নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্যান্য দিনের মতোই রাজধানীর বাজারগুলোতে ক্রেতাদের চলাচল দেখা গেছে। বিক্রেতারাও আগের মতোই পাশাপাশি বসে পণ্য বিক্রি করছেন।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বৃহস্পতিবার থেকে সারা দেশে শুরু হয়েছে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন তথা শাটডাউন। এ সময়ে বন্ধ রাখা হয়েছে বেশির ভাগ সরকারি-বেসরকারি দপ্তর। সড়কে অপ্রয়োজনীয় চলাচল ও স্বাস্থ্যবিধি নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে রাজধানীর বাজারের চিত্রটা উল্টো।
স্বাভাবিক দিনের মতোই ক্রেতাদের চলাচল দেখা গেছে। বিক্রেতারাও আগের মতোই পাশাপাশি বসে পণ্য বিক্রি করছেন। শাটডাউনের প্রথম দিন রাজধানীর বেশ কিছু কাঁচাবাজার ঘুরে স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা দেখা যায়নি।
সকাল সাতটার পর গোড়ান বাগানবাড়ি বাজার, গোড়ান টেম্পো স্ট্যান্ড বাজার, গোড়ান বাজার, খিলগাঁও বাজার, বাসাবো বউবাজার, মালিবাগ কাঁচাবাজার, পশ্চিম রাজাবাজার ঘুরে দেখা যায়, পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা।
আটটা বা তারপরই ক্রেতাদের আনাগোনা বেশি হবে বলে জানান গোড়ান বাগানবাড়ি বাজারের বিক্রেতা রহমত উল্লাহ। প্রতিদিনই রাস্তার দুই পাশে বসে এই বাজার। আগে যেমনভাবে বিক্রেতারা সবজি, মাছ নিয়ে বসতেন, বৃহস্পতিবারও ঠিক তেমনভাবেই বসেছেন।
শাটডাউনের বিধিনিষেধে বলা হয়, কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে। সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠন, বাজার কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করবে।
বাজার উন্মুক্ত স্থানের কথা বলা হলেও ঠিকই আগের নির্ধারিত স্থানে খোলা হয়েছে গোড়ান বাজার, খিলগাঁও বাজার, মালিবাগ বাজার, পশ্চিম রাজাবাজার।
নিউ মার্কেটের প্রায় সব দোকান বন্ধ থাকলেও ভেতরে কাঁচাবাজার খোলা। ক্রেতা সমাগম কম। যারা আসছেন তারা স্বাস্থ্যবিধি মানলেও বিক্রেতাদের মধ্যে দেখা যায়নি সেটি।
হাতিরপুল বাজারের শাহজালাল স্টোরের স্বত্বাধিকারী শাহ পরান বলেন, ‘বাজার কর্তৃপক্ষ থেকে দোকান না খোলার বিষয়ে বলা হয়েছে। তবে যেহেতু খিলগাঁও বাজারের ভেতরে, তাই বাজারের প্রবেশপথ খোলা থাকবে। তবে কিছু প্রয়োজন হলে দেয়া যাবে।’
একই বাজারের সাইফুল জানান, স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে বাজার কর্তৃপক্ষ থেকে কিছু বলা হয়নি। শুধু বলেছে, দোকান খোলা যাবে না। গত কয়েক দিন রাত আটটার পর দোকান খোলার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা ছিল। তবে কিছু টাকা দিলে দোকান খোলা রাখা যেত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কাপ্তান বাজারের রাশিদুল বলেন, ‘এখানেই প্রতিদিন মাছ বিক্রি করি। খোলা জায়গায় বলা হলেও আমাদের এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।’
সকালে সাড়ে সাতটায় ক্রেতাদের উপস্থিতিও ছিল না বললেই চলে। গোড়ান বাগানবাড়ি বাজার রাস্তার দুই পাশে বসলেও সেখানে ক্রেতা ছিল খুবই সামান্য। যারা সকালে হাঁটেন তারাই এখানে বাজার করেন। আর বাজারে ক্রেতাসমাগম হয় আটটার পর।
আগের মতোই বসেছেন। কিন্তু সরকারের নির্দেশনায় এতট ঘনভাবে বসতে নিষেধ আছে জানানোর পর নাজমুল বলেন, ‘আগে যেভাবে বসতাম, এখনও সেভাবেই বসেছি। কীভাবে বসতে হবে, তা তো কেউ বলেনি।’
মুখে মাস্ক নেই কেন, বলতেই পকেট থেকে মাস্ক বের করে মুখে লাগালেন। বললেন, ‘আছে তো।’
এমন অবস্থা ছিল বেশির ভাগ বিক্রেতার। এ ছাড়া রাস্তার পাশে ভ্যানে যেসব সবজি বা মাছ বিক্রেতা দেখা গেছে, বেশির ভাগ বিক্রেতার মুখে মাস্ক ছিল না। এমনকি ভ্যানের সামনে যে কয়জন ক্রেতা ছিল, তাদের ক্ষেত্রেও পারস্পরিক দূরত্ব মানতে দেখা যায়নি।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বৃহস্পতিবার থেকে ৭ দিনের বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার, যা পরিচিতি পেয়েছে শাটডাউন হিসেবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বুধবার এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সান নিউজ/এমএম