সান নিউজ ডেস্ক : কারো প্রয়োজন পেঁয়াজ, তেল, ডাল ও চিনি। আবার কারো প্রয়োজন ডাল, চিনি, ছোলা ও খেজুর। কিন্তু প্রয়োজন হলে হবে না, এক জন ক্রেতাকে টিসিবির বিক্রিত ছয়টি পণ্যই একসঙ্গে কিনতে হবে।
আরও পড়ুন : পুতিন ক্ষমতায় থাকতে পারেন না
ফলে ক্রেতারা সাশ্রয়ী মূল্যে এসব পণ্য কিনতে গিয়ে অনেকটা বিপাকে পড়েছেন। কারন, কারো কাছে প্রয়োজন ছাড়া কোনো পণ্য কেনা অনেকটা অপচয়ের মতো। বিশেষ করে অতিদরিদ্র মানুষরা।
রাজধানীর মগবাজারের বাসিন্দা রিপন খান এমনটাই জানালেন। তিনি এ এলাকার একটি স্টেশনারী দোকানে কাজ করেন। চার সদস্যের পরিবারে তিনিই একমাত্র উপার্জনকারী।
গতকাল খামারবাড়িতে টিসিবির ট্রাক থেকে পণ্য কিনতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, আমার দরকার তেল, ডাল আর পেঁয়াজ। কিন্তু তারা শুধু এই তিনটি পণ্য দেবে না। তাই বাধ্য হয়ে ছয়টি পণ্যই কিনতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন : রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীকে পুতিনের অভিনন্দন বার্তা
রিপন আক্ষেপ নিয়ে বলেন, আমাদের তো কষ্টের পয়সা। ছোলা, খেজুর না কিনলেও হয়। এই টাকা দিয়ে ডাল আর তেল কিনলে সংসারের জন্য ভালো।
জানা গেছে, এক জন ক্রেতার কাছে একসঙ্গে দুই কেজি চিনি, দুই কেজি মসুর ডাল, পাঁচ কেজি পেঁয়াজ, দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি ছোলা ও এক কেজি খেজুর বিক্রি করা হচ্ছে। এক জনের কাছে চার কেজি ছোলা বিক্রি করা হলেও এখন তা কমিয়ে দুই কেজি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : ৫ দিনের সফরে কিশোরগঞ্জ যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি
তবে অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো ডিলার সুযোগ বুঝে ৪ কেজি ছোলাও বিক্রি করছেন। প্রতি কেজি চিনি ৫৫ টাকা, বড়দানা মসুর ডাল ৬৫ টাকা, ছোলা ৫০ টাকা, খেজুর ৮০ টাকা, প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১১০ টাকা ও পেঁয়াজ ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হচ্ছে।
টিসিবির ছয়টি পণ্যের এই প্যাকেজ কিনতে এক জন ক্রেতাকে একসঙ্গে ৮৭০ টাকা খরচ করতে হচ্ছে। যা স্বল্পআয়ের ক্রেতাদের কাছে অনেক সময় কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
আরও পড়ুন : কোম্পানীগঞ্জে ভাবিকে ধর্ষণের দায়ে দেবর গ্রেফতার
তবে টিসিবি সূত্র জানিয়েছে, তারা পবিত্র রমজান উপলক্ষ্যে ছোলা ও খেজুর বিক্রি করছে। স্বল্পআয়ের মানুষের সুবিধার কথা বিবেচনা করেই অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে এ দুটি পণ্য যুক্ত করা হয়েছে। তবে কোনো ডিলার যদি নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে বেশি ছোলা ও খেজুর এক জন ক্রেতার কাছে বিক্রি করেন, তাহলে সেই ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে আগে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে টিসিবির ডিলাররা তাদের পণ্য বিক্রি করলেও এখন ডিলাররা প্রতিদিন ট্রাক নিয়ে কাউন্সিলর অফিসে যান। তারপর সেখানে আসা ক্রেতারা টিসিবির ট্রাক থেকে পণ্য ক্রয় করেন।
আরও পড়ুন : ঠাকুরগাঁও স্টেশন মাস্টার লাঞ্চিত
অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো কাউন্সিলর তার ওয়ার্ডে টোকেন দিয়েছেন। যারা এই টোকেন পেয়েছেন, তারাই এসে টিসিবির ট্রাক থেকে সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য কিনেন। এতে অনেক ক্রেতা বঞ্চিত হন।
টিসিবির ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জুয়েল আহমেদ এ প্রসঙ্গে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, এখন রাজধানীতে প্রতিদিন ১৩৮-১৪০টি ট্রাকে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। যদি এরমধ্যে ১০০টি ট্রাক কাউন্সিলরের অফিসের সামনে পণ্য বিক্রি করে। আর বাকি ট্রাকগুলো রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কে পণ্য বিক্রি করে তাহলে অনেক বেশি পরিমাণে মানুষ সাশ্রয়ী মূল্যে টিসিবির পণ্য কেনার সুযোগ পাবে।
আরও পড়ুন : ইউক্রেনের স্লাভুতিচ রাশিয়ার দখলে
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজধানীর মতিঝিলে বিভিন্ন অফিসে প্রচুর মানুষ চাকরি করেন। যারা প্রতিদিন অফিসে আসা-যাওয়ার পথে টিসিবির ট্রাক থেকে পণ্য কেনে।
এসব মানুষ হয়তো এলাকায় টিসিবির ট্রাক থেকে পণ্য কেনার সময় বা সুযোগ পান না। তাই অফিস এলাকাগুলোতে টিসিবি পণ্য বিক্রি করলে অনেক মানুষ উপকৃত হবে।
সান নিউজ/এইচএন