নিজস্ব প্রতিবেদক: নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য বুক-বিল্ডিং পদ্ধতির অধিনে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিও’র মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ৭৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে চায়।
বুক-বিল্ডিংয়ের মানদণ্ড অনুযায়ী, কোম্পানিটি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে নিজেদের পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) রোড শো’র আয়োজন করেছে।
রাজধানীর সেরাটন হোটেলে আয়োজিত এ রোড শোতে কোম্পানিটি তাদের প্রসপেক্টাসে বিগত ৫ অর্থাবছরের ফিন্যান্সিয়াল প্রতিবেদন তুলে ধরেছে।
অনুষ্ঠানে নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান আনিসুজ্জামান চৌধুরী, ব্যাবস্থাপনা পরিচালক জুনায়েদ শফিক, ডিরেক্টর অফ সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং ড. সাঈদ আহমেদ, এশিয়ান টাইগারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফুয়াদ হোসেনসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
২০২০-২১ অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, কোম্পানিটির কর পরবর্তী মুনাফা দাঁড়িয়েছে ২০.২২ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরে হয়েছিলো ১৩.৭৩ কোটি টাকা।
এ সময়ে কোম্পানিটির আয় দাঁড়িয়েছে ৩৬০.৬৬ কোটি টাকা, যা আগের বছরে ছিল ৩১৪.৯০ কোটি টাকা।
৩০ জুন, ২০২১ শেষে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ২.৫২ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১.৭১ টাকা। আর ৩০ জুন' ২১ অর্থবছর শেষে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ৪১.১৯ টাকা।
কোম্পানিটির ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছে এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটাল পার্টনারস ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড, ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং ইবিএল ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড। অন্যদিকে এএফসি ক্যাপিটাল লিমিটেড নাভানা ফার্মার আইপিও প্রক্রিয়ার রেজিস্ট্রার হিসেবে কাজ করছে।
নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস ৩১ মার্চ ১৯৮৬ সালে গঠিত হয়। কোম্পানিটি মূলত পশুচিকিৎসা এবং মানব স্বাস্থ্য এই দুটি বিভাগের অধীনে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।
কোম্পানীর ভেটেরিনারি বিভাগ পোল্ট্রি, দুগ্ধ এবং জলজাত পণ্য সহ বিভিন্ন বিভাগের জন্য ১২৩ টিরও বেশি উচ্চ-মানের ওষুধ এবং ফিড সাপ্লিমেন্ট তৈরি করে এবং বাজারজাত করে।
অন্যদিকে, মানব স্বাস্থ্য বিভাগ ২৭৭ টিরও বেশি ওষুধ তৈরি করে। যার ট্যাবলেট, ক্যাপসুল, ওরাল লিকুইড, অ্যাম্পুল, শুকনো পাউডার শিশি, সাসপেনশনের জন্য পাউডার, চোখের ড্রপ, ক্রিম ও মলম ইত্যাদি রয়েছে।
কোম্পানিটির কারখানা নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপসী, রূপগঞ্জ, অবস্থিত। নাভানা ফার্মা প্রায় ৩ হাজার কর্মী নিয়ে দেশীয় বাজার এবং আন্তর্জাতিক বাজারের প্রায় ১৫ টি দেশে তাদের পণ্য রপ্তানি করে থাকে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে ওষুধ শিল্পের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে বাংলাদেশ প্রায় শতভাগ বিদেশী ওষুধের উপর নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের ওষুধ বিশ্বের ১৮০টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে।
স্থানীয় ঔষধ ও রাসায়নিক ক্ষাতের প্রতিষ্ঠানগুলো এখন দেশীয় বাজারের চাহিদার ৯৮ শতাংশ পূরণ করছে। প্রতিষ্ঠানগুলো ভ্যাকসিন, হৃদরোগ ও ক্যান্সার রোগের ওষুধ এবং ইনসুলিন সহ বিভিন্ন জটিল এবং আন্তর্জাতিক মানের ওষুধ তৈরি ও উৎপাদন করছে। তাই এই খাতে বিনিয়োগকে সম্ভাবনাময় মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
সান নিউজ/এনএএম