রাসেল মাহমুদ : করোনা মহামারির সময়ে দেশের ব্যাংকিং সেবা বন্ধ হলেও অর্থ লেনদেনের জন্য মোবাইল ব্যাংকিং সেবা সচল ছিলো। এ সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার এসেছে বড় ধরনের পরিবর্তন। ফলে গত এক বছরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে বেড়েছে লেনদেন। যার পরিমান এক লাখ ২৭ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা, যা শতকরা হিসাবে ২৯.২৬ শতাংশ। গেছে। শুধু লেনদেনই নয়, ২০২০ সালে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের এজেন্ট বেড়েছে ৮৭ হাজার ২৭৭ জন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে, ব্যাংকিং সেবা সাধারণের কাছে পৌঁছে দিতে এবং সহজ করতে দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু হয়। দেশে বর্তমানে ১৫টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা দিচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবার গ্রাহকরা পাঁচ লাখ ৬১ হাজার ৬২৩ কোটি টাকা লেনদেন করেছেন। এই সংখ্যা ২০১৯ সালে ছিল চার লাখ ৩৪ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। ওই বছর লেনদেন প্রবৃদ্ধি ছিল ২০.৪১ শতাংশ।
পরিসংখ্যান থেকে আরও জানা যায়, ২০২০ সালে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত গ্রাহক বেড়েছে প্রায় দুই কোটি।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষে দেশে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নিবন্ধিত গ্রাহক ছিল সাত কোটি ৯৫ লাখ। ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে নয় কোটি ৯৩ লাখ ৩৬ হাজার।
মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, এক বছরের ব্যবধানে এত বড় প্রবৃদ্ধি অন্য কোনো সেবা খাতে সচারচর দেখা যায়নি।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর দুই মাসের বেশি সময় সাধারণ ছুটির কারণে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। এ সময়ে আর্থিক প্রয়োজনে স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা চিন্তা করে অনেকেই মোবাইল ব্যাংকিংয়ে যুক্ত হয়। সহজ লেনদেনের সুযোগ থাকায় এ সেবার প্রতি মানুষের আস্থা বাড়তে থাকে।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ও ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের প্রবৃদ্ধি আর্থিক খাতের ডিজিটালাইজেশনের ক্ষেত্রে মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে। কয়েক বছর আগেও মানুষ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে কেবল এক স্থান থেকে অন্য স্থানে টাকা পাঠাতো; কিন্তু বর্তমানে কেনাকাটার ক্ষেত্রে পেমেন্টের অন্যতম প্রধান মাধ্যম মোবাইল ব্যাংকিং।
বর্তমানে ই-কমার্সের পাশাপাশি পাড়া-মহল্লার মুদি দোকানে কেনাকাটায়ও অনেকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পণ্যের দাম দিচ্ছেন। তা ছাড়া বিভিন্ন বিল দেয়ার ক্ষেত্রে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসকেও বেছে নেয়া হচ্ছে।
বর্তমানে ‘নগদ’ এর নেটওয়ার্কে ১২ হাজার মার্চেন্ট রয়েছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। পাঁচ শ’র বেশি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে ‘নগদ’ এর মাধ্যমে দাম পরিশোধ করা হচ্ছে। কোভিড টেস্টের ফিও ‘নগদ’ এর মাধ্যমে দেয়া যাচ্ছে।
সান নিউজ/এসএম