ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস পাইলটদের এক-তৃতীয়াংশ অসাধু উপায়ে লাইসেন্স সংগ্রহের বিষয়টি উন্মোচিত হওয়ার পরই, ইউরোপীয় ইউনিয়নের অ্যাভিয়েশন সেফটি এজেন্সি (ইএএসএ) সদস্য রাষ্ট্রগুলোতে পিআইএ’র ফ্লাইট বাতিল করেছে।
এদিকে বাংলাদেশে অনিয়মিতভাবে ফ্লাইট পরিচালনা করে পাকিস্তানের রাষ্ট্রায়ত্ত এই বিমান সংস্থা। বর্তমানে বাংলাদেশে তাদের ফ্লাইট চলাচল না করায় চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত না নিলেও পিআইএ’কে পর্যবেক্ষণে রেখেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
পাকিস্তানে তদন্তের পর দেশটির পাইলটদের এক-তৃতীয়াংশ অসাধু উপায়ে লাইসেন্স সংগ্রহ করার বিষয়টি উন্মোচিত হয়। এরপর বিশ্বজুড়ে পিআইএ’র ফ্লাইটের নিরাপত্তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সংস্থাটির কাছে পাঠানো এক চিঠিতে ইএএসএ জানিয়েছে, তারা এই এয়ারলাইনসের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ঘাটতি দেখতে পেয়েছে, তাই তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে।
বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস (পিআইএ) বাংলাদেশে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করছে না। ছয় মাস আগে বাংলাদেশে সবশেষ যাত্রীসেবা দিয়েছিল এই সংস্থা। বর্তমানে ঢাকায় পিআইএ’র ফ্লাইট না থাকায় চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি বেবিচক। তবে তারা পুনরায় ফ্লাইট চালানোর অনুমতি চাইলে তখন তাদের সার্বিক অবস্থান যাচাই করা হবে।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সিদ্ধান্ত ও সার্বিক বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করছে বেবিচক। এরমধ্যে বাংলাদেশে ফ্লাইট পরিচালনাকারী এয়ারলাইনসগুলোতে পাকিস্তানি পাইলট আছে কিনা তা নজরে রাখা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান জানান, ‘পাকিস্তানের পাইলটদের লাইসেন্স নিয়ে অনিয়মের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস (পিআইএ) এখন বাংলাদেশে ফ্লাইট পরিচালনা করছে না। কখনও যদি এই সংস্থা আবারও যাত্রীসেবা দেওয়ার অনুমতি চায়, তখন সবকিছু যাচাই করা হবে। এ মুহূর্তে আমরা সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখেছি।’
জানা গেছে, গত মাসের (জুন) শেষের দিকে পাকিস্তানের এভিয়েশন মন্ত্রী গুলাম সারওয়ার জানান, তার দেশের ৪০ শতাংশ (৮৬০ জনের মধ্যে ২৬২) পাইলটই ভুয়া লাইসেন্সধারী। পাকিস্তানের ২৬২ জন পাইলট নিজেরা পরীক্ষা না দিয়েই লাইসেন্স পেয়েছেন। তাদের হয়ে পরীক্ষা দিয়েছে অন্য কেউ। এরপরেই আইএটিএ’র তরফ থেকে বলা হয়, পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসের পাইলটদের লাইসেন্স সংগ্রহে অনিয়ম পাওয়ার ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণে মারাত্মক ঘাটতি প্রতিফলিত হয়েছে। তাই এই ঘোষণার পর পিআইএ তাদের ৪৩৪ জন পাইলটের মধ্যে ১৫০ জনকে ‘গ্রাউন্ডেড’ করে।
এদিকে ভিয়েতনামের সিভিল এভিয়েশন অথরিটি (সিএএভি) এক বিবৃতিতে জানায়, ভিয়েতনামের এয়ারলাইনসে কর্মরত পাকিস্তানি সব পাইলটকে অব্যাহতির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।