আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউরোপের সবচেয়ে প্রবীণ ও বিশ্বের দ্বিতীয়তম বয়স্ক ব্যক্তি ফ্রান্সের লুসিল র্যান্ডন কিছুদিন কোভিড-১৯ পজিটিভ হয়েছিলেন। সম্প্রতি করোনাভাইরাস সংক্রমণ কাটিয়ে উঠেছেন। এমনকি, চলতি সপ্তাহে তিনি ১১৮তম জন্মদিনটি বেশ জাঁকালো করে উদযাপন করেছেন।
সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, সিস্টার আন্দ্রে নামেও পরিচিত লুসিল। এই ফরাসি 'নান' জন্মগ্রহণ করেন ১১ ফেব্রুয়ারি ১৯০৪ সালে। অসুস্থ হওয়ায় স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে গত ১৬ জানুয়ারি রক্তপরীক্ষা করানো হয় সিস্টার আন্দ্রের। তিনি কোভিড পজিটিভ হন। তাকে নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। ওই সময়েই নার্সদের বলেছিলেন, 'আমি তো কিছু বুঝতেই পারছি না। আমার কি কিছু হয়েছে?' কোনও প্রাথমিক উপসর্গ ছিল না সিস্টার আন্দ্রের।
ইউরোপে মহামারির সেই গোঁড়ার দিকে প্রবীণদের নিয়েই ছিল সবচেয়ে বেশি আশঙ্কা। নানাকারণে ইউরোপে তখন প্রবীণরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছিলেন কোভিডে। করোনায় মৃত্যুর নিরিখেও তরুণদের চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিলেন প্রবীণরা।
নার্সিংহোমে নিয়মিত খবরের কাগজ পড়তেন, টিভি দেখতেন তিনি। সেখানে থাকতেই সিস্টার আন্দ্রে খবর পেলেন প্রবীণদের জন্য যে হোমে তার সঙ্গে থাকতেন ৮৮ জন তাদের মধ্যে ৮১ জনই কোভিডে সংক্রমিত হয়েছেন। পরে খবর পেলেন তাদের মধ্যে ১০ জনের মৃত্যুও হয়েছে। তবু নিজেকে নিয়ে কোনও হেলদোলই ছিল না সিস্টার আন্দ্রের। বরং নার্সিংহোমের অন্য রোগীর খোঁজখবর নিতেন নার্সদের কাছে। পরিচিতরা কে কেমন আছেন জানতে চাইতেন।
কয়েকদিন আগে ওই নাসিংহোমে পালন করা হল সিস্টার আন্দ্রের ১১৮তম জন্মদিন। সেই সময়ই স্থানীয় সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করেছিলেন, 'মৃত্যুভয়কে জয় করেছিলেন কীভাবে ?' আন্দ্রে জবাব দেন, 'কোনও দিনই তো মৃত্যুভয় পাইনি। তাই কোভিডে মারা যেতেও ভয় পাইনি। যিশুর নাম জপিনি। ভালই আছি। তবে সব সময় অপেক্ষা করি থাকি কবে ও-পারে যাব। মরণের পারে যাওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকি। গেলেই যে দাদা, দাদু, ঠাকুমার সঙ্গে আবার দেখা হয়ে যাবে।'
সান নিউজ/এসএস