নিজস্ব প্রতিনিধি:
চলমান করোনা সংক্রমণের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যের সব খাতেই বিপর্যয় নেমে এসেছে। তবে আবাসন খাত সেই বিপর্যয় থেকে বের হয়ে আসতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, এক্ষেত্রে তাদের সাহস জোগাচ্ছে কালো টাকা।
২০২০-২১ অর্থবছরে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়ে মঙ্গলবার (৩০ জুন) বাজেট পাস হয়েছে।
আবাসন খাতের নেতারা বলছেন, বিনা প্রশ্নে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ায় এবার প্রচুর পরিমাণে আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগ হবে। এর ফলে কারোনাভাইরাসের কারণে বিপর্যস্ত এই খাতটি আবারও চাঙা হবে।
এ প্রসঙ্গে আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশনের (রিহ্যাব) সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন জানান, ‘অপ্রদর্শিত আয়ের অর্থ বিনাশর্তে বিনিয়োগ করার সুযোগ দেওয়ার কারণে আশা করি, করোনার মধ্যেই আবাসন খাত চাঙা হবে। শুধু এই খাত নয়, পুরো অর্থনীতিতে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।’ তিনি উল্লেখ করেন, বিনাশর্তে অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগের সুযোগ থাকায় প্রচুর অর্থ আমাদের অর্থনীতিতে যুক্ত হবে। অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের এই প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানান তিনি।
রিহ্যাব সভাপতি বলেন, ‘আবাসন খাত চাঙা হওয়ার সঙ্গে জড়িত রড, সিমেন্ট, ইট, বালুসহ ২১১টি নির্মাণ উপখাতের কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাবে। এতে করে সরকারের রাজস্ব আদায় বাড়বে।’
এর আগে ২০০৭ ও ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিনা প্রশ্নে কালো টাকা সাদা করার সুযোগটি দেওয়া হয়েছিল। তখন আবাসন খাতে প্রচুর বিনিয়োগ আসায় এই খাত চাঙা হয়েছিল।
এ প্রসঙ্গে রিহ্যাবের সহ-সভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া বলেন, ‘করোনা কবে যাবে কেউ বলতে পারছে না। কিন্তু মানুষের জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে অর্থনীতিকে সচল রাখতে বিনা প্রশ্নে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, আবাসন খাতে এর সুফল মিলবে।’
তিনি বলেন, ‘করোনার মাঝেও আবাসন খাত ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। আর এর সুফল পুরো অর্থনীতিতে আসবে।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা বিনা প্রশ্নে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ প্রদানের দাবি জানিয়ে আসছিলাম। প্রায় একযুগ পর সুযোগটি এসেছে।
প্রসঙ্গত, এত দিন শুধু ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে এই সুযোগ ছিল। এখন নির্দিষ্ট হারে কর দিয়ে জমি কেনাতেও এই সুযোগ দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, এলাকাভিত্তিক নির্দিষ্ট হারে কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করা যাবে। এমনকি অপ্রদর্শিত অর্থে আগের কেনা সম্পদের বিপরীতেও নির্ধারিত হারে কর দিয়ে যেকোনও পরিমাণ টাকা সাদা করা যাবে। এ ব্যাপারে কোনও প্রশ্ন করবে না আয়কর বিভাগ। শুধু আয়কর বিভাগ নয়, প্রশ্ন করবে না দুদকও।