নিজস্ব প্রতিবেদক:
করোনার সংকটময় পরিস্থিতিতে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে খুব বাজে ভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দেশের কৃষকেরা। সরকারি হিসাবে এর ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬০০ কোটি টাকা।
এর আগে কৃষক তরমুজ আর কাঁঠালে করোনার ক্ষতি গুনেছে। এরপর ঘূর্ণিঝড় আসে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে।
কৃষি মন্ত্রণালয় এবারের অনুকূল আবহাওয়ায় ২২ লাখ ৩২ হাজার টন আমের ফলন আশা করেছিল। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার হিসাবে গত তিন বছরে বাংলাদেশ আম উৎপাদনে ভিয়েতনাম আর ফিলিপাইনকে ছাড়িয়ে অষ্টম থেকে ষষ্ঠ স্থানে উঠে এসেছে। কাঁঠালে রয়েছে দ্বিতীয় অবস্থানে।
এক দশক ধরে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি হারে ফল উৎপাদন বাড়ছে বাংলাদেশে। এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল সোয়া কোটি টন। আম, লিচু, কলা আর পেঁপের মৌসুমে বিভিন্ন এলাকার বাগানে প্রায় ৪০ লাখ টন ফল ছিল। আম্পানে অন্তত ৫ শতাংশ পুরো নষ্ট হয়ে গেছে।
বাজারজাত করা নিয়ে ফলচাষীরা এমনিতেই দুশ্চিন্তায় ছিলেন। এখন সাতক্ষীরা থেকে রাজশাহী পর্যন্ত ১২ জেলার ফলের বাগানই তছনছ হয়ে গেল। এক আমই নষ্ট হয়েছে ৩০০ কোটি টাকার।
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এই বিষয়ে বলেন, 'মন্ত্রণালয় আম্পানে ধান ও সবজির ক্ষতির পাশাপাশি ফলচাষীদের ক্ষয়ক্ষতিরও হিসাব করছে। তাদের সহযোগিতা করার পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে। এ ছাড়া সরকার অনলাইনে ফল বিপণনের সুবিধা করে দিয়েছে। ট্রেনে বিশেষ বগি লাগিয়ে অল্প ভাড়ায় আম–লিচু পরিবহনের ব্যবস্থা করেছে।'
সাতক্ষীরা ও যশোর জেলার চাষিদের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ আম ও লিচু ঝরে পড়েছে। রাজশাহী, নওগাঁ, বগুড়া ও চাঁপাইনবাবগঞ্জেও ক্ষতি কম হয়নি। উত্তরাঞ্চলে কলার, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে পেঁপের অনেক ক্ষতি হয়েছে।
তবে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে রাজশাহীর আমচাষীদের। তাদের প্রায় ১২০ কোটি টাকার আম নষ্ট হয়েছে। তারা ঝরে পড়া কাঁচা ও আধা পাকা আম ২ থেকে ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন। পড়ে ফেটে যাওয়ায় অনেক আম বিক্রিই করা যায়নি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যান উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক কবির হোসেন জানান, ‘ঝরা আমের বড় অংশ আমরা দেশের বিভিন্ন ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ কোম্পানি ও ব্যক্তির কাছে বিক্রির ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আর ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের তালিকা করছি।’ তিনি বলেন, সরকার কোনো সহায়তা বা প্রণোদনা দিলে চাষিরা অবশ্যই তা পাবেন।
সান নিউজ/ আরএইচ