নিজস্ব প্রতিবেদক: এবার ডাব বাজারে চলবে তদারকি। খোঁজ নেওয়া হবে তাদের ট্রেড লাইসেন্স ও টিআইএন আছে কি না। ভোক্তা সংরক্ষণ অধিকার অধিদপ্তর ডাবের দাম বৃদ্ধির প্রকৃত কারণ যাচাই ও বাজার তদারকি করতে মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) থেকে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘উইমেন অব ইন্সপিরেশন’ পেলেন শেয়ারট্রিপের সাদিয়া হক
সোমবার (২৮ আগস্ট) জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিকার অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সভায় ডাব ব্যবসায়ী ও ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তাদের বৈঠকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাবের কারণে ডাবের চাহিদা আগের চেয়ে অনেক বেশি। যোগান কম থাকায় দামও বেড়েছে বলে দাবি করেন ডাবের পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
অপরদিকে, বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, আমরা সাইজ ভেদে আড়ৎ থেকে ডাব কিনে থাকি। ভালো মানের ডাবগুলো গত দুই মাস আগে কিনেছি প্রতিটি ৮০ টাকা দরে।
আরও পড়ুন: সোমবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ
বর্তমানে সেগুলো কিনতে হচ্ছে ১২০ টাকা থেকে ১৪০ টাকায়। এগুলোতে আমাদের সব খরচ রেখে বিক্রি করি ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা। এতে আমাদের প্রতি ডাবে সর্বোচ্চ ১০-১৫ টাকা লাভ হয়।
ডাবের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধিতে পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা একে অপরকে দোষ দিলেও এর প্রকৃত কারণ ও প্রতিকার খুঁজতে তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিকার অধিদপ্তর।
জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তর, আড়ৎদার ও খুচরা ডাব ব্যবসায়ীদের ব্যাখ্যায় নাখোশ। সে কারণে ডাবের দাম বৃদ্ধির প্রকৃত কারণ যাচাই ও বাজার তদারকি করতে সংস্থাটি মঙ্গলবার থেকে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: আতপ চালে শুল্ক আরোপ করল ভারত
আড়ৎদাররা বৈঠকে ডাবের দাম বাড়ার সপক্ষে যুক্তি দিয়ে জানান, সারাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ঢাকায় প্রতিদিন প্রায় আড়াই লাখ পিস ডাব আসে।
কেনা মূল্য ও পরিবহন খরচসহ ডাব আড়ৎদারের ঘরে পৌঁছাতে প্রতি পিসে অন্তত ৮০-৮৫ টাকা খরচ হয়। তারা খরচ ও লাভ রেখে সাইজ ভেদে পিস ১২০-১৪০ টাকায় বিক্রি করেন। আর খুচরা ব্যবসায়ীরা বিক্রি করেন প্রতি পিস ১৫০-১৮০ টাকা পর্যন্ত।
আয়োজিত সভায় উপস্থিত কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবীর ভুঁইয়া বলেন, বাংলাদেশের বাজারে ৮০ শতাংশ ব্যবসায়ী অসৎ। এটা কিভাবে হতে পারে?
আরও পড়ুন: ইলিশের দামে স্বস্তি
তিনি বলেন, আপনাদের লজ্জাও নাই। আপনারা দেশের বারোটা বাজাচ্ছেন, ভোক্তাদের বারোটা বাজাচ্ছেন। আপনারা এটা করবেন না প্লিজ।
হুমায়ুন কবীর ভুঁইয়া বলেন, আপনাদের কারণে বাজারে গিয়ে মানুষ কোনো প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারছে না। যদি ভোক্তারা মরে যায়, তাহলে আপনাদের ব্যবসা থাকবে না। সব ক্ষেত্রে অরাজকতা চলছে, এভাবে অরাজকতা চলতে দেওয়া যাবে না।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ব্যবসা করলে অবশ্যই লাভ করবেন। তবে একটা উপলক্ষ সামনে এনে দাম বাড়িয়ে দেবেন-সেটা হতে পারে না। ৩০০-৩৫০ টাকা দিয়ে বাংলাদেশে মানুষ দুটি ডাব কিনতে হবে, আমরা কি সেই পর্যায়ে পৌঁছে গেছি?
আরও পড়ুন: বাজারে স্বর্ণের দামে নতুন রেকর্ড
ডাব তো জাহাজে করে বিদেশ থেকে আসে না কিংবা ডলারে পেমেন্ট করে কিনতে হয় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাহলে দাম এত বাড়বে কেন? ডেঙ্গুকে পুঁজি করে আপনারা প্রতিটি বাজার জিম্মি করছেন।এভাবে আর চলবে না।
আমি ভাবতে পারিনি ডাবের দাম বিষয়ে আমাকে এখানে বৈঠক করতে হবে জানিয়ে ডিজি বলেন, আগামীকাল থেকে ডাবের দাম বৃদ্ধির বিরুদ্ধে তদারকি করা হবে।
আরও পড়ুন: ৯ দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি
আমি আমার কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়ে দেব, তারা সারাদেশের বাজারে গিয়ে দেখবে, আপনাদের ট্রেড লাইসেন্স আছে কি না, টিআইএন আছে কি না?
তিনি আরও বলেন, আপনারা ভ্যাট-ট্যাক্স ঠিকঠাক দিচ্ছেন কি না। আপনারা অবশ্যই আপনাদের ডাব কেনার ভাউচার সাথে রাখবেন।
সান নিউজ/এইচএন