নৌশিন আহম্মেদ মনিরা: করোনার ধকল কাটিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর যৌথ উদ্যোগে ২০২২ সালে শুরু হয়েছে ২৬তম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। রাজধানীর উপকণ্ঠে নতুন শহরে পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
মাসব্যাপী ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা’ (ডিআইটিএফ)-২০২২ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রথমবারের মতো স্থায়ী ভেন্যুতে (বিবিসিএফইসি) বাণিজ্য মেলা হচ্ছে।
এর আগে ২৫টি মেলা অনুষ্ঠিত হয় রাজধানীর শেরেবাংলানগরের খোলা জায়গায়। ২০২১ সালে করোনার জন্য আয়োজন করা হয়নি এই মেলার। তবে নানা বাধা, চ্যালেঞ্জ উপেক্ষা করে নতুন জায়গায়, নতুন পরিবেশে এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, এবারের মেলায় মোট স্টলের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ স্টলের কাজ এখনো চলমান রয়েছে। তবে ঢাকার অদূরে অনুষ্ঠিত এই মেলা নিয়ে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। মেলায় আসা দর্শনার্থীরা বলছেন, মেলার ৩য় দিনেও মেলায় দেশীয় পণ্যের স্টলের চেয়েও বিদেশি পণ্যের স্টল বেশি চোখে পড়ছে।
মেলায় ১ম গেট দিয়ে প্রবেশপথেই হাতের ডান পাশেই চোখে পরেছে দেশীয় স্টলের সাথে ইরানি ব্যানার সংবলিত একটি স্টল। তবে এছাড়াও মেলার অধিকাংশ স্টল ফাঁকা রয়েছে।
ঢাকার উত্তরা থেকে আসা এক দর্শনার্থী বলেন, এবারের মেলায় এসে আমি আগের মতো উচ্চাস পাইনি। ঢাকার বাইরে মেলা বসাতে যাতায়াতেও বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। তবে আগের মতো তুলনামূলক তেমন দর্শনার্থী আসছে না।
মেলায় দেশীয় স্টলের এক বিক্রেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, মেলার ১ম দিকে তুলনামূলক গতবারের চেয়ে বিক্রি কম হচ্ছে। তবে মেলার সময় গড়ার সাথে সাথে দর্শনার্থী বাড়বে এবং আমাদেরও বিক্রি বেড়ে যাবে বলেও আসা ব্যক্ত করেন তিনি।
পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী এক্সিবিশন সেন্টারের (বিবিসিএফইসি) মূল ভবনে প্রবেশ করলেই দেখা মিলবে মেলার বিশেষ আকর্ষণ বঙ্গবন্ধু প্যাভেলিয়ন। এর ডানে রয়েছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ফেব্রিকসের স্টল রয়েছে।
উল্লেখযোগ্য ভারত, পাকিস্তান, কাশ্মীর ও তুরস্কের আকর্ষণীয় চাদর, থ্রি-পিসসহ অন্যান্য সামগ্রী রয়েছে। এছাড়াও মেলা কমপ্লেক্সের বাইরে (সম্মুখ ও পেছনে) প্যাভিলিয়ন, মিনি প্যাভিলিয়ন ও ফুড স্টল নির্মাণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এক্সিবিশন সেন্টারের ১৪ হাজার ৩৬৬ বর্গমিটার আয়তনের দু’টি হলে সব স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মোট ২৩টি প্যাভিলিয়ন, ২৭টি মিনি প্যাভিলিয়ন, ১৬২টি স্টল ও ১৫টি ফুড স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এবার মেলায় প্রদর্শিত পণ্যের মধ্যে রয়েছে দেশীয় বস্ত্র, মেশিনারিজ, কারপেট, কসমেটিকস অ্যান্ড বিউটি এইডস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিকস, ফার্নিচার, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহ-সামগ্রী, চামড়া ও জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, স্পোর্টস গুডস, স্যানিটারিওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল ও টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, হস্তশিল্পজাত পণ্য, হোম ডেকর ইত্যাদি।
প্রতিদিন মেলা সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত (সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাত ১০টা পর্যন্ত)। মেলার প্রবেশ মূল্য প্রাপ্তবয়স্কদের ৪০ টাকা, শিশুদের ২০ টাকা।
মেলায় দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে প্রতিদিন ৩০টি বিআরটিসি বাস ও অন্যান্য যাত্রীবাহী বাস চলাচল করবে। ভাড়া জনপ্রতি ৪০ টাকা। নামতে হবে কাঞ্চন ব্রিজ। সেখান থেকে ১০ টাকা রিকশা ভাড়া দিয়ে মেলা প্রাঙ্গণে যেতে হবে।
সান নিউজ/এনএএম