ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
রাশিয়ার রাজধানী মস্কো থেকে ১০০ কিমি দক্ষিণে অবস্থিত টুলা শহরের ঘটনা। এই শহরের এক হাসপাতালে পুরুষদের ওয়ার্ডে সেবা দেন ওই নার্স।
সম্প্রতি এক সকালে তিনি প্রথমবার যখন ওয়ার্ডে ঢুকলেন, রোগীদের চোখ ছানাবড়া। তাদের চোখের সামনে নার্স রূপে অন্তর্বাস পরা এক নারী। অবশ্য শুধু অন্তর্বাস নয়, উপরে পিপিই কিট পরেছেন তিনি। তবে সেই পিপিই কিট এতটাই ট্রান্সপারেন্ট অর্থাৎ স্বচ্ছ যে ভিতরের অন্তর্বাস দেখা যাচ্ছে স্পষ্ট।
নার্সের এমন সাহসী পদক্ষেপ রোগীদের মধ্যে কারও তোলার সূত্রে ছড়িয়ে পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। আর মূহুর্তেই তা ভাইরাল!
অবশ্য ঐ নার্সের নাম জানা যায়নি। তাতে কি! সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এরিমধ্যে তার নাম দেয়া হয়েছে 'নার্স নাদিয়া'।
এমন স্বচ্ছ পোশাক পরে সেবা দেওয়ায় কিন্তু রোগীদের মধ্যে কোনও অভিযোগ নেই। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এতটা সাহস মেনে নিতে পারেনি। এমন ঘটনার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেই নার্সকে বরখাস্তের হুমকিও দিয়েছিল।
কিন্তু পেশাদার হিসাবে যথেষ্ট সুনাম থাকায় সেই নার্সের তেমন কিছুই হয়নি। তাছাড়া করোনার এই দুঃসময়ে একজন নার্সকে ছাঁটাই করলে মহা মুশকিলে পড়তে হবে। তাই ২৩ বছর বয়সী ঐ নার্স কাজেই বহাল আছেন।
কিন্তু এমন অদ্ভুত আচরণ করেছিলেন কেন 'নার্স নাদিয়া'? জবাবে তিনি জানান অদ্ভুত কারণ!
সেই নার্স জানান, ''পিপিই কিট পরে কাজ করা কষ্টকর। সারাক্ষণ পিপিই পরে থাকলে খুব গরম লাগে। আমি প্রথমে বুঝতে পারিনি যে পিপিই কিট আসলে ট্রান্সপারেন্ট। বুঝিনি, আমার অন্তর্বাস দেখা যাবে।''
পিপিই কিট নিয়ে এমনিতেই প্রচুর আলোচনা হচ্ছে। বিশ্বের প্রায় সব দেশেই চিকিৎসকরা পর্যাপ্ত পিপিই কিট পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। এমন অবস্থায় সেই নার্স আরও একবার পিপিই কিটকে আলোর নিচে নিয়ে এলেন।
যদিও সেই নার্সের এমন যুক্তি কেউ মানতে নারাজ। তাতে অবশ্য তারও কিছু যায় আসে না! তিনি যেটা ঠিক মনে হয়েছে সেটাই করেছেন। আর একজন রোগীও তার এই পোশাক নিয়ে অভিযোগ করেননি। অনেকে আবার বলেছেন, 'সেই সেবিকা করোনা আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে একটু হাসির পরিবেশ ফিরিয়ে দিয়েছেন। তার শাস্তি হওয়া একেবারেই উচিত নয়। বরং তাকে পুরস্কার দেওয়া উচিত।'
রাশিয়ায় ক্রমেই বাড়ছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। এরিমধ্যে রাশিয়ার চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বহু চিকিৎসক। জানুয়ারি মাসে প্রথম করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছিল রাশিয়ায়। তার পর থেকে সংক্রমণ বেড়েই চলেছে।