নিরস্ত্র ছিলেন বলেই দাবি রেসিনের। উইসকনসিনের গভর্নর টনি এভার্সও জানিয়েছেন, জেকবের হাতে কোনও রকম অস্ত্র ছিল বলে তার জানা নেই।
এই ঘটনা নিয়ে গভর্নরের যাবতীয় মন্তব্যকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়ে কেনোশা পুলিশ ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট পি ডিটস বলেন, ‘‘ভাইরাল ভিডিওই তো আর ঘটনার সবটা নয়। এমন নাটকীয় ঘটনার আগে-পরে কী হল, সবটাই জানতে হবে।’’ কিন্তু জানাবে কে? ‘তদন্ত চলছে’ বলে মুখ বন্ধ রেখেছে পুলিশ। জানা গেছে, কেনোশা পুলিশের বডি-ক্যামেরা না-থাকলেও, বডি-মাইক্রোফোন আছে। ঘটনার তথ্যপ্রমাণ হিসেবে যা জমা পড়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।