নিজস্ব প্রতিবেদক: শত সুযোগ দেয়ার পরও কালো টাকার অঙ্ক কমছে না। ফলে বাধ্য হয়েই সরকার কালো টাকা সাদা করার অনুমতি দিয়ে রেখেছে। যদিও অর্থনীতিবিদরা এই প্রক্রিয়া বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন আসছেন। ১২ হাজার করদাতা গত ২০২০-২০২১ অর্থবছরে প্রায় ২০ হাজার ৬০০ কোটি অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালো টাকা বৈধ বা সাদা করেছেন। দেশের ইতিহাসে এক বছরে এত কালো টাকা আগে কখনও সাদা করা হয়নি।
সব মিলিয়ে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এই খাতে রাজস্ব পেয়েছে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। বুধবার (৭ জুলাই) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) জনসংযোগ দফতর এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
কালো টাকা সাদা করার তালিকায় আছেন ডাক্তার, সরকারি চাকরিজীবী, তৈরিপোশাক রফতানিকারক, ব্যাংকের স্পন্সর ডিরেক্টর, সোনা ব্যবসায়ীসহ আরও অনেকে।
তাদের মধ্যে ৬০ শতাংশের বেশি ব্যাংকে রাখা বিভিন্ন আমানত, এফডিআর, সঞ্চয়পত্র বা নগদ টাকার ওপর ১০ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থের ঘোষণা দিয়েছেন।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে শেয়ারবাজার, নগদ টাকা কিংবা জমি-ফ্ল্যাট কিনে সব মিলিয়ে ১১ হাজার ৮৫৯ জন কালো টাকা সাদা করেছেন। যারা প্রায় ২০ হাজার ৬০০ কোটি অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করেছেন। এর মধ্যে শুধু জুন মাসেই এক হাজার ৪৫৫ জন ব্যক্তি ৬১৯ কোটি কালো টাকা সাদা করেছেন।
কালো টাকা বিনিয়োগকারীর মধ্যে ৭ হাজার ৫৫ জন ব্যাংকে রাখা বিভিন্ন আমানত, এফডিআর, সঞ্চয়পত্র বা নগদ টাকার ওপর ১০ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা বৈধ করেছেন। তারা এক হাজার ৬৮৩ কোটি টাকার কর সরকারের কোষাগারে জমা দিয়ে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা আইনগতভাবে বৈধ করেছেন।
তবে দেশের পুঁজিবাজারে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ আসেনি কালো টাকা থেকে। বছর শেষে এই খাতে মাত্র ২৪৬ জন বিনিয়োগকারী ৪০০ কোটি টাকা অর্থ বৈধ বা সাদা করেছেন। অন্যদিকে ৪ হাজার ৫১৮ ব্যক্তি জমি-ফ্ল্যাট কিনে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ নিয়েছেন।
এর আগে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের ২৫ মে পর্যন্ত ১০ হাজার ৪০৪ জন ব্যক্তি জমি, অ্যাপার্টমেন্ট, নগদ, ব্যাংক আমানত এবং অন্যান্য সম্পদকে বৈধ করেছেন। যার মাধ্যমে ১৪ হাজার ৪৫৯ কোটি কালো টাকা সাদা হয়েছে। কর হিসেবে এনবিআর পেয়েছে ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা।
চলতি বছরের বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের বিষয়ে সরাসরি কোনো বক্তব্য না থাকলেও ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ঘোষিত সুযোগ অব্যাহত রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে
এছাড়া দেশীয় বিনিয়োগ চাঙা করতে এর আগের অর্থবছরে অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে একই হারে কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয় সরকার। ২০২৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত এই সুযোগ বলবৎ আছে।
সান নিউজ/এফএআর