ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী চালাচ্ছে ভয়ানক তাণ্ডব। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একে ‘বৈশ্বিক মহামারী’ ঘোষণা করেছে। কিন্তু সব প্রান্তে এর আক্রমণ হলেও এখন পর্যন্ত মুক্ত রয়েছে অন্তত ১২টি দেশ।
শুক্রবার (১৭ জুলাই) পর্যন্ত সরকারি বা বেসরকারিভাবে সংক্রমণের কোনো খবর পাওয়া যায়নি এসব দেশে। দেশগুলোর বেশির ভাগই ওশেনিয়া মহাদেশে অবস্থিত।
দেশগুলো যথাক্রমে- ১. উত্তর কোরিয়া ২. তুর্কমেনিস্তান ৩. সলোমান আইল্যান্ড ৪. ভানুয়াতু ৫. সামোয়া ৬. কিরিবাতি ৭. মাইক্রোনেশিয়া ৮. টোঙ্গা ৯. মার্শাল আইল্যান্ড ১০. পালাউ ১১. ট্যুভালু ও ১২. নাউরু। করোনামুক্ত রয়েছে ভারতের লাক্ষাদ্বীপও। ৩৬টি দ্বীপ ও ৭০ লাখ বাসিন্দা নিয়ে গঠিত আরব সাগরের এই দ্বীপপুঞ্জটিতে আজও পর্যন্ত একজনও শনাক্ত হয়নি। খবর-কোরীয় গ্রুপ ও আলজাজিরার।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরের দিকে চীনের সীমানার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। এরপর যতই দিন যায়, ততই ছড়িয়ে পড়তে থাকে দেশে দেশে। সংক্রমণের এক মাসের মাথায় একে প্যানডেমিক তথা বৈশ্বিক মহামারী ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্রিউএইচও)।
বিশ্বে দুই শতাধিক দেশ ও আন্তর্জাতিক অঞ্চল রয়েছে। এর মধ্যে জাতিসংঘ স্বীকৃত দেশ ১৯৩টি। ডব্রিউএইচওর তথ্য মতে, ছয় মাসে ভাইরাসটি ১৮৮টি দেশে হানা দিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপঘেরা ১২টি দেশে পৌঁছতে পারেনি। এপ্রিলের ১৩ তারিখ পর্যন্ত এ তালিকায় ছিল ১৬টি দেশ। তার মধ্যে চারটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা।
সবশেষ করোনা ছড়িয়ে পড়া দেশের তালিকায় রয়েছে। কমোরস, লেসোথো, সাও টোমে অ্যান্ড প্রিন্সিপে ও তাজিকিস্তান। তবে অদূরভবিষ্যতে বাকি দেশগুলোতেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই।
কিন্তু করোনা যখন বিশ্বের আনাচে-কানাচে পৌঁছে গেছে, তখন উপরোক্ত দেশগুলো কিভাবে মুক্ত থাকল সে বিষয়ে বিশ্লেষকদের মতামত এখানে তুলে ধরা হল-
উত্তর কোরিয়া- চীনা প্রাদুর্ভাবের পরই বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে নিজেদের সীমান্ত সিলগালা করে দেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। ২১ জানুয়ারি চীনের ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী দেশটির সীমান্ত বন্ধ হওয়ার পর আজ পর্যন্ত খোলা হয়নি।
সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউনসহ নানা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়। এর মধ্যে বিদেশ থেকে দেশে ফেরা নাগরিকদের জন্য এক থেকে দুই মাস কোয়ারেন্টিনে রাখা অন্যতম। দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত সংক্রমণের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
তুর্কমেনিস্তান- উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান, ইরান ও আফগানিস্তানের সীমান্ত দিয়ে ঘেরা মধ্য-এশিয়ার অন্যতম দেশ তুর্কমেনিস্তান। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে করোনার খবরের সঙ্গে সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দেয় দেশটির সরকার। ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই চীনসহ অন্যান্য দেশ থেকে বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয়। সেই সঙ্গে সিলগালা করে সীমান্ত। এখন পর্যন্ত বিদেশের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
ওশেনিয়া মহাদেশের ১০ দেশ- তিন ওশেনিয়া মহাদেশের দেশগুলোতে বিশ্বের সবচেয়ে কম লোক যাতায়াত করে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় এমন ১০টি দেশই কোভিড-১৯ মুক্ত। দেশগুলোতে করোনা না পৌঁছানোর অনেক কারণ রয়েছে।
তার মধ্যে অন্যতম এগুলোর দুর্গম ভৌগোলিক অবস্থা। দ্বীপদেশ হওয়ায় লোকজনের যাতায়াত কম। ঘনবসতিও নেই। ফলে সেখানকার বাসিন্দারা এমনিতেই বিচ্ছিন্ন জীবনযাপন করে। প্রাকৃতিকভাবে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করা সহজ হয় এসব দেশে।
সান নিউজ/ আরএইচ