নিজস্ব প্রতিবেদক:
বেনাপোল (যশোর): সরকারের নির্দেশ উপেক্ষা করে বেনাপোল বন্দরে রপ্তানি পণ্যবাহী ট্রাক থেকে চাঁদাবাজি করছে যশোর জেলা (ঝিকরগাছা, শার্শা ও বেনাপোল বন্দর) ট্রাক ট্যাংকলরি (দাহ্য পদার্থ ছাড়া) ট্রাক্টর ও কভার্ডভ্যান মটর শ্রমিক ইউনিয়ন। এর লাগাম টেনে ধরা সম্ভব না হওয়ায় শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছে ট্রাক মালিক সমিতি।
যশোর জেলা (ঝিকরগাছা, শার্শা ও বেনাপোল বন্দর) ট্রাক ট্যাংকলরি (দাহ্য পদার্থ বহনকারী ছাড়া) ট্রাক্টর ও কভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুছা মাহমুদ স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, বেনাপোল চেকপোস্টে কিছু শ্রমিক বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানি পণ্যবাহী ট্রাকপ্রতি ১৬০ থেকে ২০০ টাকা করে প্রকাশ্যে চাঁদাসহ সিরিয়াল আগে পাইয়ে দিতে ট্রাকপ্রতি দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টাকা আদায় করছে, যা আইনত অপরাধ।
এ চাঁদাবাজি বন্ধ না করা গেলে দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দরটি দিয়ে যেকোনো সময়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধের আশঙ্কা প্রকাশ করে ট্রাক মালিক সমিতি।
সরেজমিনে বেনাপোল বন্দরের আমদানি গেট এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ওই শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিটি রপ্তানি পণ্যবাহী ট্রাক থেকে ১০০ টাকা ও ভারতের পেট্রাপোল কাস্টমসের নামে আরো ৫০ টাকাসহ ১৫০ টাকা করে চাঁদা নিচ্ছে। আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও চাঁদাবাজির অভিযোগ করেন রপ্তানিমুখী ট্রাকচালকরা।
ট্রাকচালক ইস্রাফিলের অভিযোগ, সরকার ট্রাক থেকে চাঁদা নিতে নিষেধ করলেও চাঁদা না নিয়ে ভারতে ট্রাক প্রবেশ করতে দেয় না শ্রমিক ইউনিয়নটি। তিনিও ১৫০ টাকা চাঁদা দিয়ে রপ্তানি গেটে প্রবেশ করেছেন।
ট্রাকচালকরা জানান, তাদেরকে বাধ্যতামূলক ওই শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য হতে হবে। না হলে ঝিকরগাছার ওপর দিয়ে পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে যেতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন ইউনিয়নটির নেতারা।
শ্রমিক ইউনিয়নের বেনাপোল শাখার সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন দাবি করেন, প্রতিদিন এ রপ্তানি গেট দিয়ে ৮০ থেকে ১০০ ট্রাক পণ্য ভারতে প্রবেশ করে থাকে। ইউনিয়নের বেকার সদস্যদের স্বার্থে গত বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) থেকে তারা ট্রাকপ্রতি ১০০ টাকা করে নিচ্ছেন।
বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন খান জানান, বিষয়টি শুনে আইনি ব্যবস্থা নিতে রপ্তানীমুখী ট্রাকচালকদের কাছে চাঁদা নেওয়ার সত্যতা যাচাই করেছেন তিনি। কিন্তু কোনো চালক মুখ খুলতে রাজি না হওয়ায় চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেরি হচ্ছে।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূলক কুমার মণ্ডল জানান, বিষয়টি যাচাই করে সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সান নিউজ/ এআর