নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর বাজারগুলোতে ঈদের আগে বেড়ে যায় মাছের। তারপর থেকে অপরিবর্তিত রয়েছে, বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। তবে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বেশকিছু সবজি ক্রেতারা ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে কিনতে পারছেন।
শুক্রবার (৩০ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজি ও মাছের বাজার প্রায় স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। প্রতিটি বাজারেই ব্যবসায়ীর সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি পণ্যের সরবরাহ বেড়েছে।
মধ্য বাড্ডায় গিয়ে দেখা যায়, মাছ ও সবজির সব দোকানই খুলেছেন ব্যবসায়ীরা। গত সপ্তাহে বাজারটির বেশিরভাগ দোকান বন্ধ ছিল। রামপুরা, মালিবাগ, হাজীপাড়ার বাজারগুলোতেও গত সপ্তাহে বেশিরভাগ দোকান বন্ধ ছিল, তবে এখন সব দোকান খুলে গেছে।
ব্যবসায়ীদের স্বাভাবিক সময়ের মতো দোকান খোলার বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী মো. রুবেল বলেন, ঈদের পর বেশকিছু দিন অধিকাংশ দোকান বন্ধ ছিল। তবে দুই-তিনদিন ধরে সবাই আছে। সবারই সংসার আছে, বসে থাকলে চলবে না। তাই ঈদ হোক আর লকডাউন হোক পেট চালাতে গেলে আমাদের দোকান খুলতেই হবে।
তিনি বলেন, সবাই দোকান খোলায় এখন বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে। তবে সবজির চাহিদা এখনও স্বাভাবিক হয়নি। ঈদের মাংস এখনও অনেকের ঘরে রয়েছে। তাই সবজির চাহিদা এখনও কিছুটা কম। আমাদের ধারণা আগামী সপ্তাহ থেকে সবজির চাহিদা বাড়বে। সেই সঙ্গে দামও কিছুটা বাড়বে।
ব্যবসায়ীদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, আগের মতো এখনও সব থেকে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে গাঁজর ও টমেটো। মানভেদে গাঁজর বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১১০ টাকা কেজি। আর পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে।
এছাড়া ঝিঙে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি, করলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পটল ২০ থেকে ৩০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ২৫ থেকে ৩০ টাকা এবং কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে।
আগের মতো ঢেঁড়স পাওয়া যাচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে। বরবটি পাওয়া যাচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। এক পোয়া (২৫০ গ্রাম) কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা কেজি।
মাছবাজারে গিয়ে দেখা যায়, স্বাভাবিক সময়ের মতো সব ধরনের মাছ পাওয়া যাচ্ছে। রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩৮০ টাকা কেজি, মৃগেল ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা আর পাবদা বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজিতে।
তবে গত সপ্তাহে অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়া চিংড়ি মাছের দাম কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া চিংড়ি এখন ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। বাজারে সব থেকে কম দামে বিক্রি হচ্ছে পাঙাশ মাছ। ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা কেজির মধ্যে পাঙাশ মাছ কিনতে পারছেন ক্রেতারা।
মাছের দামের বিষয়ে রামপুরার ব্যবসায়ী মিজানুর বলেন, বাজারে মাছের সরবরাহ বাড়লেও ক্রেতা খুব একটা বাড়েনি। কারণ এখনও অনেকে গ্রামের বাড়িতে রয়েছেন। তাছাড়া কোরবানির মাংসও আছে অনেকের বাসায়। তবে লকডাউন খুললে ক্রেতার সংখ্যা বেড়ে যাবে। তখন মাছের দাম আরও একটু বাড়তে পারে।
এদিকে গত সপ্তাহে গরু ও খাসির মাংসের দোকান বন্ধ থাকলেও এখন প্রায় সবগুলো খুলে গেছে। গরুর মাংস আগের মতোই ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংসে বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯৫০ টাকা কেজিতে।
এছাড়া আগের মতো ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজিতে, লেয়ার মুরগি ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা। আর সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৪০ টাকা কেজিতে।
মালিবাগের মুরগির ব্যবসায়ী বাবু বলেন, আমি ঈদের পরের দিন থেকেই দোকান খুলছি। তবে গত বুধবার পর্যন্ত তেমন ক্রেতা ছিল না। কাল থেকে ক্রেতা একটু বাড়ছে। তবে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বিক্রি এখনও অনেক কম।
সান নিউজ/এমএইচ