নিজস্ব প্রতিবেদক:
গোপালগঞ্জ: বাজারে কাঁচা মরিচের দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। এতে নাকাল ক্রেতারা। সোমবার (২৪ আগস্ট) বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অনেকেই কাঁচা মরিচের পরিবর্তে শুকনো মরিচ কিনছেন।
গত এক সপ্তাহ ধরে গোপালগঞ্জ শহরের বড় বাজার, বটতলা, পাচুরিয়া, বেদগ্রাম, ভেড়ারহাট, সাতপাড়, বৌলতলী, উলপুরসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে।
শহরের অনুপম ভক্ত, সমীর রায়, মোহসীন উদ্দিন সিকদার, উরফি গ্রামের ওয়াদুদ মৃধাসহ বেশ কয়েকজন ক্রেতা বলেন, কাঁচা মরিচ এখন কেনাই দায়। এক কেজি মরিচ যদি ২৫০ টাকা হয়, তাহলে কিভাবে চলে। এতো ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। এখন ১০০ গ্রাম মরিচ কিনতে ২৫ টাকা লাগে। তাই মরিচ কিনতে গেলে অন্য তরকারি কেনা কষ্টকর হয়ে যায়।
শহরের পাঁচুড়িয়া এলাকার আকবর হোসেন বলেন, ‘যে দাম, তাতে এখন মরিচ ছাড়াই অনেক তরকারি খেতে হচ্ছে। বাজারে যে মরিচ পাওয়া যাচ্ছে, তার মানও খারাপ। ঝাল নেই, অথচ দাম ২৫০ টাকা। আমাদের পক্ষে এতো দামে মরিচ কিনে খাওয়া সম্ভব নয়। তাই কোনো কোনো তরকারির জন্য শুকনো মরিচ কিনে খাচ্ছি।’
শহরের বড় বাজার এলাকার অসীম রায়, শংকর শর্মা ও আনিস কাজী বলেন, ‘কাঁচা মরিচের বদলে শুকনো মরিচের তরকারি খাওয়ার পর বুক ও পেট জ্বলা—পোড়া করে। এভাবে চলতে থাকলে তো অসুস্থ হয়ে পড়বো।’
বড় বাজারের তরকারি ব্যবসায়ী পংকজ রায়, নির্মল বিশ্বাস, রফিক মোল্লা ও দেলোয়ার কাজী বলেন, ‘গোপালগঞ্জ বাজারে মরিচ আসে উত্তরবঙ্গ থেকে। দীর্ঘ সময় বন্যার পানিতে ক্ষেত তলিয়ে থাকায় কাঁচা মরিচ নষ্ট হয়ে গেছে। যা পাওয়া যায়, তার মানও ভালো নয়। এক কেজি কাঁচা মরিচ ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা বিক্রি করলেও লাভ হয় না। অন্য তরকারি বিক্রি করি। মরিচ না রাখলে তরকারি বিক্রি হয় কম। তাই বাধ্য হয়েই মরিচ রাখতে হয়। তারপরও মরিচ নিয়ে ক্রেতার সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়।
বটতলা বাজারের রফিক মোল্যা, উন্নতি বিশ্বাস ও আনিচ মোল্লা বলেন, ‘কাঁচা মরিচের যে দাম, অনেকেই খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। তারপরও আমরা দোকান চালাতে এক কেজি/দুই কেজি রাখি। কিন্তু অনেকে কাঁচা মরিচের বদলে শুকনো মরিচ কিনছেন।’
আড়ৎ মালিক, রেজাউল শেখ, শিবু বিশ্বাস, দীপক বিশ্বাস ও লিপন বিশ্বাস বলেন, ‘মোকামে কাঁচা মরিচ পাওয়া যাচ্ছে না। বন্যায় মরিচ ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যেটুকু মরিচ পাওয়া যাচ্ছে, দাম অনেক বেশি। কাঁচা মরিচে লাভ তো দূরের কথা খরচই উঠছে না। আড়ৎ চালাতে বাধ্য হয়ে মরিচ আনতে হচ্ছে।’
সান নিউজ/ এআর