সান নিউজ ডেস্ক : খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেন বলেছেন, রাশিয়া থেকে বেশি দামে গম কেনা হচ্ছে বলে টিআইবি যে প্রতিবেদন করেছে তা বিভ্রান্তি তৈরি করবে। সঠিক দামেই গম কেনা হচ্ছে দাবি জানিয়ে তিনি টিআইবির প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন।
আরও পড়ুন : শ্রীলঙ্কার সুদিন!
সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন সচিব।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে গত রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছে, বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি দামে গম আমদানির সিদ্ধান্ত জনস্বার্থ পরিপন্থি। এটা করে সরকারের কৃচ্ছ্রসাধন নীতিকে বুড়ো আঙুল দেখানো হয়েছে।
খাদ্য সচিব ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখান করে বলেন, তাদের (টিআইবি) মাধ্যমে এ ধরনের প্রতিবেদন জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করবে। এ ধরনের রিপোর্ট দিতে হলে আরও তথ্যবহুল হওয়া প্রয়োজন।
তিনি বলেন, আমরা রাশিয়া থেকে গম কিনছি, এটা সত্য। টিআইবি একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলেছে, গম বেশি দামে কেনা হচ্ছে। আমি সরকারের অবস্থান জানাচ্ছি। রাশিয়া থেকে গম আনা হচ্ছে, এটা মোটেও বেশি দামে না। এটা করা হচ্ছে প্রতিযোগিতামূলক দামে।
আরও পড়ুন : বিএনপিকে কাভারেজ বেশি দেওয়া হচ্ছে
সচিব বলেন, এটা (গম কেনা) আমাদের জন্য প্রয়োজন ছিল। এই ক্রয়ের ফলে খাদ্য নিরাপত্তায় আমরা গমের ক্ষেত্রে স্বস্তিতে আছি। নিরাপদ খাদ্যের বাফার স্টক রাখতে হয়। জুনে আমাদের টার্গেট থাকে অন্তত ২ লাখ টন গম আর চাল ৮ থেকে ১০ লাখ টন থাকতে হয়। জুনের মধ্যে আনফরচুনেটলি আমাদের স্টক এক লাখ ৫৫ হাজার টনে চলে এসেছিল।
তিনি বলেন, এটা মূলত আমরা ব্যবহার করি মার্জিনাল মানুষের জন্য, সামাজিক নিরাপত্তা বেস্টনিতে দেওয়ার জন্য। এটা কমে যাওয়ার পর যখন আমরা গম আনার চেষ্টা করি তখন পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে একটি বাধা আসে যে, তাদের ওখানে গম রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। ভারত থেকে আনতে পারলে আমাদের খরচ কম হয়, সময় কম লাগে আমরা স্বস্তিতে থাকি।
গম কিনতে আট থেকে ১০টি দেশে চিঠি দেওয়া হয় জানিয়ে মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, সব জায়গায় চেষ্টা করি যাতে এটা সংগ্রহ করা যায়। পরে অনেকে রেসপন্স করে। এর মধ্যে আর্জেন্টিনা, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়া দূরের দেশ হওয়ার কারণে পরিবহন ব্যয় বেশি। সব ক্ষেত্রেই প্রতি টন ৫০০ ডলারের বেশি দাম পড়ে যায়।
আরও পড়ুন : ইভিএম কিনতে ৮৭১১ কোটি টাকা চায় ইসি
তিনি আরও বলেন, রাশিয়া শুরুতে অমনোযোগী ছিল, কিন্তু আমাদের যোগাযোগের পর আগ্রহী হয়। প্রথমে আমরা একটি মিটিং করি জি-টু-জি করার জন্য ২৩ জুন। এটা থেকে কোনো রেজাল্ট হয়নি। পরে আমরা কূটনৈতিক যোগাযোগ শুরু করি। তখন তারা রাজি হয়। ফাইনালি আমরা ২৪ আগস্ট চুক্তি করি, ৪৩০ ডলার করে। একদম পরিস্কার যে, দাম বেশি হয়নি।
‘এফওবি প্রাইস হলো, যে দেশ রপ্তানি করছে সে দেশের বন্দরে দাম। এখানে কোনো রকম পরিবহন দেবে না, শুধু গম দেবে। এটার সঙ্গে আমাদের পাঁচটা ব্যয় যুক্ত হয়।
লোডিং, জাহাজ ভাড়া, আনলোডিং, ইনস্যুরেন্স, বার্থ অপারেটর হ্যান্ডলিং এবং লাইটেনিং। এটা হয়ে আমাদের কাছে পৌঁছে দেয়।
আরও পড়ুন : সম্রাটের জামিনের মেয়াদ বাড়ল
মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, যেদিন আমরা কিনেছি সেদিন এফওবি প্রাইস ছিল ৩৩৩ ডলারের মতো। দাম এখন ৩৩৪ দশমিক ২৫। এই বাকি খরচগুলো যুক্ত করে বাংলাদেশ লাভবানই হয়েছে। আমার দিক থেকে বলতে পারি, এখানে কোনো দুর্নীতি বা অনিয়ম হয়নি।
সান নিউজ/এইচএন