নিজস্ব প্রতিবেদক:
বৈশ্বিক মহামারি করোনার সংক্রমণ থেকে দূরে থাকতে এবার অনেকেই কোরবানির গরু কিনতে হাটমুখী হচ্ছেন না। অনলাইন থেকেই কিনে নিচ্ছেন নিজের পছন্দের কোরবানির গরুটি।
অনলাইন থেকে পশুর ছবি ও ভিডিও দেখে ক্রেতারা কিনতে আগ্রহী হচ্ছেন। এছাড়াও সেখানে থাকছে পশুর জাত, বয়স, ওজন ও দামসহ যাবতীয় তথ্য।
এমনকি মোবাইল ব্যাংকিংয়ে পশুর দাম পরিশোধের পাশাপাশি থাকছে হোম ডেলিভারির সুবিধা। সেই সঙ্গে আরও একটি বাড়তি সুবিধা হলো অনলাইনে পশু কিনলে কোনো ধরনের হাটের খাজনা দিতে হয় না। যার ফলে করোনাকালের ঈদুল আজহায় অনলাইনে গরু-ছাগল বিক্রি বেড়ে গেছে।
উদ্যোক্তারা বলছেন, সারা বছর দেশে যে পরিমাণ পশু জবাই হয়, তার বড় অংশই হয় এই কোরবানির ঈদে। করোনার সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে এবার পশু কিনতে হাটে যাবেন না অনেক ক্রেতা। বিষয়টি মাথায় রেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা অনলাইন হাটে সরব বড় খামারিরা।
অন্যদিকে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ছোট খামারিরা। অবশ্য পরিস্থিতি বিবেচনায় অনেক ছোট খামারিও ঝুঁকছেন অনলাইন মাধ্যমে।
বর্তমানে ফেসবুকে পশু কেনাবেচার জন্য বেশকিছু গ্রুপ রয়েছে। সেখানে অনেক উদ্যোক্তা এরই মধ্যে পশুর বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন। অনেক অ্যাগ্রো ফার্মও বিভিন্ন অনলাইনে প্ল্যাটর্ফমে তাদের গরুর বিজ্ঞাপন দিতে শুরু করেছে।
খামারিরা বলছেন, প্রতিবছর কোরবানির কয়েক মাস আগেই ব্যাপারীরা খামারিদের পেছনে ঘুরতে শুরু করতেন। এবার কোরবানি ঈদের সময় ঘনিয়ে এলেও কোনো ব্যাপারী বা আগাম ক্রেতার দেখা মিলছে না। তাই তারা বাধ্য হয়ে ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে এবং বিভিন্ন অনলাইন হাটের সঙ্গে যোগাযোগ করে পশু বিক্রির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এভাবে খামারের সব গরু বিক্রি হবে কি না তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন খামারিরা।
এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ বিভাগীয় ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও স্বদেশ ফার্মের মালিক হামিদ সরকার বলেন, যারা কোরবানি দেবে তারা অনলাইনে হোক বা বাজারে গিয়ে হোক গরু কিনবেই। তবে কিছু মানুষ রয়েছে যারা সংক্রমণের ভয়ে বাজারে যেতে ইচ্ছুক না। তাই আমরা গরুর ছবি ও ভিডিও বিভিন্ন গ্রুপে দিয়ে প্রচার করছি, ভালোই সাড়া পাচ্ছি।
দীর্ঘদিন ধরে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে গরু বিক্রি করে যাচ্ছে ‘সাদিক অ্যাগ্রো’ প্রতিষ্ঠানের মালিক এমরান হোসেন। তিনি জানান, অনেক আগে থেকেই অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিজেদের খামার থেকে গরু বিক্রি করে যাচ্ছি। আমরা কখনো হাটে গরু বিক্রি করি না। এ বছর অনলাইনে গরু বিক্রি করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
‘খামার ই’-এর ব্যবস্থাপক দিপ্ত সাহা জানান, দেশের যেকোনো খামারি তাদের গরু বিক্রির বিজ্ঞপ্তি দিতে পারবে। যেকোনো ক্রেতা গরু দেখে পছন্দ হলে কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই কিনতে পারবে। আমরা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি যাতে কোনো খামারির গরু বিক্রি করতে অসুবিধা না হয়।
বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মাস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাহ ইমরান বলেন, এবার অধিকাংশ ক্রেতা অনলাইনে কোরবানির পশু কিনতে আগ্রহী। কিন্তু তাদের বিশ্বস্ত একটা প্ল্যাটফর্ম দিতে হবে, যে প্ল্যাটফর্ম থেকে তারা ঠকবে না বা প্রতারিত হবে না। এজন্য বড় বড় অনলাইন প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে সরকারের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে যোগাযোগ করতে হবে।
সান নিউজ/ আরএইচ