নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ উৎপাদন হলেও আমদানি বন্ধের অজুহাতে কয়েকমাস ধরে এ পণ্যটির বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। এবার আমদানির ঘোষণা দেওয়ার পর প্রায় অর্ধেক কমে গেছে অতিপ্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম।
আরও পড়ুন : পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি
রোববার (৪ মে) বিকেলে সরকার পেঁয়াজ আমদানির ঘোষণা দেয়। এরপরই আমদানির পেঁয়াজ বাজারে না এলেও হঠাৎ করেই প্রায় অর্ধেক দাম কমে যায়।
গত দুয়েক মাসের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম আড়াই থেকে তিনগুণ বেড়ে যায়। বাজারে ভোক্তা অধিদপ্তর এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানেও পণ্যটির দামের লাগাম টানা যায়নি।
সংশ্লিষ্টদের দাবি, এ সময়ের মধ্যে পেঁয়াজের দাম বাড়া-কমা থেকে বুঝা যায়, একটি সিন্ডিকেটের যোগসাজশে পণ্যটির দাম বেড়ে গিয়েছিল।
আরও পড়ুন : হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রফতানি বন্ধ
জানা গেছে, গত শনি-রোববার দেশের অন্যতম বৃহত্তম ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ও চাক্তাইয়ে পেঁয়াজের দাম ছিল মানভেদে কেজিপ্রতি ৯০-১০০ টাকা।
রোববার কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার (৫ জুন) থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়। এতে সোমবার সকাল থেকে খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের দাম কমে যায়। আজ পণ্যটি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৫০-৬০ টাকায়।
আরও পড়ুন : সোমবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ
এর আগে গত ২১ মে পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকায় খাতুনগঞ্জ বাজারে অভিযান চালায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
অভিযানে দেখা গেছে, বাজারে মধ্যস্বত্বভোগী একটা সিন্ডিকেট রয়েছে। যারা পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে অনেকাংশে দায়ী। বাজারে ডিমান্ড অর্ডারের (ডিও) মাধ্যমে শুধুমাত্র একটি ক্রয় রসিদই বিক্রি হয় ১০ জনের আধিকের কাছে।
আরও পড়ুন : পিটার হাসের সঙ্গে জিএম কাদেরের সাক্ষাৎ
ঐ সময় বিভিন্ন ট্রেডিংয়ের দোকান থেকে ৬০০ এর উপরে মধ্যস্বত্বভোগীদের নাম এবং মোবাইল নম্বর সংগ্রহে নেওয়া হয়, যাদের মাধ্যমে একটি পণ্যের দাম হাত বদল হয়ে বাড়তে থাকে। যদিও ঐ অভিযানের পরও কমেনি পণ্যের দাম।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৩০ লাখ টন। গত অর্থ বছরে দেশে পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে প্রায় ৩৬ লাখ টন। সে হিসেবে চাহিদার চেয়ে উৎপাদন বেশি হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ উৎপাদন হওয়ায় গত ১৫ মার্চ থেকে আমদানি বন্ধ রাখে সরকার। চাহিদার পুরোটা মেটানো হয় দেশি পেঁয়াজ দিয়ে।
আরও পড়ুন : সমন্বয়কের আশ্বাসে ঘরে ফিরলেন শিক্ষার্থীরা
তবে সরবরাহ ও মজুত ঠিক থাকলেও আমদানি বন্ধের অজুহাতে বাড়তে থাকে পেঁয়াজের দাম। এ অবস্থায় নাভিশ্বাস ওঠে ভোক্তাদের। এক পর্যায়ে সরকার পণ্যটি আমদানির অনুমতি দেয়।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন জানান, আগে থেকে বলেছিলাম আমদানিকারকদের একটি সিন্ডিকেট দাম বৃদ্ধির কারসাজিতে জড়িত থাকতে পারে। সেটিই মনে হয় সত্য হলেঅ। কারণ আমদানির পেঁয়াজ এখনো বাজারে আসেনি। শুধুমাত্র অনুমতিতেই দাম কমে গেল। এতে বুঝা যায়, সিন্ডিকেটের কারণে দাম বেড়েছিল।
আরও পড়ুন : ভূমিকম্পে কাঁপল বঙ্গোপসাগর
চাক্তাইয়ের আফরা ট্রেডিংয়ের মালিক মো. আলাউদ্দিন আলো জানান, আজকে ভালো মানের অর্থাৎ মোটা সাইজের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায় এবং ছোট সাইজের বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। ক্রেতাও তেমন নেই।
সান নিউজ/এনজে