এম.এ আজিজ রাসেল, কক্সবাজার: ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারে লাখো পর্যটকের সমাগমের সম্ভাবনা দেখছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। এজন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। হোটেল, মোটেলগুলো নতুন সাজে সাজানো হচ্ছে, চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। তবে করোনা সংক্রমণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন ব্যবসায়ীরা। এরই মধ্যে তারকা মানের হোটেলগুলোর রুম ৫০ শতাংশ বুকিং হয়েছে।
প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার। যেখানে পাহাড়, সাগর ও প্রকৃতির রয়েছে এক অপরূপ মিতালী। সাগরের ঢেউ আছড়ে পড়ছে উপকূলে, ঢেউয়ের সঙ্গে খেলা করে ডিঙি নৌকা। রয়েছে সাগরের সামনে বিশাল বালিয়াড়ি। এই বালিয়াড়িতে খেলা করে লাল কাঁকড়া। দল বেঁধে ছোটাছুটি করে এদিক-ওদিক। সমুদ্রসৈকতের বুকে আঁকা এ প্রাণীর আলপনা যেন নজরকাড়া। তাই তো টানা ছুটিতে ভ্রমণপিপাসুদের কাছে টানে কক্সবাজারের এমন প্রকৃতি।
এবারের ঈদে রয়েছে টানা ৪ দিনের ছুটি। এমন পরিস্থিতিতে সব প্রস্তুতি শেষ করে পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রহর গুনছেন ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে নিরাপত্তা জোরদার করার দাবিও তাদের।
তবে, অন্য সময়ের মতো আগাম বুকিংয়ের তোড়জোড় নেই বলে জানিয়েছেন তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইসের বিপণন নির্বাহী ইমতিয়াজ সুমেল। তিনি বলেন, টানা ছুটি থাকলেও ১৫ জুলাই থেকে ১৬ জুলাই বুকিং হয়েছে। হোটেল-মোটেল জোনের প্রায় তারকা হোটেলে একই অবস্থা। অথচ অন্য সময়ে টানা তিন থেকে পাঁচদিন ছুটি থাকলেই বুকিংয়ের ফোন রিসিভ করতে করতে হাঁপিয়ে উঠতে হতো। এখন সেই ব্যস্ততা নেই। তবে যে হারে কক্সবাজারসহ সারা দেশে করোনা সংক্রমন বৃদ্ধি পাচ্ছে তা নিয়ে একটু আশঙ্কায় আছি।
একই কথা বললেন সি গাজীপুর হোটেলের ব্যবস্থাপক জাব্বার। তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে এই ছুটিতে তেমন চাপ নেই বললেই চলে। যা কল আসছে তা স্বাভাবিক। এরপরও ধারণা করা যায়, ১২ থেকে ১৬জুলাই পর্যন্ত লাখো পর্যটক কক্সবাজার অবস্থান করবেন। যদি করোনা সংক্রমণ স্বাভাবিক থাকে। যদি করো না সংক্রমণ বৃদ্ধি পায় তাহলে আমরা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারি।
সেই আশায় পর্যটক বরণে তৈরি হচ্ছে পর্যটন নগরীর আবাসন ও খাবারের দোকানগুলো। চলছে হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলোতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। মাস দেড়েক ধরে সুনসান নীরবতায় থাকা সৈকত জুড়ে কোলাহল মুখর পরিবেশের আশায় রয়েছেন সবাই। ঢেউয়ের গর্জন ও বালিয়াড়ির বুকে ডালপালা ছড়ানো সাগরলতাও যেন পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে।
কক্সবাজার হোটেল মোটেল, গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, কক্সবাজারে ৫ শতাধিক হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস ও রিসোর্টে প্রায় দেড় লাখের মতো পর্যটক থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। ইতোমধ্যে ৫০-৬০ শতাংশ রুম বুকিং হয়েছে। সব মিলে কয়েক লাখ পর্যটক আসবে এমনটি ধরে নিয়ে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। কক্সবাজার যে হারে করোনা বেড়েছে তাই নিয়ে অনেক ব্যবসায়ী চিন্তিত । আশা করছি- ঈদের আগে আগাম বুকিং আরও বাড়বে।
কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম বলেন, পর্যটকের নিরাপত্তায় পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে সার্বক্ষণিক টহল রয়েছে। ঈদের ছুটিতে ব্যাপক পর্যটক সমাগম ঘটবে- সেটি বিবেচনায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছ। সৈকতে পর্যটকদের জন্য খাবার পানি এবং প্রাথমিক চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
সান নিউজ/এনকে