নিজস্ব প্রতিবেদক:
এসো হে বৈশাখ... এসো এসো…। রমনা বটমূলে বাজেনি এই আগমনী গান । বাজেনি ঢোল-ডাগর। সাজানো হয়নি সড়কের মোড়গুলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় নেই রং-বেরঙের প্রতিচ্ছবি, নেই আলপনার মুখোশ, মঙ্গল শোভাযাত্রা। তারপরও থেমে নেই তার আগমনী। বৈশাখ যে এসেছে ধরায়। গান বেজেনি বলে বৈশাখ রবেকি ভুলিয়া।
ভুলেনি সে। একাই এসেছে বৈশাখ, চৈত্র সরিয়া। রংহীন, বর্ণহীন এমন অন্য রকম বৈশাখ কি দেখেছে ধরা। সড়কের মোড়ে মোড়ে আলপনা আর গ্রাম বাংলা প্রতিচ্ছবি না থাকলেও এসে গেছে বাঙালির প্রাণের বৈশাখ।
আজ পহেলা বৈশাখ, ১৪২৭ বাংলা সনের প্রথম দিন। নতুন বছরে সব হতাশা, গ্লানি আর আতঙ্ক ধুয়ে-মুছে সাফ হয়ে যাক, এই প্রার্থনা দেশবাসীকে করতে হবে ঘরে বসেই। বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে নববর্ষের সব অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। তাই প্রাণের বৈশাখকে উদযাপন করতে পারছে না বাঙালি জাতি। দেশে ৫৬ বছরের ইতিহাসে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে দ্বিতীয়বারের মতো ছেদ পড়ল বাংলা নববর্ষ উদযাপনে।
বাংলা ১৩৭১, ইংরেজি ১৯৬৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন। যার বিশেষ আকর্ষণ রমনার বটমূলের ছায়ানটের পরিবেশনা এবং মঙ্গল শোভাযাত্রা। এর আগে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকলীন সময়ে অনুষ্ঠিত হয়নি জাতীয় উৎসবে পরিণত হওয়া এই আয়োজন ।
করোনাভাইরাসের কারণে এবার নেই রমনা বা চারুকলায় ভিড়, দোকানে-বাজারে হালখাতা, নতুন জামা গায়ে চাপিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে বসে দেদার আড্ডা দেয়া। বছরে অন্তত একদিন পুরোদস্তুর বাঙালি হয়ে ওঠা আর হলো না। হলোনা বাউল আর লোক সংগীতের আসর বসানো।
তাই বলে কি মনের উৎসব থেমে থাকবে। করোনাভাইরাস নামে পরিচিক কোভিন-১৯ পারেনি বাঙালির মনের উৎসবকে থামিয়ে রাখতে। রঙিন হয়ে আছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের পাতাগুলো।
ফেসবুকে বাঙালি উদযাপন করছে বাংলা নববর্ষ- ১৪২৭। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নববর্ষের শুভেচ্ছা জানানো হচ্ছে একে অপরকে। একই সাথে কামনা করছে করোনাভাইরাস থেকে মুক্তির। এবার ফেসবুকময় বাংলা নববর্ষ উদযাপন করছে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ।
সামাজিক দূরত্ব রজায় রাখার কারণে বাসায় অবস্থান করছে পরিবারের সবাই। রেস্টুরেন্টে ঢু মারতে না পারলেও বাসায় রান্না করা হয়েছে নানা সাদের মুখরোচ খাবার। ঘরে বসে অন্যরকম এক বৈশাখ উপভোগ করছে বাঙালি জাতি। যা এর আগে দেখেনি তারা।
বাংলা নববর্ষে সবার চাওয়া বিশ্ববাসীর দ্রুত মুক্তি পাক করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে।