নিজস্ব প্রতিবেদক : কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘তামাকের সঙ্গে কৃষি খাতের কোনো সখ্য নেই। কৃষি মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মসূচি নেই, কোনো প্রণোদনাও নেই। এমনকি প্রতিটি ফসলের গবেষণা হলেও আমরা তামাকের কোনো গবেষণায়ও নেই। আমরা কোথাও তামাকের কথা বলি না। আমাদের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কর্মসূচি তামাকের বদলে অন্য ফসল করতে উৎসাহিত করার জন্য। আমরা তামাকের এলাকায় ভুট্টা চাষ করার কথা বলছি। এখন ভুট্টা বেস্ট এনিমেল ফিড।’
সোমবার (১২ জুলাই) তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণ ও খাদ্য উৎপাদনে করণীয় শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘সরকার ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকের উৎপাদন শূন্যের কোটায় আনার ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু সেটা কঠিন। সেটা ব্যস্তবায়ন করতে হলে সুনির্দিষ্ট টার্গেট নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। তামাকের বিকল্প ফসলের বাজার নেই। অনেক ফসলের দাম পায় না কৃষক। ফলে আবারও তামাকে ঝোঁকে। সেজন্য লাভজনক বিকল্প ফসলের ব্যবস্থা করতে হবে। যদিও সার্বিক কৃষি জটিলতার মধ্যে রয়েছে। মন্ত্রী হিসেবে সব সমাধান করতে পারবো বলে মনে হয় না। এজন্য দীর্ঘমেয়াদি সুনির্দিষ্ট টার্গেট নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। তাহলে এটা খুবই সম্ভব।’
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমাদের ওপেন মার্কেট ইকোনমি। পণ্য সরকারের কিনে নেয়া দায়িত্ব নয়, বিক্রিরও দায়িত্ব নেই। আমরা বাজার সৃষ্টি করছি। উৎপাদন খরচ কমাচ্ছি। সারের দাম পৃথিবীর সবচেয়ে কম। সেই সার তামাক চাষেও ব্যবহার হচ্ছে। আমরা তো আর নিষিদ্ধ করতে পারবো না।’
তিনি বলেন, ‘এসব সমাধানে সুনির্দিষ্ট টার্গেট নিলে ২০৪০ সালে যেতে হবে না। এখন এক লাখ হেক্টরে তামাক হচ্ছে। এতে আট লাখ টন ভুট্টা হবে। কিন্তু তার জন্য ব্যবস্থা করতে হবে। সেই ভুট্টার দাম নিশ্চিত করতে হবে। জাতীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।’
এতে অন্য বক্তারা দেশের তামাক কোম্পানিগুলোর প্রভাব তামাকবিরোধী সংগঠনগুলোর থেকেও অনেক বেশি বলে দাবি করেন। এজন্য দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে কার্যত সুফল মিলছে না বলে জানান তারা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং জাতীয় তামাকবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, কৃষি উন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হোসেন আলী খোন্দকার, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) বাংলাদেশের লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মোস্তাফিজুর রহমান, ভাইটাল স্ট্রাটেজিস বাংলাদেশের হেড অব প্রোগ্রামস মো. শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
সাননিউজ/এমএইচ