জাহিদ রাকিব
টানা তিন বছর বিপর্যয়ের পর এবার চামড়ার দাম কিছুটা বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। পশু কোরবানি দেয়ার পর থেকেই ফড়িয়ারা কাঁচা চামড়া সংগ্রহ শুরু করেছেন।
ট্যানারি মালিক ও আড়তদাররা গতবারের চেয়ে একটু বেশি দামে চামড়া কিনবেন। তবে ফড়িয়া বা মৌসুমী ব্যবসায়ীদের চামড়া কেনার সময় কৌশলী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনে জানিয়েছেন , গত তিন মাস ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দাম একটু বাড়তি। এই মধ্যে ইউরোপসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে চামড়ার চাহিদা বাড়ছে। ফলে গতবারের চেয়ে এবার চামড়ার দাম বাড়তে পারে। তবে সরকারের নির্ধারণ করে দেয়া দামের চেয়ে বেশি দামে মৌসুমী ব্যবসায়ীদের চামড়া কিনতে বারণ করেছেন তিনি।
তারা বলেন, মৌসুমী ব্যবসায়ীরা যদি লোকসান এড়াতে চান তাহলে চামড়া আড়তে অথবা ট্যানারিতে আজ রাত দশটা থেকে এগারটার মধ্যে পৌঁছাতে হবে। রাত ১১টার বেশি হলে লোকসানে পড়বেন তারা।
তিনি উল্লেখ করেন, মৌসুমী ব্যবসায়ীরা যেন সরকারের বেঁধে দেয়া দামের চেয়ে বেশি দামে চামড়া না কেনেন, পাশাপাশি তারা যেন রাত ১১টার আগেই চামড়া বিক্রি করে দেন।
এদিকে তথ্য বলছে, চার বছর পর সদ্য সমাপ্ত অর্থবছর প্রবৃদ্ধিতে ফিরেছে চামড়াজাত পণ্যের রফতানি। বাংলাদেশে করোনার প্রভাব থাকলেও এর প্রধান বাজার ইউরোপের দেশগুলোতে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরতে শুরু করেছে। এ কারণে রফতানি আদেশও বেড়েছে।
এ বছর রাজধানীর জন্য লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ৪০ থেকে ৪৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৩৩ থেকে ৩৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া প্রতি বর্গফুট খাসির চামড়া ১৫ থেকে ১৭ টাকা, বকরির চামড়া ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, করোনাকালের আগের বছর ২০১৯ সালে দেশে কোরবানি পশুর চামড়া নিয়ে এক ধরণের হযবরল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। দাম না পেয়ে ১০-১৫ শতাংশ গরুর চামড়া সড়কে ফেলে এবং মাটিতে পুঁতে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। আবার সময়মত লবণ না দেওয়া, বৃষ্টি ও গরমের কারণেও ২০ শতাংশ গরুর চামড়া নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। নষ্ট হওয়া চামড়ার আর্থিক মূল্য ছিল প্রায় আড়াইশ কোটি টাকা। ওই বছর ঢাকায় লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪৫-৫০ টাকা। অথচ ঈদের দিন বিকেলে ঢাকায় ৩০০ থেকে ৮০০ টাকায় গরুর চামড়া বিক্রি হয়। আবার পরদিন পুরান ঢাকার পোস্তার চামড়ার আড়তে বিক্রি হয় ১৫০-২০০ টাকায়। ঢাকার বাইরের চিত্র ছিল আরও ভয়াবহ।
সান নিউজ/এফএআর