সান নিউজ ডেস্ক : রমজানের পণ্য আমদানির জন্য পর্যাপ্ত এলসি খোলা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একইসাথে সংশ্লিষ্ট সবাই একসঙ্গে কাজ করলে রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কোনো ঘাটতি থাকবে না বলেও দাবি করেন তারা।
আরও পড়ুন :বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে ইসলামী ব্যাংকের চুক্তি
বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের কনফারেন্স হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক।
মেজবাউল হক বলেন, গত বছরের জানুয়ারির তুলনায় এ বছর অনেক বেশি এলসি খোলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সবাই একসঙ্গে কাজ করলে রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কোনো ঘাটতি থাকবে না। এছাড়া রমজান মাস সংশ্লিষ্ট পণ্যের এলসি খুলতে পারছেন না বলে ব্যবসায়ীরা যে অভিযোগ করে আসছেন তা সঠিক নয় বলেও দাবি করেন তিনি।
আরও পড়ুন :ফের তরল গ্যাস কিনেছে বাংলাদেশ
তিনি বলেন, রমজান মাসে তেল, চিনি, ছোলা, পেঁয়াজ ও খেজুরের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। বাজার স্বাভাবিক রাখতে এসব পণ্য আমদানিতে সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে কোনো ব্যাংকে একক কোনো গ্রাহকের সঙ্গে যদি এলসি খোলা নিয়ে সমস্যা হয়, ওটা তাদের নিজস্ব বিষয়। সার্বিকভাবে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
পণ্য পরিবহন ও সরবরাহ নিশ্চিত করা গেলে রমজানে কোনো পণ্যের ঘাটতি হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন :বাংলাদেশের কৃষিপণ্য সরাসরি মধ্যপ্রাচ্য যাবে
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে পাঁচ লাখ ৬৫ হাজার ৯৪১ মেট্রিক টন চিনির ঋণপত্র খোলা হয়েছে। এক বছর আগের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল পাঁচ লাখ ১১ হাজার ৪৯৩ মেট্রিক টন। অর্থাৎ এ বছরের জানুয়ারিতে ৫৪ হাজার ৪৪৮ মেট্রিক টন বেশি চিনির ঋণপত্র খোলা হয়েছে।
জানুয়ারিতে একইভাবে ভোজ্যতেল আমদানির জন্য তিন লাখ ৯০ হাজার ৮৫৩ মেট্রিক টনের ঋণপত্র খোলা হয়েছে। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে এর পরিমাণ ছিল তিন লাখ ৫২ হাজার ৯৬০ মেট্রিক টন।
চলতি বছরে দুই লাখ ২৪ হাজার ৫৬৭ মেট্রিক টন ছোলা আমদানির জন্য ঋণপত্র খুলেছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। গত বছর এর পরিমাণ ছিল দুই লাখ ৬৫ হাজার ৫৯৬ মেট্রিক টন। অর্থাৎ এ বছরের জানুয়ারিতে ছোলার এলসি কিছুটা কমেছে।
আরও পড়ুন :রেমিট্যান্সের পালে হাওয়া
এ বছর ৪২ হাজার ৫৬৩ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়েছে। গত বছরের একই সময় ছিল যার পরিমাণ ছিল ৩৬ হাজার ২২৬ মেট্রিক টন।
পাশাপাশি এ বছর ২৯ হাজার ৪৮২ মেট্রিক টন খেজুরের ঋণপত্র খোলা হয়েছে। আগের বছর যার পরিমাণ ছিল ১৬ হাজার ৪৯৮ মেট্রিক টন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, রপ্তানি বৃদ্ধিতেও আমরা বিশেষ নজর রেখেছি। গত নভেম্বর মাস থেকে প্রতি মাসে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত মোট রপ্তানি আয় হয়েছে ৩২ বিলিয়ন ডলার। আগের বছরের একই সময় যা ছিল ২৯ বিলিয়ন ডলার। রেমিট্যান্স ও রপ্তানি মিলিয়ে গত সাতমাসে ৪৪ বিলিয়ন ডলার আয় হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মেজবাউল হক বলেন, রপ্তানি আয়ের বৈদেশিক মুদ্রার পুরোটা হাতে এসে পৌঁছায়নি। কারণ রপ্তানি করার পর টাকা পরিশোধের জন্য ১২০ দিন সময় পেয়ে থাকেন বিদেশি আমদানিকারকরা। এটি কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন :রপ্তানি আয় বেড়েছে দেড় লাখ কোটি টাকা
বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা পরিবর্তনের বিষয়ে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই হঠাৎ কোনো নীতিমালায় পরিবর্তন আনা যায় না। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, কোভিড ও বৈশ্বিক ঋণের সুদহারের ঊর্ধ্বগতি অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে। ফলে আমরা আস্তে আস্তে সংস্কারের দিকে হাঁটছি। সংস্কারের অংশ হিসেবে ভোক্তা ঋণের সুদহার ৯ থেকে ১২ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। অন্যান্য সুদহার পরিবর্তনের বিষয়েও কাজ করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বিদেশ থেকে কোনো পণ্য আমদানী করতে চাইলে অবশ্যই ব্যাংকের মারফত এলসি করতে হয়। আন্তর্জাতিক বানিজ্যের ক্ষেত্রে একমাত্র বৈধ মাধ্যম হল এলসি। এলসির মাধ্যমেই ব্যবসায়ীরা একদেশ থেকে অন্য দেশে পন্য আমদানি-রপ্তানি করে থাকে।
সান নিউজ/জেএইচ/এমআর