নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর বেশ কিছু বাজার ঘুরে দেখা যায় নিত্যপণ্যে জিনিসের দাম কিছুটা সহনশীল হয়ে এলেও এখনো বেশ কিছু পণ্যের দাম চড়া। এর মধ্যে চাল, ডাল ও ডিম অন্যতম।
এসব পণ্যের দাম চলতি সপ্তাহে না বাড়লেও আগের বাড়তি দামই রয়েছে। তবে পেঁয়াজ-রসুন, আদাসহ সব ধরনের মসলাজাতীয় পণ্যের দাম কমেছে। এ ছাড়া ব্রয়লার মুরগি, ভোজ্য তেল, ছোলাসহ দাম কমেছে বেশ কিছু পণ্যের।
গত দুই সপ্তাহ চড়া থাকার পর কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে এখন ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে আগের বাড়তি দামই রয়েছে ডিমের। ফার্মের মুরগির ডিম এখনো ৩৩ থেকে ৩৫ টাকা হালি ও ১০০ থেকে ১০৫ টাকা ডজন।
অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। এসব বাজারে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা, মহিষের মাংস ৬০০ টাকা, খাসির মাংস ৮০০ টাকা, বকরি ৭৫০ টাকা।
সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দাম না বাড়লেও আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে অধিকাংশ সবজি। বেশিরভাগ সবজির দাম আগের মতো থাকলেও দাম বাড়ার তালিকায় যুক্ত হয়েছে কাঁচামরিচ, মুলা, লেবু, লাউ ও জালি কুমড়া। অপরিবর্তিত আছে শাকের বাজার। সব ধরনের শাক আগের দামেই বিক্রি করতে দেখা গেছে।
শুক্রবার (১০ জুলাই) রাজধানীর মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি, ফকিরাপুল, শান্তিনগর, সেগুন বাগিচা, মগবাজার, মালিবাগ, খিলগাঁও বাজার ঘুরে এসব চিত্র উঠে এসেছে।
এসব বাজারে বর্তমানে প্রতিকেজি পটল বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ঝিঙা-চিচিঙা-ধুন্দল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, করল ও উস্তা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কচুর ছড়া ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, কচুর লতি (ছোট) ৪০ থেকে ৫০ টাকা, লতি (বড়) ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৮০ টাকা ও মিষ্টি কুমড়া প্রতিকেজি ৩০ টাকা। প্রতিকেজি ডায়মন্ড আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা, ছোট আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা কেজি দরে। কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে প্রতিকেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, প্রতিকেজি টমেটো (ছোট) বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, টমেটো (ফ্রেশ) ১০০ থেকে ১২০ টাকা।
দাম কমেছে পেঁপে ও কাঁকরোলের। বাজারে প্রতিকেজি পেঁপে ও কাঁকরোল ১০ টাকা কমে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ৪০ থেকে ৫০ টাকা ও ৬০ থেকে ৭০ টাকা এবং ছোট কাঁকরোল ৪০ টাকা।
দাম বেড়েছে লেবু, নতুন মুলা, লাউ ও জালি কুমড়ার। হালিতে তিন থেকে পাঁচ টাকা বেড়ে প্রতিহালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে ১৫ টাকা, কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজিদর। প্রতি পিসে ১০ টাকা বেড়ে লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা ও জালি কুমড়া প্রতি পিস ৫০ টাকায়।
এদিকে, দাম অপরিবর্তিত আছে কলা, বড় কচু, পুদিনা পাতা, ধনিয়া পাতা ও কুমড়ার দাম।
এসব বাজারে প্রতি আঁটি (মোড়া) কচুর শাক বিক্রি হচ্ছে আকারভেদে ১০ থেকে ১৫ টাকা, লাল শাক ১৫ টাকা, মূলা ১৫ থেকে ২০ টাকা, পালং শাক ২০ টাকা, লাউ ও কুমড়া শাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পুঁই শাক ২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এসব বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে (মানভেদে) ৩০ থেকে ৪৫ টাকা, রসুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা। এছাড়া প্রতিকেজি আদা বিক্রি হচ্ছে (মানভেদে) ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। খোলা সয়াবিন (লাল) বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০৫ টাকা লিটার, খোলা (সাদা) সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা লিটার। খোলা সরিষার তেল বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা লিটার।
বর্তমানে প্রতিকেজি মিনিকেট (নতুন) চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা কেজি, মিনিকেট পুরান ৬০ টাকা, বাসমতী ৬০ থেকে ৬২ টাকা, গুটিচাল ৪২ থেকে ৪৪ টাকা, পায়জাম চাল ৪৬ টাকা, স্বর্ণ ৪২ থেকে ৪৪ টাকা, আঠাশ ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা কেজিদরে, আতোপ চাল ৬৫ থেকে ৬৬ টাকা, সরকারি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪২ টাকা, এক সিদ্ধ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, পাইজাম ৪০ টাকা, প্রতিকেজি পোলাও চাল বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা।
প্রতিকেজি ডাবরি ডাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা, অ্যাংকার ৫০ টাকা, প্রতিকেজি দেশি মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, মসুর (মোটা) ৮০ টাকা কেজিদরে।
সবজির বাড়তি দাম নিয়ে ভিন্নমত দেখা গেছে ক্রেতা বিক্রেতার মধ্যে। বিক্রেতারা বলছেন সবজির সিজন না হওয়ায় প্রতি বছর বর্তমানের এ সময়ে দাম বাড়তি থাকে। আর ক্রেতারা বলছেন, সবজির সিজন না হলেও কোনো সবজির ঘাটতি নে, এ অবস্থায় দাম বাড়ার প্রশ্ন উঠে না।
এ বিষয়ে হাসি নামে খিলগাঁও বাজারের এক বিক্রেতা জানান, এখন সবজির সিজন না হওয়ায় সব কিছুর দাম বাড়তি। পাইকারি বাজারে বাড়তি দাম হলে আমাদের এখানে দাম বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে বাজারে সবজির সরবরাহ বেশি হলে দাম কমে আসবে বলে জানান তিনি।
তবে এ বিক্রেতার সঙ্গে একমত নন বাজারের ক্রেতা মিতু। তিনি বলেন, আপনারা দেখেন বাজারে কোনো সবজির ঘাটতি আছে কি না। বাজারে সবজির ঘাটতি না তাহলেও দাম কেন বাড়বে, প্রশ্ন করেন তিনি। ব্যবসায়ীরা বেশি লাভের আশায় দাম বাড়াচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
সান নিউজ/ আরএইচ