নিজস্ব প্রতিবেদক: গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে প্রিয়শপ ডট কমের (priyoshop.com) বিরুদ্ধে ছায়া তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি। প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক লেনদেন, ডেলিভারি প্রক্রিয়া ও টাকা পাচারের কোনো তথ্য পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেবে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ইভ্যালির সিইও মোহাম্মদ রাসেল ও তার স্ত্রী চেয়ারম্যান শামীমাকে গ্রেফতারের পর বিভিন্ন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগের হিড়িক পড়ে বিভিন্ন দফতরে।
ই-অরেঞ্জ, ইভ্যালির ধামাকার পর এবার পণ্য না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এই ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশনের বিরুদ্ধে। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর ও ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) দফতরে জমা পড়েছে অসংখ্য অভিযোগ। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম নিয়ে ছায়া তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
একাধিক গ্রাহকদের অভিযোগ, টাকা ফেরত চাইলে জবাবে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা তাদের জানান, নগদ টাকা নেই, ব্যাংকেও টাকা জমা নেই। তাই টাকা ফেরত দিতে সময় লাগবে।
কিন্তু প্রিয়শপের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, প্রতিশ্রুত সময়ে পণ্য বা টাকা ফেরত না দেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। অর্ডার করে পণ্য না পেলে টাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে রিফান্ড হয়ে যায়।
টাকা ফেরত চাইলে জবাবে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা তাদের জানান, নগদ টাকা নেই, ব্যাংকেও টাকা জমা নেই। তাই টাকা ফেরত দিতে সময় লাগবে
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর জানায়, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ জমা পড়ছে। প্রিয়শপের বিরুদ্ধেও বেশ কয়েকজন ভোক্তা অভিযোগ দিয়েছেন। অধিকাংশ অভিযোগই প্রতিশ্রুত সময়ে পণ্য না দেওয়া এবং পণ্যের জন্য পরিশোধ করা টাকা ফেরত না দেওয়া। অধিদফতর সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অভিযোগগুলো নিষ্পত্তির চেষ্টা করছে।
ভোক্তা অধিকারে প্রিয়শপের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন এক গ্রাহক। তিনি সেখানে উল্লেখ করেন, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আমি একটি মোবাইল ফোন অর্ডার দিই। মাসখানেকের মধ্যে পণ্য দেওয়ার কথা বললেও সাত মাসে তা পাইনি। তারা দেব-দিচ্ছি বলে আমাকে ঘোরাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির কাস্টমার এক্সপেরিয়েন্স বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মাহবুব আলম আমাকে বেশ কয়েকবার পণ্য দেওয়ার আশ্বাস দিলেও তা দেননি। মূল টাকা ফেরত চাইলেও তারা ফেরত দেয়নি। বাধ্য হয়ে আর্থিক ক্ষতিপূরণের আশায় মামলাটি করেছি।
আরো এক ভুক্তভোগী জানান, প্রিয়শপ থেকে তিনি ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর একটি ভাউচার কেনেন, যা এক মাস পর অ্যাক্টিভ হওয়ার কথা ছিল। তবে মাসখানেক পরও প্রতিষ্ঠানটি তার কার্ড চালু করেনি। বিষয়টি নিয়ে তিনি কমপক্ষে ৫০-৬০ বার ফোন করেন। অবশেষে জুলাই মাসে কার্ড চালু করে তার। সেই কার্ডের সঙ্গে তিনি আরও এক হাজার ৩০০ টাকা দিয়ে কয়েকটি পণ্য অর্ডার করেন। প্রতিষ্ঠানটি তাকে ৬০০ টাকার পণ্য দেয়। বাকি পণ্য দেয়নি। বারবার কল করলেও প্রিয়শপ বলেছে, লকডাউনের পর দেবে। কিন্তু এখনও দেয়নি।
সিআইডির অরগানাইজড ক্রাইম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির আরও বলেন, ‘আমরা কিছু ই-কমার্স সাইটের বিষয়ে ছায়া তদন্ত করছি। এছাড়া গ্রাহকরা আমাদের কাছে যেসব অভিযোগ নিয়ে আসছেন, সেগুলো নিয়েও তদন্ত হচ্ছে। তদন্ত শেষ হলে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।’
সান নিউজ/এনএএম