নিনা আফরিন, পটুয়াখালী: “মুজিব'স বাংলাদেশ” ব্র্যান্ডনেম প্রচারের অংশ হিসেবে পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ২ দিনব্যাপী শুরু হয়েছে ‘বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যাল কুয়াকাটা-২০২৩’।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘে পাঠানো চিঠি ‘থ্যাংক ইউ নোট’
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) এ উৎসবের সমাপনী ঘোষণা করা হবে।
এর আগে শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টায় এ উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটা পৌরসভার সামনে থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালির মাধ্যমে এর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
এতে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে অংশগ্রহণ করেন কুয়াকাটার বিভিন্ন সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী, রাজনৈতিক ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে কারখানায় আগুন
র্যালিতে গ্রামীণ ঐতিহ্য ফুটিয়ে তোলার জন্য জেলে, চাষী, কামার, বর-বউ, রাখাইন সম্প্রদায় ও বাউলসহ বিভিন্ন প্রদর্শনী রাখা হয়।
কুয়াকাটা পৌরসভার সামনে থেকে শুরু হওয়া র্যালিটি শেষ হয় অনুষ্ঠানের মূল কেন্দ্র সমুদ্র সৈকতে। এ সময় ফিতা কেটে এবং পায়রা উড়িয়ে মূল অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাল্লেম হোসেনসহ অন্যান্য অথিতিরা।
পরবর্তীতে “পর্যটনের মাধ্যমে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে তারুণ্যের ভূমিকা” শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: চলতি মাসেই শৈত্যপ্রবাহ
ফেস্টিভ্যাল উপলক্ষে দিনব্যাপী সমুদ্র সৈকত এলাকায় নানা আয়োজন করা হয়। সৈকতে প্রায় ৬০ টি স্টলের মাধ্যমে বিভিন্ন পণ্য সামগ্রি বিক্রয় করা হয়েছে।
রাখাইন ঐতিহ্যবাহী পিঠা, দেশি বাহারি পিঠা, কুয়াকাটার তাজা সামুদ্রিক মাঠের বারবিকিউ এবং বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত উদ্যোক্তাদের পণ্য সামগ্রি সাজানো হয় স্টলে।
এছাড়া এ উৎসবে থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ফানুস উৎসব, ঘুড়ি উৎসব, বিচ ফুটবল, বিচ ভলিবল, রাখাইন নৃত্য, গান, পুতুল নাচসহ নানা আয়োজন।
ফেস্টিভ্যালে বাহারি পিঠার দোকানী শাওন মোল্লা বলেন, অনুষ্ঠান উপলক্ষে বিভিন্ন দেশি পিঠা তৈরি করেছি, পর্যটকরা আমার তৈরি পিঠা কিনে খাচ্ছেন এবং প্রশংসা করছেন। এরকম আয়োজনে অংশগ্রহণ করতে পেরে আমরা খুশি।
আরও পড়ুন: বিএনপির নির্বাচনকেন্দ্রিক আন্দোলন ব্যর্থ
বরিশাল থেকে আসা পর্যটক আথির আল আজাদ বলেন, কুয়াকাটায় এ রকম আয়োজনের দরকার রয়েছে। আমরা যারা এখানে ঘুরতে আসি আমাদের বাড়তি আনন্দ দেবে এই আয়োজন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জনাব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, সেবার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে কুয়াকাটা বিশ্বের কাছে একটি অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সরকার পর্যটন খাতে বাড়তি নজর দিচ্ছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপার সম্ভাবনার বাংলাদেশকে আরও গতিশীল করতে পর্যটন সংশ্লিষ্ট সকলে এগিয়ে আসতে হবে। পর্যটনের মাধ্যমে সেবা রপ্তানি করে কোটি কোটি টাকা আয় করা সম্ভব।
বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের জানিয়েছেন, সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্পে উদ্যোক্তা হওয়ার অফুরন্ত সুযোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন: রোববার মানববন্ধন করবে বিএনপি
তরুণদের ভেতরের শক্তিকে জাগাতে পারলেই আমাদের উন্নয়নের লক্ষ্যে পৌঁছুতে পারবো। আমি বিশ্বাস করি, এরকম আয়োজনের মাধ্যমে তরুণরা পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে এগিয়ে আসবে।
কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যাল কুয়াকাটাকে সফল করতে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠনসহ টুরিস্ট পুলিশ এবং থানা পুলিশ সবাই একসাথে কাজ করে যাচ্ছে।
আশা করছি, সুন্দরভাবে ২ দিনের আয়োজন শেষ হবে। এরকম আয়োজনের মাধ্যমে কুয়াকাটা আরও সুন্দরভাবে দেশবাসীর কাছে পরিচিতি পাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
সান নিউজ/এনজে