সান নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশে গত কয়েক বছর ঘরে বসে অনলাইনে পণ্য কেনাকাটা বা ই-কমার্স ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ ওঠার পর গোটা খাতটি এখন ভুগছে আস্থার সংকটে।
শুরুতে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদের আকর্ষণ করতে 'অস্বাভাবিক' সব অফার দেয়। পরে দেখা যায় যে অগ্রিম অর্থ নিলেও প্রতিশ্রুতি মোতাবেক তারা সময়মত পণ্য সরবরাহ করছে না।
ভোক্তাদের অভিযোগ, পণ্যের টাকা পরিশোধ করা সত্ত্বেও নির্ধারিত সময়ে তারা পণ্য পাচ্ছেন না। সম্ভবনাময় এ খাতটিতে গ্রাহক প্রতারণা চরম মাত্রায় পৌঁছেছে। ফলে বাংলাদেশে ই-কমার্সের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বিশেষ করে ইভ্যালির রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে গ্রেফতারের পর ই-কমার্সের এ খাতটি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
জানা যায়, ই-কমার্সে প্রতারণা ঠেকাতে নতুন পরিকল্পনা শুরু করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। নতুন করে যারা ই-কমার্সের সঙ্গে যুক্ত হতে চান এবং যারা ই-কমার্সের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তাদেরকে নিবন্ধনের আওতায় আনা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের কোনো নিবন্ধন না থাকায়, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা যাচ্ছে না। ফলে দিন দিন সমস্যা বাড়ছে।
ই-কমার্সের প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে আসার পর নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হবে ইউনিক বিজনেস আইডেন্টিটিফিকেশন নম্বর। গ্রাহকরা এ নম্বর যাচাই করে সঠিক প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্য কিনতে পারবেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ডব্লিউটিও সেল মহাপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, ইউনিক বিজনেস আইডেন্টিটিফিকেশন নম্বর নিয়ে ই-কমার্সের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য নিবন্ধনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ নম্বরের মাধ্যমেই গ্রাহকরা ওই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতে পারবেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সচিব (কেন্দ্রীয় ই-কমার্স সেল) মুহাম্মদ সাঈদ আলী বলেন, নিবন্ধন ও আইডি নম্বর প্রদানের অংশ হিসেবে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের কাজ শুরু হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের সঙ্গে কাজটি সম্পাদন করা হচ্ছে। দ্রুতই আমরা সেবাটি নিয়ে আসতে পারব।
তিনি আরও বলেন, যারা ই-কমার্সের ব্যবসা করবে, তাদেরকে নিবন্ধনের জন্য বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে হবে। মন্ত্রণালয় তাদের আবেদন প্রক্রিয়া যাচাই-বাছাই করে নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ করবে। নিবন্ধনের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেওয়া হবে ইউনিক বিজনেস আইডেন্টিটিফিকেশন নম্বর। এই নম্বর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান তাদের ওয়েবসাইটসহ সবখানে প্রকাশ করবে।
বিষয়টিকে সাধুবাদ জানিয়ে ই-ক্যাবের সহ-সভাপতি ও ই-কমার্স উদ্যোক্তা মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন বলেন, এটি খুবই ভালো উদ্যোগ। যাদের ট্রেড লাইসেন্স নেই তারাও নিবন্ধন করার সুযোগ পাবেন। ফলে নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় উদ্যোক্তাদের জন্য তেমন কোনো সমস্যা হবে না। তবে সত্যতা যাচাইয়ে সব ধরনের তথ্য নেওয়া হবে।
সান নিউজ/এনএএম