ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
ভারত-চীন চলমান সীমান্ত সংঘাত ও উত্তেজনার মধ্যে লিপুলেখ সীমান্তে সেনা মোতায়েন করেছে নেপাল। নেপাল সরকারের নির্দেশে ভারতের উত্তরাখণ্ডের লিপুলেখ এলাকার কালাপানি উপত্যকায় কর্তব্যরত ভারতীয় সেনা জওয়ানদের ওপর নজরদারি শুরু করেছে নেপালি বাহিনী। ভারত, চীন ও নেপালের মধ্যে ত্রি-সংযোগ এলাকায় লিপুলেখের অবস্থান। এটি উত্তরাখণ্ডের কালাপানি উপত্যকার উপরের অংশে অবস্থিত।
সম্প্রতি নেপালের কেপি শর্মা ওলি সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নেপাল আর্মড পুলিশ ফোর্সের (এনএপিএফ) কাছে একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয়। ওই নির্দেশিকায় উত্তরাখণ্ডের কালাপানি উপত্যকায় থাকা ভারত, চীন ও নেপালের সীমান্তে আরও ‘এনএপিএফ’ মোতায়েন করতে বলা হয়েছে। ওই বাহিনী কর্তব্যরত ভারতীয় সেনা জওয়ানদের উপরে নজরদারি চালাবে। এরপরেই লিপুলেখ সীমান্তে নেপাল আর্মড পুলিশ ফোর্সের ৪৪ নম্বর ব্যাটেলিয়ানকে মোতায়েন করা হয়েছে।
নেপাল সরকারের নির্দেশে বলা হয়েছে ভারত ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে, সেজন্য লিপুলেখ সীমান্তে কঠোর নজরদারি করা প্রয়োজন। ‘এনএপিএফ’ ভারত ও চীনের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা পর্যবেক্ষণ করতে সরকারের কাছে দূরগামী টহল দেওয়ার জন্য অনুমতি চেয়েছে।
সম্প্রতি লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চীন সীমান্ত সংঘর্ষের পর চীন, লিপুলেখ সীমান্তের ওপারে সেনা মোতায়েন শুরু করেছে। তিনটি দেশের সীমান্তে ১৫০ লাইট কম্বাইন্ড আর্মস ব্রিগেডকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গত জুলাইতে সীমান্ত থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পালা এলাকায় চীনা সামরিক চৌকিতে সেনা মোতায়েন শুরু হয়। প্রথমে সেখানে এক হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়। পরে সেখানে আরও দু’হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
নেপাল সরকারের পক্ষ থেকে গত জুন মাসে সে দেশের সংসদে নতুন মানচিত্র বিল পাস করা হয়। সংশোধিত মানচিত্রে ভারতের উত্তরাখণ্ডের লিপুলেখ, লিমপিয়াধুরা এবং কালাপানি অঞ্চলকে নেপালের অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে। ভারতের প্রায় ৪০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকাকে নেপাল তার নয়া মানচিত্রে নিজেদের বলে দাবি করেছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, কৃত্রিমভাবে এলাকা বৃদ্ধির দাবির ঐতিহাসিক কোনও ভিত্তি নেই। এটা মোটেই সমর্থন করা যায় না। নেপাল এবার সেই লিপুলেখ এলাকাতেই ভারতীয় বাহিনীর ওপরে একনাগাড়ে নজরদারি চালাতে নেপাল আর্মড পুলিশ ফোর্স মোতায়েন করল যা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। চীনের পাশাপাশি নেপালের এরকম পদক্ষেপে ভারত অনেকটা চাপে পড়ে গেছে বলেও অনেক কূটনীতিক বিশ্লেষক ধারণা করছেন।