নিজস্ব প্রতিবেদক :
করোনা সঙ্কটকালে এ বছর অর্থাৎ ২০২০-২১ অর্থ বছরেরর বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছে সরকার।
বৃহষ্পতিবার (১১ জুন) প্রায় পৌনে ছয় লাখ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এটি তার দ্বিতীয় বাজেট ঘোষণা। এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে বাজেট কাঠামোয় কী কী পরিবর্তন আসছে সেটাই দেখার বিষয়।
এবার করোনা মহামারির প্রেক্ষাপটে নতুন কিছু আশা করছে দেশবাসী। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও স্বাস্থ্যখাতে সর্বাধিক বরাদ্দের দাবি তাদের।
প্রতিবছর বাজেট ঘোষণার সময় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আশায় থাকেন তাদের জন্য নতুন কোনও সুখবর আসছে কিনা।
ব্যবসায়ী সমাজ, অর্থনীতিবিদ কিংবা সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে বাজেট নিয়ে বাড়তি আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়।
জিডিপির প্রবৃদ্ধি কিংবা কোন খাতে কত বরাদ্দ তা জানার চেয়ে নিত্যপণ্যের দাম উঠা-নামা নিয়ন্ত্রণের ঘোষণাই সমাজের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির কাছে বাজেট। বাজেটে কোন পণ্য ও সেবার দাম বাড়ছে নাকি কমছে তা দেখার জন্য গণমাধ্যমের দিকে তাকিয়ে থাকেন তারা।
বাজেট প্রসঙ্গে নারায়ণগঞ্জের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মালেক বলেন, আমাদের বাজেট নিয়ে ভাবার সময় নেই, এটা বড়লোকদের বিষয়। আমাদেরর কাছে বেঁচে থাকাই এখন বড় কথা।
বাড্ডার ট্রাক চালক আজিজ পাশা বলেন, পরিবার নিয়ে বাসাভাড়া দিয়ে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। এরমধ্যে যদি কোনো জিনিসের দাম বাড়ে তাহলে তো সমস্যা হয়ে যাবে।
এবার করোনা পরিস্থিতিতে দেশের স্বাস্থ্যসেবায় চ্যালেঞ্জ বেড়েছে। এজন্য অনেকেই এবার বাজেটে সর্বোচ্চ বরাদ্দ যাতে স্বাস্থ্যখাতে দেয়া হয় সেই দাবি তুলেছেন।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরে আশফাক আলম জানান , করোনাকালের বাজেটে অবশ্যই স্বাস্থ্যখাতে আরো বরাদ্দ বাড়াতে হবে। পাশাপাশি অনলাইন স্বাস্থ্যসেবা বা টেলিমেডিসিনের ওপর জোর দেয়া প্রয়োজন।
ঢাকায় বসবাসকারী কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাছুদুর রহমান বলেন, করোনাকালে গ্রামীণ অর্থনীতি উজ্জীবিত করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে স্বস্তি দেয় এমন বাজেট চাই। পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা বেস্টনির পরিমাণ ও সংখ্যা বাড়ানো দরকার, কারণ শহর ও গ্রামে বহুলোক কর্মহীন হয়ে পড়েছে। সর্বোপরি করোনাকালে একটি মানবিক ও জনবান্ধব বাজেট চাই।
পুরোনো ঢাকার একজন শিক্ষক বলেন, বাজেট নিয়ে আমার তেমন আগ্রহ নেই। তারপরেও দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়া-কমার বিষয়ে তো জানতে ইচ্ছা করে। যারা এই বাজেটের সঙ্গে জড়িত তারা নিশ্চয় দেশ-সমাজ-জনগনের কথা ভেবে বাজেট পেশ করবেন। কম খরচে যাতে সন্তানরা ভালো মানের শিক্ষা পায়। এছাড়া লাগামহীন ভাবে বাড়ি ভাড়া বাড়ছে। এদিকে নজর দেয়া উচিত।
অনেক ব্যবসায়ী বলেন করোনা পরিস্থিতিতে আমাদের অর্থনীতির অনেক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়িরা বিশেষ করে যারা ফ্যাশন ও পোশাক সর্ম্পকিত, সেই মার্চের শুরু থেকেই তাদের ব্যবসা বন্ধ। এই মুহুর্তে এই ক্ষুদ্রব্যবসায়ীদের দোকান ভাড়া, কর্মচারীদের বেতন, বিভিন্ন বকেয়া বিল পরিশোধ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বাজেটে যদি এই ধরনের ব্যবসায়ীদের প্রতি বিশেষ নজর না দেয়া হয় তাহলে তাদের বাঁচার উপায় থাকবে না।
এদিকে বিশেষজ্ঞরা এবছরের বাজেট নিয়ে তাদের বিভিন্ন মতামত দিয়েছেন। তাদের কথায় এবারের বাজেট হতে হবে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের বাজেট। যেসব খাতে অনাকাঙ্খিত ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে নিতে সরকারকে নজর দিতে হবে।
তাদের স্পষ্ট ভাষ্য করোনা মহামারির এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গতানুগতিক বাজেট ফলপ্রসু হবে না। বিকল্প পথ দেখতে হবে।
সান নিউজ/সালি