ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
একদিনে আক্রান্ত ৬৯ হাজার! শনিবার (১১ জুলাই) ফের রেকর্ড গড়েছে আমেরিকা। গোটা বিশ্বে মৃত্যু পাঁচ লাখ ৬৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে এক লাখ ৩৬ হাজারই মার্কিন নাগরিক।
তবে এখন আর রেকর্ডের খবরে চমক নেই। এভাবে চললে দৈনিক করোনা-সংক্রমণ যে এক লাখ ছুঁয়ে ফেলবে, সেই ইঙ্গিত আগেই দিয়ে রেখেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
করোনা-পজিটিভ ধরা পড়েছে নর্থ ক্যারোলাইনার সেনেটর ড্যানি ব্রিটের। এই প্রথম জেনেরাল অ্যাসেম্বলির কোনো সদস্যের করোনা ধরা পড়ল।
দেশের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাবেভাবে অবশ্য এসব নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। শঙ্কিত নন তার দেশবাসীর একাংশও। প্যারিসে ডিজনিল্যান্ড খুলে গেছে। ফ্লোরিডাতেও এ বর থিম-পার্ক খুলে দিতে সঙ্কল্পবদ্ধ ওয়াল্ট ডিজনি। অথচ ফ্লোরিডার অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। আমেরিকার আর এক হটস্পট টেক্সাস। সেখানকার গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট জানিয়েছেন, মাস্ক পরা ও পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে পরিস্থিতি সামলানো না গেলে ফের লকডাউনের পথে হাঁটতে হবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট এখনও মাস্ক না-পরলেও, তার প্রভাব থেকে সরে আসছেন রিপাবলিকান নেতারা। তার ঘনিষ্ঠ মহলে এখন মাস্ক পরতে দেখা যাচ্ছে সবাইকে। রিপাবলিকান গভর্নর গ্রেগ বলেন, ‘প্রকাশ্য স্থানে মাস্ক পরাকে যদি আমরা অভ্যেস করতে না পারি, তা হলে সব ব্যবসা-বাণিজ্য শাটডাউন করার পথে হাঁটতে হবে।’
সানফ্রান্সিসকোর কাছে একটি সংশোধনাগারে তিন হাজার ৩০০ বন্দির করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে। এর পরেই আট হাজার বন্দিকে জেল থেকে ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছে ক্যালিফোর্নিয়া।
এরই মধ্যে ওয়াল্ট ডিজনি জানিয়েছে, অর্ল্যান্ডোর থিম পার্ক খুলছেই। কমপক্ষে ১৯ হাজার লোক পার্ক না খোলার আবেদন জানিয়েছিলেন। ডিজনির কর্মী সংগঠনও সংস্থার সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ। ডিজনির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সীমিত সংখ্যক লোককে ঢুকতে দেওয়া হবে পার্কে। তার আগে সকলের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে দেখে নেওয়া হবে। এবং মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। অথচ শুধু শুক্রবারই ফ্লোরিডায় সাড়ে ১১ হাজার লোক নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। সাত হাজার লোককে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। বৃহস্পতিবার (০৯ জুলাই) মারা গেছেন ১২০ জন, শুক্রবার (১০ জুলাই) আরও ৯২ জন। ইউরোপের এক একটা দেশের চেয়েও খারাপ অবস্থা ফ্লোরিডার।
‘করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই স্বাভাবিক জীবনযাপনের চেষ্টা করতে হবে’— দেশবাসীর উদ্দেশে শনিবার এই বার্তা দিয়েছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। সোশ্যাল মিডিয়ার প্রশ্নোত্তর পর্বে এ কথা বলেন তিনি। বরিস নিজেও করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। সুস্থ হওয়ার পরে বলেন, ‘মৃত্যুমুখ থেকে ফিরে এসেছি। যার হয়েছে, সেই জানে এ রোগ কী!’ এদিন তিনি দেশবাসীকে কর্মক্ষেত্রে ফেরার আবেদন জানান। তবে এটাও বলেন, ‘সবচেয়ে ভালো হয়, কাজে যান, কিন্তু সতর্কতা অবলম্বন করে। আমার বার্তা এটাই।’
এদিকে, জাপান ও ভারতের প্রতিনিধিরা বলেন, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী শক্তি, এই তিনের বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টাই করোনাকে হারানোর একমাত্র চাবিকাঠি। গত একমাসে জাপান ও ভারত একটানা সিরিজ বৈঠক করেছে। বিজ্ঞানের পথ ধরেই সুরাহা মিলবে বলে আশা দেশ দুটির।
সান নিউজ/বি.এম.