সান নিউজ ডেস্ক
অবশেষে বাণিজ্য যুদ্ধ বন্ধে সমঝোতার পথে হাটতে শুরু করেছে চীন-যুক্তরাষ্ট্র। দীর্ঘ আলোচনা এবং অনিশ্চয়তার পর প্রথম পর্যায়ের বাণিজ্য চুক্তিতে সম্মত হয়েছে দেশ দুটি। সব কিছু ঠিক থাকলে জানুয়ারিতেই প্রথম পর্যায়ের বাণিজ্য চুক্তি সই হবে। এরপর আলোচনা শুরু হবে চুক্তির দ্বিতীয় পর্যায় নিয়ে। চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের অবসান দুই দেশই।
১৫ই ডেসেম্বর প্রথম পর্যায়ের বাণিজ্য চুক্তিতে সম্মতির পর মার্কিন পণ্যের ওপর আরোপ করা বাড়তি শুল্ক আর না বসানোর ঘোষনা দিয়েছে চীন। প্রত্যাহার করা হবে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্য গম ও ভুট্টা, যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি গাড়ি এবং গাড়ির যন্ত্রাংশ এমন সব পণ্যের ওপর আরোপ করা বাড়তি শুল্ক। অন্যদিকে চীনা পণ্যের ওপর থেকে থেকে বাড়তি শুল্ক কমানোর কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রও।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, চীনের সঙ্গে একটি প্রথম পর্যায়ের বাণিজ্য চুক্তিতে সম্মত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। চীনা পণ্যের ওপর যে শুল্ক বসানোর কথা ছিলো, চুক্তির ফলে সেই শুল্ক বসাবে না তারা। তবে আগে থেকে চীনা পণ্যের ওপরে যে শুল্ক বসানো আছে, তা কমানো হবে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্প আরও বলেন, চীনের সঙ্গে বাণজ্য চুক্তি আমরা অনুমোদন করেছি। আমার কাছে এটা মোটেও জটিল নয়। এটা একটা বিশ্বয়কর চুক্তি। ২৫০ বিলিয়ন ডলার মূল্যেরে পণ্যে শুল্কহার আগের মতোই ২৫ ভাগ বহাল থাকবে। আমরা ভবিষ্যতে শুল্ক প্রত্যাহার কিংবা কমানোর বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাবো। চীন এখন শুল্ক প্রত্যাহার চায়। বিনিময়ে তাদেরও ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে।
মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, চুক্তির আওতায় প্রযুক্তি স্থানান্তর, মেধাস্বত্ব, কৃষি, আর্থিক সেবা, মুদ্রা, আন্তর্জাতিক মুদ্রা বিনিময় এমন সব বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, দ্বিপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য বিষয়ে দু-পক্ষেরই এগিয়ে আসার বিষয়টি ইতিবাচক। চীন মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোকে যেমন ছাড় দিচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রকেও চীনের প্রতি একই মনোভাব দেখাতে হবে। চীন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্য কিনতে এগিয়ে এসেছে, এটা একটা বড় পরিবর্তন। ট্রাম্পকে চাপে ফেলার জন্য তারা কৃষিপণ্য কেনা বন্ধ রেখেছিল। বাণিজ্য যুদ্ধ ট্রাম্পকে নয়, কৃষকদের বিপাকে ফেলেছিলো। আশা করছি এধরনের সংকটের সমাধান হবে।
যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে সুফল পাচ্ছে বাংলাদেশের মতো ছোট অর্থনীতরি দেশ। অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের কারণে রপ্তানি মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে দুই দেশেরেই। এর সুযোগ নিচ্ছে তৃতীয় কোন দেশ। চীনের পণ্য ত্যাগ করে মার্কিন ক্রেতারা যাচ্ছে অন্য কোন দেশে। একই ভাবে চীনও নতুন বাজার খুঁজছে ।
মার্কিন সেন্সাস ব্যুরোর তথ্য বলছে, যুক্তরাষ্ট-চীন যুদ্ধের ফলেলাভবান দেশরে তালিকায় সবার উপরে ভিয়েতনাম। এর পর রয়েছে যথাক্রমে তাইওয়ান, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া। এসব দেশ থেকে আমদানি বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য যুদ্ধ অব্যাহত থাকলে লাভবান হবে বাংলাদেশসহ তৃতীয় বিশ্বর দেশগুলো, মনে করছেন বিশ্লেষকরা।