খায়রুল খন্দকার, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইল জেলায় ডিমের হালি ৫ থেকে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে । গত কয়েক দিন ধরে ডিমের দাম ঊর্ধ্বমুখী ছিল।
আরও পড়ুন : ঢাকা-গুয়াংজু রুটে বিমান চলাচল শুরু
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) জেলার বিভিন্ন উপজেলার বাজারগুলোতে লাল ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে হালি প্রতি ৪০ টাকা করে।
যা বুধবার (১৭ আগস্ট) বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা হালিতে। কোথাও কোথাও বিক্রি হয়েছে ৫৫ টাকা হালিতে।
সেই হিসাবে খুচরা বাজারে একদিনের ব্যবধানে হালিপ্রতি ডিমের দাম কমেছে ৫ থেকে ১০ টাকা। তবে যারা ডজন কিংবা এক কেস ডিম কিনছেন তারা আরও কম দামে কিনতে পারছেন।
আরও পড়ুন : আলজেরিয়ার ভয়াবহ দাবানলে নিহত ২৬
বাজারগুলোতে লেয়ার মুরগির ডিমের দাম কমলেও দেশি মুরগি কিংবা হাঁসের ডিমের দাম কমেনি। হাঁসের ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৫০ টাকায়।
ভূঞাপুর উপজেলা ডিম ব্যবসায়ী তালেব বলেন, ডিমের দাম আজ কমেছে। ডিমের হালি বিক্রি করছি ৪০ টাকা। আগে ছিল ৪৫/৫০ টাকা। দাম কমার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আড়ৎ থেকে ডিম কম দামে কিনেছি। আমরাও তাই কম দামে বিক্রি করছি। খুব বেশি লাভ করি না, কেনা দামের সঙ্গে মিলিয়ে সীমিত লাভে বিক্রি করি।
আরও পড়ুন : ক্রেন চালাচ্ছিলেন সহকারী
প্রায় একই কথা বলেন একই উপজেলার গোবিন্দাসী বাজারের ব্যবসায়ী লুৎফর রহমানের সাথে তিনি বলেন, হালিতে ডিমের দাম কমেছে ১০ টাকা।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই দেশে একবার জিনিসের দাম বাড়লে সেটা কি সহজে কমে।
তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কথা বলে ৪০ টাকা থেকে ডিমের দাম হয়েছে ৫৫ টাকা। এখন কমলো ৫/১০ টাকা। এটাকে কি কমানো বলে?
আরও পড়ুন : কাবুলে বিস্ফোরণ, নিহত ২১
গোবিন্দাসী বাজার ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম বলেন, দাম বাড়ার আগে প্রতিদিন ৩০ কেস ডিম বিক্রি হতো। এখন বিক্রি হয় ১০-১৫ কেস। দাম বাড়ায় অনেকে ডিম কেনা কমিয়ে দিয়েছে। আমাদের লস হচ্ছে।
ডিম কিনতে আসা এক ক্রেতার সাথে কথা হয় তিনি বলেন, দেশের বাজারে ডিমের হালি ৫০ টাকা হলেও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কলকাতায় ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে বাংলাদেশি টাকায় ২৫ টাকার আশপাশে (১ রুপি সমান ১ টাকা ২০ পয়সা ধরে) তুলনায় আমাদের দেশে (ঢাকায়) দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে ডিম। এই দেশ টা মগের মুল্লুক হয়েছে গেছে।
জানতে চাইলে ডিম ব্যবসায়ী ছোট জাকির তালুকদার এর সাথে তিনি বলেন, মুরগির খাবারের দাম বেড়েছে। তার ওপর জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে ডিমের দাম বেড়েছে।
ডিম আমদানি করা হবে বলে বাণিজ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এখন ডিমের দাম কমানো হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরাও চাই ডিমের দাম কমুক, কিন্তু আমাদের উপায় নেই। তিনি বলেন, ডিমের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্রি কমেছে। আমাদের ব্যবসাও কমেছে।
আরও পড়ুন : একযোগে ১৪৬ কনস্টেবল বদলি
উপজেলার ডিম ব্যবসায়ী ও সরকার পোল্ট্রি ফিডস্ এর স্বত্ত্বাধিকারী রনি সরকার বলেন, পোলট্রি ডিম এবং মাংসের মূল্য বৃদ্ধির জন্য একমাত্র দাই উৎপাদন খরচ। "জালানি তেল নয়"। বিগত এক বছরে ৫০ কেজি খাদ্যের প্রতি ব্যাগ মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ১১০০ টাকা।
১হাজার ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৮০ হাজার টাকা। ১হাজার ডিমের মুরগী, ডিম উৎপাদনে আসার আগ পর্যন্ত খরচ হয় খাঁচা সহ প্রায় ৮ লক্ষ টাকা।
ডিম, মাছের উৎপাদনের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। খামারী গণ উৎপাদন ব্যায়ের সাথে লড়াই করতে করতে বর্তমানে প্রায় ৬০% পোলট্রি খাবার বন্ধ হয়ে গেছে।
এ অবস্থা চলতে থাকলে খামার আরও বন্ধ হয়ে ভবিষ্যতে পোলট্রি ডিম এবং মাংসের সংকট সৃষ্টি হয়ে মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে যাবে।
সান নিউজ/এইচএন