নিজস্ব প্রতিবেদক: ফের ভূত যেন চেপে ধরেছে পুঁজিবাজারে। দিনের পর দিন পতনের বৃত্তেই ঘুরপাক খাচ্ছে দেশের পুঁজিবাজার। এতে একদিকে যেমন কমছে সূচক, সেইসঙ্গে হারাচ্ছে বাজার মূলধনও। এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে পুঁজিবাজারে। ২০১০ সালের মহাধসের পর টানা সূচকের পতনকালে বৈঠকের পর বৈঠকের খবরকে পুঁজি করে বাজারকে চাঙ্গা রাখার চেষ্টা করা হতো। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ফলাফল শূন্যই যা হবার তাই হয়েছে। বর্তমানে বাজার সংশ্লিষ্টরাও একই পথে হাঁটছেন।
মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের বৈঠকের পরদিনই সূচক কমেছে প্রায় একশ’ পয়েন্ট। শুধুু বুধবার (৮ ডিসেম্বর) নয় তিন মাস ধরেই একই প্রবণতা চলছে বাজারে। এর আগে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়াতে উন্নত বিশ্বে রোড শো’র আয়োজনেও কাজ হয়নি। উল্টো পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের পোর্টফলিওতে মূলধন উজাড় হয়ে গেছে।
করোনার মধ্যেও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশনের নতুন নেতৃত্বে পুঁজিবাজারে প্রাণ ফিরেছিল। বিনিয়োগকারীও আসছিল নতুন করে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে নিত্য নতুন আশার বাণী এবং সংশ্লিষ্টদের অতি কথনে বিভ্রান্ত হয়ে বিনিয়োগকারীরা এখন লোকসান গুনছেন। সেই সাথে আস্থা হারাচ্ছে বিনিয়োগকারীরা। অতি চতুর এবং কারসাজি চক্রের সদস্যরা বিনিয়োগকারীদের হাতে শেয়ার ধরিয়ে দিয়ে সটকে পড়ছেন। আশ্বাসে আটকে পুঁজি খোয়াচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, আগের দিনের বৈঠকের পরদিনই সূচকের বড় পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়। সারাদিনে সূচকের ওঠানামার পর পর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক কমেছে ৯৬ পয়েন্ট। আর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক কমেছে ২৫১ পয়েন্ট।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজার নিয়ে মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা ছিল পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বন্ডকে এক্সপোজার লিমিটেডের বাইরে রাখা ও বাজার দরের পরিবর্তে শেয়ারের কেনা দামকে এক্সপোজারে লিমিটে গণনা করা হবে, এমন ঘোষণা আসবে। কিন্তু সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।
তবে বাজার সংশ্লিষ্টদের একটি অংশ মনে করে, বাজারদরের পরিবর্তে কেনার দরে বিনিয়োগ হিসাব করলে প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে কোন সুবিধা আসবে না। কারণ অতীতে ক্রয়মূল্য বেশি থাকায় প্রতিষ্ঠানগুলোর সুবিধার চেয়ে অসুবিধাই বেশি হবে।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, বুধবার (৮ ডিসেম্বর) বাজারটিতে ৩৭৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৯৭টির, কমেছে ২৫৭টির। অপরিবর্তিত রয়েছে ২০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম।
তাতে ডিএসইর প্রধান সূচক ৯৭ পয়েন্ট কমে ৭ হাজার পয়েন্ট থেকে ৬ হাজার ৯৫২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইএক্স সূচক আগের দিনের চেয়ে কমেছে ১৩ পয়েন্ট আর ডিএস-৩০ সূচক কমেছে ৩৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১৫২ কোটি ৩৯ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। এর আগের দিন সোমবার (৬ ডিসেম্বর) লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৩৩১ কোটি ৪ লাখ ৫২ হাজার টাকা। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে কমেছে।
সান নিউজ/এনএএম