নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাধীনতার ৫০ বছরের মধ্যে এবারই সর্বোচ্চ বৈদেশিক আয় (রেমিটেন্স) এসেছে দেশে। প্রবাসীরা চলতি বছর ২ হাজার ৪শ ৭৭ কোটি ৭৭ লাখ বা ২৫ বিলিয়ন ডলার আয় পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এ কথা জানা যায়।
দেশে কার্যরত ব্যাংকগুলোর মধ্যে গত অর্থবছরে একক ব্যাংক হিসাবে সব চেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বেরসকারি ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডে। আর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে অগ্রণী ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের নগদ প্রণোদনা ও করোনায় বিদেশ ভ্রমণ নিয়ন্ত্রণের কারণে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত থেকে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স বেশি আসছে। পাশাপাশি মহামারিতে এক ধরনের অনিশ্চয়তার কারণে প্রবাসীরা জমানো টাকা দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সদ্যবিদায়ী অর্থবছরের শেষ মাস জুনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ১৯৪ কোটি ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। ফলে সদ্য সমাপ্ত পুরো অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আহরণের অংক দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ ডলার। (যা বাংলাদেশি মুদ্রায় দুই লাখ ১০ হাজার ৬১০ কোটি টাকার বেশি)।
২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবাসীরা সরকারি ৬টি ব্যাংকের মাধ্যমে ৬১০ কোটি ৬২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে।
বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের একটির মাধ্যমে এসেছে ৪১ কোটি ৩০ লাখ ডলার। বেসরকারি ৪০টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৮১৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার। আর বিদেশি ৯ ব্যাংকে এসেছে ১১ কোটি ৪৫ লাখ ডলার।
দেশে কার্যরত ব্যাংকগুলোর মধ্যে গত অর্থ বছরে একক ব্যাংক হিসাবে সব চেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বেরসকারি ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডে। ব্যাংকটির মাধ্যমে ৭৪৫ কোটি ৭৬ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যা মোট রেমিট্যান্সের প্রায় ২৭ শতাংশ।
এরপরই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৮২ কোটি ৩২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে। ২৪৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে তৃতীয় অবস্থানে থাকা ডাচ বাংলা ব্যাংক। সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১৫৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স।
এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল-এমপি, এফসিএ বলেন, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত রেমিটেন্সে ২ শতাংশ নগদ প্রনোদণায় প্রবাসী আয়ের এ ঊর্ধ্বমুখী ধারার জন্য রেমিটেন্স প্রেরণকারীদের প্রতি কৃজ্ঞতা।
তিনি বলেন, শুরুতে অনেকে সমালোচনা করে বলেছিলেন এটি টেকসই হবে না, কিন্তু সকল সমালোচনাকে পেছনে ফেলে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের তুলনায় ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেড়ে ২০২০-২০২১ অর্থবছর শেষে দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যার কারণে আমাদের রিজার্ভের পরিমাণ অতিক্রম করেছে প্রায় সাড়ে ৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। প্রবাসী আয়ের এ ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকার জন্য সরকারের প্রবাসী আয় পাঠানোর নিয়ামকানুন সহজ করে দেয়া, সময়োপযোগী ২ শতাংশ নগদ প্রণোদনাসহ বিভিন্ন সংস্কারমুখী পদক্ষেপের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে।
সাননিউজ/এফএআর