জাহিদ রাকিব
চলমান কঠোর লকডাউনে শুধুমাত্র নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকানপাট নির্ধারিত সময় পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশনা রয়েছে। এর বাইরে দোকান ও শপিংমল পুরোপুরি বন্ধ থাকার কথা। কিন্তু রাজধানী ঢাকার প্রতিটি এলাকার চিত্র ভিন্ন। লকডাউনের মধ্যেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে এখানকার গার্মেন্টস পণ্য ও গাড়ির যন্ত্রাংশের দোকানে বিক্রি চলছে।
অবশ্য খালি চোখে দেখলে বোঝার উপায় নেই যে, সবাই হাফ শার্টার দোকানে বেচাকেনা করছেন। আবার অনেকের দোকানের শাটার থাকছে বন্ধ। তবে দোকানি ও কর্মচারীরা সবাই সামনে ঘোরাফেরা করেন। ফাঁকে কোনো গ্রাহক এলে দ্রুত শার্টার তুলে প্রয়োজনীয় মালামাল দিয়ে আবার বন্ধ করে দেন।
বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) রাজধানীর রামপুরা, বনশ্রী, বাড্ডা, খিলগাঁও এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, লকডাউনের বিধিনিষেধে ও পাড়া-মহল্লায় হাফ শার্টারে দোকানে বেচাকেনা করছে। আবার অলিগলিতে তরুণ-যুবকদের আড্ডা দিতে দেখা গেছে। অনেক গলিতে চায়ের টং দোকান খোলা রাখা হয়েছে। নগরীর সড়কে যানবাহনের চাপও প্রত্যক্ষ করা গেছে। ব্যক্তিগত প্রাইভেটকারের সাথে সিএনজি অটোরিকশার দাপট বাড়ছে সড়কে। একইসাথে রিকশা চলছে অবাধে।
রামপুরা বাজারে দোকান খোলা নিয়ে কথা হয় ক্রোকারিজ ব্যবসায়ী মনির হোসেনের সাথে তিনি বলেন, দোকানের মালিক আমাদের ভাড়া মওকুফ করে নাই, কিন্তু কয়দিন পরপর লকডাউনে আমাদের ব্যবসার অনেক ক্ষতি হয়েছে। এইভাবে কি ব্যবসা করা যায়।
বাড্ডা এলাকায় কথা হয় কাপড় ব্যবসায়ী শরিফ হোসেনের সাথে তিনি বলেন, এবারের লকডাউনে আমরা পুরো রাস্তায় বসে গেছি। আমরা অনেক টাকা লোনে পড়ে গেছি, গতকালও দোকান খুলছি কিন্তু কোন বেচাকেনা করতে পারি নাই। একটু পরপর পুলিশ এসে বন্ধ করে দিচ্ছে।
সিপাহিবাগ এলাকায় একজন বলেন, জীবন বাঁচাতে তো হবে। সংসার আছে, দোকানের কর্মচারীর বেতন, দোকান ভাড়া এসব কীভাবে পরিশোধ করবো? এইজন্যই নির্দিষ্ট কিছু কাস্টমার আছে তারা এলে কিছু মালামাল বিক্রি করতেছি।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এমন লুকোচুরি করে বিক্রি করলেও মাঝে মধ্যে জরিমানার মুখে পড়তে হচ্ছে কাউকে কাউকে।
বনশ্রী এলাকায় দায়িত্বরত টহল পুলিশের এএসআই কামরুজ্জামান বলেন, লকডাউন বাস্তবায়নে তারা মাঠে কাজ করছেন। যারা অযথা বাইরে বের হচ্ছেন, তাদেরকে কোনো কোনো ক্ষেত্রে জরিমানা করা হচ্ছে। প্রতিদিন অপ্রয়োজনে বের হওয়া যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হচ্ছে, যানবাহন আটক করা হচ্ছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় সরকার গত শুক্রবার (২৩ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে ৫ আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। যা আবার একদফা বাড়িয়ে ১০ আগস্ট পর্যন্ত করা হয়েছে।
সান নিউজ/এফএআর