নিজস্ব প্রতিবেদক
বেনাপোল (যশোর): করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল দিয়ে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে রেলপথে আমদানি বাণিজ্যে আগ্রহ বেড়েছে ব্যবসায়ীদের। এতে ব্যবসায়ীদের মাঝে যেমন স্বস্তি ফিরেছে, তেমনি সরকারেরও রাজস্ব আয় বেড়েছে।
বেনাপোল বন্দর সূত্রে জানা গেছে, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে গত ২২ মার্চ রেল ও স্থলপথে পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বেনাপোল বন্দরের সঙ্গে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ করে দেয় ভারত সরকার। হঠাৎ করে বাণিজ্য বন্ধে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় প্রায় পাঁচ হাজার ট্রাক পণ্য নিয়ে আটকা পড়ে। পরবর্তীতে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে দেশের অন্য বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি সচল হলেও এ পথে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সচলে নানা প্রতিবন্ধকতা আসে। এ সময় ব্যবসায়ীরা ক্ষতির বিষয়টি জানালেও সচল হয়নি বাণিজ্য।
এক পর্যায়ে বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশে রেল কর্তৃপক্ষ, বন্দর ও ব্যবসায়ীদের যৌথ উদ্যোগে বিকল্পভাবে বাণিজ্য সচলে রেলপথে পার্সেল ভ্যানে দুই দেশের মধ্যে আমদানি বাণিজ্য চুক্তি হয়।
বর্তমানে বেনাপোল ও পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে স্থলপথের পাশাপাশি রেলপথে কার্গো রেল, সাইড ডোর কার্গো রেল এবং পার্সেল ভ্যানে সব ধরনের পণ্যের আমদানি বাণিজ্য চলছে। বাণিজ্যে গতি বাড়ায় ব্যবসায়ীদের যেমন দুর্ভোগ কমেছে, তেমনি সরকারেরও রাজস্ব আয় বেড়েছে। রেলপথে বাণিজ্যের প্রসারে হাসি ফিরে এসেছে বন্দর শ্রমিকদের মুখেও। করোনার কারণে কাজ কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছিলেন তারা।
বেনাপোলের আমদানি-রপ্তানিকারকরা জানান, স্থলপথে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে অবরোধ, হরতাল, শ্রমিক অসন্তোষসহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতায় পণ্য পরিবহন করতে না পেরে ব্যবসায়ীরা প্রায়ই লোকসানের কবলে পড়তেন। ভারত থেকে পণ্য আমদানি করতে অনেক ক্ষেত্রে এক মাসেরও বেশি লেগে যেতো। রেলপথে সব ধরনের পণ্য আমদানি করতে পারায় এখন আর সে সমস্যা থাকছে না।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সুজন জানান, করোনার অজুহাত দেখিয়ে ভারতের পেট্রাপোলের এক শ্রেণির ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে মাসের পর মাস ট্রাক আটকে রেখে ফায়দা লুটছিলেন। এমন পরিস্থিতিতে শুরু হয় রেলপথে ত্রিমুখী আমদানি বাণিজ্য। এভাবে চলতে থাকলে আশা করা যাচ্ছে, চলতি অর্থবছরে সরকারের রাজস্ব আসবে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা।
সান নিউজ/ এআর