সয়াবিন নৈরাজ্যে কৃত্রিম সংকট
বাণিজ্য

সয়াবিন নৈরাজ্যে কৃত্রিম সংকট

সান নিউজ ডেস্ক: ব্যবসায়ীরা যে যেভাবে পারছে সেভাবেই ভোক্তাদের নিকট সয়াবিন তেল বিক্রি করছে। কথা একটাই বাজারে সয়াবিন তেলের মজুদ ফুরিয়ে গেছে। অসহায় সাধারণ মানুষ ব্যবসায়ীর মর্জি অনুযায়ী দাম পরিশোধে বাধ্য। ১৬৮ টাকার বোতলজাত সয়াবিন তেল ২০০ টাকা লিটারে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। বাজার ঘুরে এসব অভিযোগ মিলেছে।

আরও পড়ুন: মানবিক করিডোরে কিয়েভ-মস্কো

গত বুধবার (২ মার্চ) বিকেলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে আসন্ন পবিত্র রমজান উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুত, সরবরাহ, আমদানি, মূল্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের পর থেকেই বাজারে এমন বাজে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী মহল।

তারা জানিয়েছেন, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ৩১ মের পর থকে সয়াবিন এবং ৩১ ডিসেম্বর থেকে পামঅয়েল খোলা অবস্থায় বিক্রি করা যাবে না। এই সময়ের পরে সয়াবিন ও পামতেল বোতলজাত করে বিক্রি করতে হবে। একইসঙ্গে দাবি অনুযায়ী সয়াবিন ও পামতেলের দাম আরও বাড়ানোর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন।

এদিকে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছেন, কিছুদিন আগে তারা এসেছিলেন তেলের দাম আরও বাড়ানোর বিষয়ে। আমরা পরিষ্কার বলে দিয়েছি- নট পসিবল (সম্ভব নয়)।

সাংবাদিকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, আমরা আপনাদের সহযোগিতা চাই। আমাদের প্রশ্ন করেই শেষ করবেন না, আপনারা বাজারেও ঢুকে পড়েন। আপনারা ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। নির্দিষ্ট করে বলেন- ‘এটার বেশি দাম দেবেন না, সচেতন হোন’ ইত্যাদি।

মিল-মালিকরা এই দুই কারণেই বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ কিছুটা কমিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। একইসঙ্গে বোতলজাত তেল সরিয়ে রেখে নিজেদের মতো নির্ধারিত দামে খোলা সয়াবিন বিক্রি করছে।

কারণ, বোতলজাত তেলের গায়ে লেখা দামের বেশি রাখার সুযোগ নাই। অপর দিকে খোলা সয়াবিন এবং পামতেলের দর নির্ধারিত করা থাকলেও বিষয়টি মনিটর করা সহজসাধ্য নয়।

তাই আপাতত এই সুযোগটিই গ্রহণ করছে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা। তারা এক লিটার সয়াবিন তেল ২০০ টাকায় বিক্রি করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

অপরদিকে বাজারে সয়াবিনের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টির উদ্দেশে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী মহল সয়াবিন ও পামতেলের মজুত গড়ছেন। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ এ বিষয়টি টের পেয়ে মাঠে নেমেছে, দায়ী ব্যক্তিদের সাজা দেওয়ার খবরও উঠে এসেছে।

আরও পড়ুন: ইউক্রেনে রুশ জেনারেল নিহত

বৃহস্পতিবার ( ৩ মার্চ) সয়াবিন তেল মজুত করে কৃত্রিম সংকট তৈরির চেষ্টা এবং সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে তেল বিক্রি করার অপরাধে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ‘মায়ের দোয়া স্টোর’কে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।

অভিযান পরিচালনা করেন প্রতিষ্ঠানটির ঢাকা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মণ্ডল। তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, সেখানে ১২০-২৫ ব্যারেল তেল পাওয়া গেছে। আরও বেশি হতে পারে।

তিনি আরও জানান, সাধারণ মানুষের কাছে সরকার নির্ধারিত মূল্যের বেশি দামে বিক্রি করছে। তাদের কাছে মূল্য তালিকা নেই। বিক্রির পরিমাণ খুব কম। দাম আরও বাড়লে বিক্রির পরিকল্পনা করছিল। অথচ বাজারে তেল নেই।

কৃত্রিম সংকট তৈরির একটা পায়তারা তাদের ছিল। ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং সরকার নির্ধারিত মূল্য তালিকা আমরা সেখানে টাঙানোর ব্যবস্থা করেছি।

এরূপ পরিস্থিতিতে বাজারে সয়াবিন তেল অতিরিক্ত দামে বিক্রি ঠেকাতে যৌথ অভিযানে নামছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।

এদিকে রাজধানীর অনেক বাজারের এবং পাড়া মহল্লার মুদি দোকানে সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। যেসব দোকানে সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে, তা বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। সুযোগ বুঝে ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন বিক্রেতারা।

শুধু রাজধানী নয়, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকেও একই ধরনের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। তারা জানিয়েছে, সয়াবিন তেলের সংকটের খবর পাওয়া গেছে। কদিন ধরে এ সংকট শুরু হয়েছে, যা এখন প্রকট। ফলে অনেক দোকানে এখন প্রতি লিটার তেলের দাম চাওয়া হচ্ছে ২০০ টাকা পর্যন্ত।

রাজধানী ঢাকার সবচেয়ে বড় পাইকারি তেলের বাজার মৌলভীবাজারেও সয়াবিন তেলের সংকট। সেখানে তেল কিনতে গিয়ে ফিরে আসছেন খুচরা ক্রেতারা। কারও কাছে সয়াবিন থাকলেও সেটা গোপনে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।

এখানকার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে, সয়াবিন সরবরাহকারী কোনও প্রতিষ্ঠান তাদের তেল সরবরাহ দিচ্ছে না। ডিও (ডেলিভারি অর্ডার) ওঠাতে পারছেন না তারা। কোম্পানিগুলো তেল সরবরাহ বন্ধ রাখায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের দেখতে ভাসানচরে ১০ রাষ্ট্রদূত

মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতা গোলাম মাওলা এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, অভিযোগ সঠিক নয়। আমরা কোনও তেল মজুত করিনি। কোম্পানিগুলোই তেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। ফলে বাজারে অস্থিরতা কাজ করছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতিও আমাদের অনুকূলে নয়।

আরও পড়ুন: আয় বেড়েছে সাড়ে চারগুণ

সিটি গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক বিশ্বজিৎ সাহা এ বিষয়ে জানিয়েছেন, তারা আগের মতোই প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ তেল সরবরাহ করছেন। পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা রমজান সামনে রেখে সয়াবিন মজুত করছেন। এজন্য বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি হচ্ছে। কারখানায় কোনও সমস্যা নেই।

সান নিউজ/ এইচএন

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

বৈষম‌বিরোধী আন্দোলনে বেঁচে ফেরার আশা করেনি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পতন আন্দোল&zwnj...

সবজির বাজারে স্বস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে কমেছে পেঁয়াজ, সবজি...

বড় দুর্ঘটনা থেকে বাঁচলেন পূজা 

বিনোদন ডেস্ক: ঢাকাই চিত্রনায়িকা ও মডেল পূজা চেরি ডজনখানেক ছব...

ঢাকায় বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি দল

নিজস্ব প্রতিবেদক : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাই...

স্বামীকে মৃত দেখিয়ে মামলা, নারী আটক

জেলা প্রতিনিধি : সাভারের আশুলিয়ায় জীবিত স্বামীকে বৈষম্যবিরোধ...

শেখ হাসিনাসহ ৬১ জনের নামে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়ণগঞ্জে আদালতের নির্দেশে সাবেক প্রধা...

গুমের সঙ্গে জড়িতরা পার পাবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বের কোথাও গুমের সঙ্গ জড়িতরা পার পায়নি...

বাংলাদেশিদের পাঁচ দেশ ভ্রমণে সতর্কতা

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বের ৫ দেশে যেতে চাওয়া বাংলাদেশিদের জন...

টস জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক : দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে টস জিতে ও...

কলম্বিয়ায় গেরিলা হামলায় নিহত ৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কলম্বিয়ার আনোরিতে ন্যাশনাল লিবারেশন আর্ম...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা