ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বার্লিনে মিত্র বাহিনীর ব্যাপক বোমা বর্ষণ ও গুলির লড়াইয়ের মাঝেও বেঁচে যাওয়া ইতিহাসের সাক্ষী কুমির 'স্যাটার্ন' মারা গেছে।
রাশিয়ার মস্কোর একটি চিড়িয়াখানায় সেটির মৃত্যু হল। কথিত আছে, নাৎসি নেতা অ্যাডলফ হিটলারের পোষা কুমির ছিল। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ এটির নাম দিয়েছিল 'স্যাটার্ন'।
মিসিসিপি কুমীরটির বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। রবিবার (২৪ মে) সকালে 'স্যাটার্ন' বার্ধক্যজনিত কারণে মারা গেছে বলে জানায় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।
নাৎসি স্বৈরশাসক হিটলারের বিদেশি প্রাণী সংগ্রহের ব্যাপক আগ্রহ ছিল। তাঁর সংগ্রহে নানা প্রজাতির প্রাণী ছিল বলে জানা যায়। গুঞ্জন ছিল 'স্যাটার্ন' তাঁর ব্যক্তিগত পোষা প্রাণী ছিল।
আমেরিকায় জন্ম হয়েছিল 'স্যাটার্ন'এর। পরে ১৯৩৬ সালে বার্লিন চিড়িয়াখানাকে সেটি উপহার হিসাবে দেওয়া হয়েছিল। ১৯৪৩ সালে সেই চিড়িয়াখানার উপর ব্যাপক বোমা বর্ষণ হয়েছিল। চিড়িয়াখানার বাকি পশু-পাখি মারা গেলেও বেঁচে যায় একমাত্র 'স্যাটার্ন'। ব্রিটিশ আর্মির সেনারা স্যাটার্নকে খুঁজে পায় প্রায় তিন বছর পর। এর পর স্যাটার্নকে উপহার হিসাবে দেওয়া হয় মস্কোর চিড়িয়াখানায়।
গোটা চিড়িয়াখানা যখন ব্যাপক বোমা বর্ষণে তছনছ হয়ে গিয়েছিল, তখন স্যাটার্ন কী করে বাঁচল? এই ঘটনাটি রহস্য হয়েই থেকে গেল। মস্কো চিড়িয়াখানায় হিটলারের পোষা এই কুমীরটিকে দেখতে ব্যাপক ভিড় জমত। মস্কো চিড়িয়াখানায় যখন নিয়ে যাওয়া হয় তখন স্যাটার্নের বয়স ছিল ১০ বছর। অর্থাৎ গত ৭৪ বছর ধরে সেখানেই ছিল স্যাটার্ন। ফলে স্বাভাবিকভাবেই তাঁর চলে যাওয়ায় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের মন খারাপ।
https://twitter.com/i/status/1264144771020439552
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যে ব্যক্তি স্যাটার্নের পরিচর্যা করত তাকে ভালভাবে চিনত সে। রাগ হলে স্টিলের চামচ বা কংক্রিটের দেওয়াল ভেঙে দেওয়ার মতো শক্তি ছিল এটির। মিসিসিপি কুমির সাধারণত ৩০ থেকে ৫০ বছর বাঁচে। কিন্তু স্যাটার্ন ছিল বিরল। সার্বিয়ার বেলগ্রেড চিড়িয়াখানায় আরেকটি কুমীর রয়েছে যার বয়স ৮০ বছর। স্যাটার্ন তার থেকেও বয়সে বড় ছিল। মস্কোর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ অবশ্য স্বীকার করে না যে স্যাটার্ন হিটলারের পোষা কুমীর ছিল।
সূত্র- বিবিসি।