শীতকালে শীতকে ঘিরে নানা ধরনের পেশা সাময়িক সময়ের জন্য গড়ে ওঠে। এমনই একটি সামিয়িক পেশা লেপ সেলাই করা। শীত নিবারনের জন্য লেপ সেলাই করা হয় বাংলাদশের বিভিন্ন অঞ্চলে । কিন্তু খাগড়াছড়ির দীগিনালার বোয়ালখালী (সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের) আদর্শ নগর গ্রামটি পরিবারের নারী সদস্যরা চার মাস ব্যস্ত থাকেন লেপ সেলাইয়ের কাজে। গ্রামটিতে আড়াই শতাধিক পরিবারের বসবাস। তার মধ্যে প্রায় দুই শতাধিক পরিবারের নারীরা ব্যস্ত থাকেন লেপ সেলাইয়ের কাজে এবং প্রতিদিন নারীরা তৈরি করেন পাঁচ শতাধিক লেপ। পাইকারী ব্যবসায়ীরা লেপ সেলাইয়ের উপকরণ সরবরাহ করেন এবং একটি লেপ এর মুজরি দেয়া হয় ৮৫ টাকা।
গ্রামবাসীর একসময় জীবন যাপন ছিলো অচ্ছল। অনেক কষ্ট করে তাদের জীবন ধারন করতে হতো। ধার দেনায় তাদের জীবন ছিল জর্জরিত। কিন্তু ৯ বছর ধরে লেপ সেলাই করে তারা সচ্ছলতার মুখ দেখতে পেয়েছেন। লেপ সেলাই করে যে আয় করা যায় এর পথটি দেখিয়েছেন রহিমা বেগম।তিনি ২০০৬ সালে মাত্র সাতজন নারীকে নিয়ে লেপ সেলাইয়ের কাজ শুরু করেন। আর এখন শীতের সময় প্রতি ঘরে ঘরেই দেখা যায় লেপ সেলাইয়ের ধুম।
আয়শা বেগম (৩০) লেপ সেলাই করতে করতে জানালেন, গত চার বছর ধরে লেপ সেলাই করছেন। প্রতিদিন দুটি লেপ সেলাই করতে পারেন। আরেক জন জানালেন ,প্রতিদিন প্রায় পাঁচটি লেপ সেলাই করতে পারেন।গ্রাম ঘুরে দেখা গেল বিভিন্ন বাড়ির উঠানে তুলার বস্থা ও লেপ সেলাইয়ের জন্য লালসালু কাপড়ের স্তুপ রাখা।লেপ সেলাই করা প্রত্যেক নারী ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় করে থাকেন।এই টাকা দিয়েই প্রত্যেকে তাদের সংসার এবং বাচচাদের পড়াশুনা করিয়ে থাকেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আজাদ জানালেন,পাহাড়ি এলাকায় শীত একটু আগে পড়ে তাই আশ্বিন মাসের শুরুর দিকেই গ্রামের নারীরা লেপ সেলাইয়ে কাজ শুরু করেন। নারীদের বানানো লেপ রাঙামাটির বাঘাইছড়ি,লংগদু উপজেরা,খাগড়াছড়ি সদর,মহালছড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করা হয়। প্রতিটি লেপ ৩০০ থোকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়। আর এখনকার নারীদের কাজ এতই নিঁখুত যে বিভিন্ন এলাকায় এই লেপ এর চাহিদা অনেক বেশি।
খাগড়াছড়ির দীগিনালার বোয়ালখালী (সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের) আদর্শ নগর নারীদের উন্নয়ন এবং অগ্রগতিতে অনুপ্রাণিত হচ্ছেন অনেক নারী। তারা তাদের অবসর সময়কে কর্মঘন্টায় রুপান্তরিত করেছেন।