নিজস্ব প্রতিবেদক:
করোনাভাইরাসের কারণে দেশব্যাপী সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। ফলে অধিকাংশ অফিস বন্ধ। তবে সীমিত আকারে চলছে ব্যাংকিং কার্যক্রম। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যেসব কর্মকর্তা অফিস করছেন তারা পাবেন বাড়তি ভাতা। সাধারণ ছুটি শুরুর পর কেউ ১০ দিন অফিস করলেই তাকে বাড়তি এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ টাকা দিতে হবে। ১০ দিনের কম উপস্থিতি হলে সে ক্ষেত্রেও আনুপাতিক হারে তিনি ভাতা পাবেন।
সোমবার (১৩ এপ্রিল) এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এতে বলা হয়েছে, ব্যাংকে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী যারা সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি-কালীন ব্যাংকে সশরীরে গমনপূর্বক ব্যাংকিং কার্যক্রমে অংশগ্রহণের মাধ্যমে দায়িত্ব পালন করেছেন বা করছেন তারা বিশেষ প্রণোদনা ভাতা প্রাপ্য হবেন। সাধারণ ছুটি-কালীন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কমপক্ষে ১০ কার্যদিবস সশরীরে ব্যাংকে কর্মরত থাকলে তা পূর্ণমাস হিসেবে গণ্য হবে। তবে ১০ কার্যদিবসের কম সশরীরে ব্যাংকে কর্মরত থাকলে সেক্ষেত্রে আনুপাতিক হারে ভাতা প্রাপ্য হবেন। ব্যাংকের স্থায়ী, অস্থায়ী ও চুক্তিভিত্তিক সব পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এ সুবিধায় অন্তর্ভুক্ত হবেন।
কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের স্ব স্ব মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ মাসিক বিশেষ প্রণোদনা ভাতা হিসেবে প্রাপ্য হবেন। যেসব অস্থায়ী বা চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মূল বেতন আলাদাভাবে নির্ধারিত নেই তারা মাসিক মোট বেতন-ভাতার ৬৫ শতাংশ মাসিক বিশেষ প্রণোদনা ভাতা হিসেবে প্রাপ্য হবেন।
তবে সবক্ষেত্রেই এ বিশেষ প্রণোদনা ভাতার পরিমাণ মাসিক ন্যূনতম ৩০ হাজার টাকা ও সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা হবে। সাধারণ ছুটি শুরু হওয়ার তারিখ থেকে মাস গণনা শুরু হবে। প্রতি ৩০ দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর পুনরায় নতুন মাস গণনা শুরু হবে। এ নির্দেশনা সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির মেয়াদকাল পর্যন্ত বলবত থাকবে।
ব্যাংকিং দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কিছু সংখ্যক ব্যাংক কর্মকর্তা ও কর্মচারী ইতোমধ্যে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়েছেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি-কালীন ব্যাংকিং খাতকে সচল রাখতে যারা তাদের জীবন ও পরিবারকে ঝুঁকিতে রেখে সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন তাদের দায়িত্ব পালনের স্বীকৃতি স্বরূপ বিশেষ প্রণোদনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এর আগে রবিবার (১২ এপ্রিল) ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংককের (বিএবি) নির্বাহী কমিটির এক সভায় সিদ্ধান্ত হয়, দায়িত্ব পালনের সময় কারও অসুস্থতা বা করোনা সংক্রমণ হলে তার সম্পূর্ণ চিকিৎসা ব্যয় বহন করবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক। করোনায় সংক্রমণ হয়ে কেউ মারা গেলে তার পরিবারকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেয়া হবে।