ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
মানুষ যে কতটা নৃশংস হতে পারে তার আন্দাজ পাওয়া সত্যিই কঠিন। সম্প্রতি এমনই নতুন নজির গড়েছে কেরালার পালাককাদ জেলার মানুষ।
সেখানে আনারসের মধ্যে বিস্ফোরক ভরে খাওয়ানো হয়েছিল একটি হাতিকে। মুখের ভেতর বিস্ফোরণ হওয়ায় জিভ পুড়ে যায় তার। মুখের ভেতর গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়। দিনের পর দিন সেই ক্ষতের জ্বালা ও যন্ত্রণা নিয়ে গ্রামের আশেপাশে ঘুরে বেড়ায় সেই হাতি। তারপর ধীরে ধীরে ঢলে পড়ে মৃত্যুর কোলে।
কেরলের পালাককাদ জেলার এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নিন্দার ঝড় উঠে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করেন অনেকে। যদিও পুলিস এই ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে কাউকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি। তবে মামলা দায়ের হয়েছে। তদন্তে নেমেছে পুলিস।
বন দফতরের কর্মীরা মনে করছেন, এপ্রিল মাসের শেষে না হলে মে মাসের শুরুতে ঘটনাটি ঘটেছিল। হাতির অটোপসি রিপোর্ট হাতে পেয়েছেন বন দফতরের কর্তারা। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, হাতিটি জখম হয়েছিল অন্তত বিশ দিন আগে।
অভয়ারণ্য থেকে কাছের গ্রামে চলে এসেছিল হাতিটি। তারপরই গ্রামবাসীরা তাকে বিস্ফোরক ভর্তি আনারস খাইয়ে দেয়। হাতিটি গর্ভবতী ছিল। মুখে ভেতর প্রচণ্ড বিস্ফোরণে হাতিটি ভয়ানক আহত হয়। যন্ত্রণা ও খিদের জ্বালায় সে বেশ কিছুদিন গ্রামের আশপাশে ঘুরতে থাকে। শেষ পর্যন্ত ভেল্লিয়ার নদীতে নেমে যায়। পানিতে থাকলে যদি জ্বালা যন্ত্রণা কিছুটা কমে সেই আশায়। এর পর নদীতে দাঁড়ানো অবস্থাতেই মারা যায় হাতিটি। বন দফতরের অফিসার মোহন কৃষ্ণন গোটা ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরেছিলেন। আর তারপর থেকেই নিন্দার ঝড় উঠেছে।
দুটি হাতির সাহায্যে ওই হাতিটির মৃতদেহ নদী থেকে তুলে আনা হয়। বন দফতরের কর্মীদের কারও কারও ধারণা, পোড়া ক্ষতে মাছি বা অন্য কোনও পোকা যাতে ডিম পাড়তে না পারে সেই জন্য হাতিটি পানিতে নেমে গিয়েছিল।
আবার কেউ কেউ বলছেন, মুখের প্রচণ্ড জ্বালা থেকে বাঁচতে হাতিটি পানিতে মুখ ও শুর ডুবিয়ে রেখেছিল। কেরালার ওই অঞ্চলে হাতি তাড়াতে বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়। বিস্ফোরণের আওয়াজে হাতিরা আর ফসলের কাছাকাছি আসে না। কিন্তু এমন পৈশাচিক কাণ্ড এর আগে কখনও শোনা যায়নি।