নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারের নির্দেশনা উপেক্ষা করে বাজারে ডিম, আলু ও পেঁয়াজ আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। এসব পণ্যের সরকার নির্ধারিত দাম ঘোষণার ১৫ দিন পরেও তা কার্যকর হতে দেখা যায়নি।
আরও পড়ুন: রূপপুরে যাচ্ছে ইউরেনিয়াম, বাস চলাচল বন্ধ
শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ফার্মের ডিম ডজন প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৬৫ টাকায়, হালি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়। ফলে একটি ডিমের দাম পড়ছে ১৩ টাকা ৭৫ পয়সা। যদিও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে দাম বেঁধে দেওয়া হয়েছিল সর্বোচ্চ ১২ টাকা।
একইভাবে আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০ টাকায়, যেখানে মন্ত্রণালয় দাম বেঁধে দিয়েছিল ৩৫-৩৬ টাকা। এতে নির্ধারিত দামের চেয়ে কেজিতে ১৪-১৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া দেশি পেঁয়াজের দাম সরকার ৬৪-৬৫ টাকা বেঁধে দিলেও বাজারে এর চেয়ে ১৫-২৫ টাকা বাড়িয়ে ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বেনাপোলে আমদানি-রফতানি বন্ধ
এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর এই ৩ পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তখন ফার্মের প্রতি পিস ডিমের দাম ১২ টাকা, আলু খুচরা পর্যায়ে ৩৫-৩৬ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ ৬৪-৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল। অথচ এর ১৫ দিন পরেও বাজারে এসব দ্রব্যের নির্ধারিত দাম কার্যকর হয়নি।
ট্রেডিং কর্পোরেশন অফ বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুসারে, বাজারে সর্বশেষ কর্ম দিবসে দেশি পেঁয়াজ কেজিতে সর্বোচ্চ ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে, আলু বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৪৫ টাকায় এবং ডিম প্রতি হালি সর্বোচ্চ ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
আরও পড়ুন: মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ৩৩
টিসিবির সহকারী পরিচালক নাসির উদ্দিন বলেন, বর্তমান বাজারে যে পেঁয়াজ সর্বোচ্চ ৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত বছর এ সময় বিক্রি হয়েছে ৩৮-৪৫ টাকায়। সে হিসেবে এক বছরে পেঁয়াজের দাম ৯৮.৮০ শতাংশ বেড়েছে।
একইভাবে বাজারে যে আলু বর্তমানে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, গত বছরের এ সময় সেই আলু বিক্রি হয়েছে ২৩-৩০ টাকায়। এতে এক বছরে আলুর দাম ৬৪.১৫ শতাংশ বেড়েছে। সেই সাথে ডিমের দাম এক বছরে বেড়েছে ১.৩ শতাংশ।
আরও পড়ুন: মায়ের জন্মদিন উদযাপন করলেন জয়
সাধারণ ক্রেতারা বাজারের এমন পরিস্থিতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, সরকার দাম নির্ধারণ করে দিলেও আমরা এসব এখনো বাড়তি দামেই কিনছি। বাজার মনিটরিং যদি না হয়ে থাকে, তাহলে দাম নির্ধারণ করে দিয়ে কি লাভ? দাম নির্ধারণের আগেও যে দামে কিনেছি, এখনো সেই বাড়তি দামেই কিনছি।
রাজধানীর মহাখালী বাজারে একজন বেসরকারি চাকরিজীবী ক্রেতা হাবিবুর রহমান বাজারের এমন পরিস্থিতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাজারে এমন কিছু নেই, যার দাম বাড়তি না। এ পরিস্থিতিতে আমরা সাধারণ ক্রেতারা খুব খারাপ অবস্থায় আছি।
আরও পড়ুন: ট্রাকের ধাক্কায় ২ শ্রমিক নিহত
তিনি আরও বলেন, সব কিছুর দাম বাড়তি। এর মধ্যে বাজার মনিটরিংয়ের কোনো উদ্যোগ দেখছি না। সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাপার হলো, যেগুলোর দাম সরকার কমালো সেগুলোও বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে।
এই ক্রেতা জানান, পেঁয়াজ, আলু, ডিমের দাম সরকার নির্ধারণ করে দিলেও আমাকে তারচেয়ে অনেক বেশি দামে এগুলো কিনতে হলো। লোক দেখানো দাম নির্ধারণের প্রয়োজন কি ছিল! নির্ধারিত দামের চেয়ে এগুলো অনেক বেশি দামে বাজারে ওপেন বিক্রি হচ্ছে, অথচ দেখার কেউ নেই।
আরও পড়ুন: দেশে ফিরলেন সেনাপ্রধান
সরকার নির্ধারিত দামের চেয়েও কেন বেশি দামে ডিম, আলু, পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে- এমন প্রশ্নে গুলশান সংলগ্ন বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী এরশাদ আলী জানান, বাড়তি দামের বিষয়ে আমাদের কোনো হাত নেই। আমরা যে দামে কিনি, তা অল্প কিছু লাভ করে বিক্রি করি।
তিনি বলেন, কারা দাম বাড়িয়ে রেখেছে, তা বড় ব্যবসায়ীরা বলতে পারবে। আমরা যখন কমে ডিম, আলু, পেঁয়াজ কিনতে পারবো, তখন কম দামে বিক্রি করতে পারবো। তার আগে আমাদের কিছুই করার নেই।
সান নিউজ/এনজে