নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়েছে। তবে মূল্য সূচক কিছুটা বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। এর মাধ্যমে টানা দুই কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকল বাজার।
গতদিনের মতো আজও শেয়ারবাজার ঊর্ধ্বমুখী রাখতে বড় ভূমিকা রেখেছে বস্ত্র খাত। মূলত বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলোর কল্যাণে পতনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে শেয়ারবাজার। অপরদিকে গতকাল বস্ত্রের সঙ্গে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখানো বীমা খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান আজ পতনের তালিকায় নাম লিখিয়েছে।
এদিন বস্ত্র খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার প্রবণতা লেনদেনের শুরু থেকেই দেখা যায়। বস্ত্র কোম্পানিগুলোর পাশাপাশি লেনদেনের শুরুর দিকে অন্যান্য খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ে। এতে প্রথম তিন মিনিটের লেনদেনেই ডিএসইর প্রধান সূচক ২১ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
তবে লেনদেনের সময় ১০ মিনিট না গড়াতেই একের পর এক প্রতিষ্ঠানের দরতপন হতে থাকে। এতে একপর্যায়ে সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। অবশ্য এই পতনের মধ্যেও দাম বাড়ার ধারা ধরে রাখে বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলো। এতে দিনের লেনদেন শেষে তালিকাভুক্ত ৫৮টি বস্ত্র কোম্পানির মধ্যে ৪৭টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭টির এবং ৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
দাম বাড়ার তালিকায় বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলোর দাপটের মধ্যে ধস নামে বীমা খাতে। এই খাতের তালিকাভুক্ত ৫১টি কোম্পানির মধ্যে ১০টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪১টির। বীমা খাতের এই ধসের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে অন্য খাতের ওপরও।
ফলে দিনের লেনদেন শেষে সব খাত মিলে ডিএসইতে ১৫৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬৭টির। আর ৪৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এরপরও ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৪২৫ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ৪ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৩২৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক ৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪০১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সবকটি মূল্য সূচকের উত্থানের সঙ্গে ডিএসইতে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৫২১ কোটি ৩১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১ হাজার ৩৬০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ১৬০ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ৬০ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা জিপিএইচ ইস্পাতের ৫১ কোটি ৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৩৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সাইফ পাওয়ারটেক।
এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, অ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যাল, ফর কেমিক্যাল, ফু-ওয়াং সিরামিক, ম্যাকসন স্পিনিং, রহিমা ফুড এবং আমান ফিড।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ৩১৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৪১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৮টির এবং ৩৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সান নিউজ/এমএইচ