নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘আমি তো একমাস ধরে মাছ, মুরগি বা একমাস ধরে সবজি খাবো না। এক সাথে দশ কেজি মুরগি বা মাংস কিনে ফ্রিজার করার কোন মানেই হয়না। তা ছাড়া কাচাঁবাজার তো আর বন্ধ থাকছে না। বাসা থেকেও যে একেবারে বেরই হতে পারবো না এমনও তো না। তাই দুই কিংবা তিন দিনের বাজার করছি’। এমনটাই বলছিলেন রাজধানীর হাতিরপুল কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা সোলতানা।
দেখা যায়, সোমবার (২৮ জুন) থেকে সরকার সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা করেছে। একদিন আগে বাজারে ক্রেতাদের উপচে পড়া দেখা গেলেও লকডাউনের প্রথমদিন সকালে রাজধানীর বাজারগুলোতে ক্রেতার তেমন একটা ভিড় দেখা যায়নি।
নিউ মার্কেট বাজারে মুদি পণ্যের মধ্যে চালের দাম বেড়েছে উল্লেখ করে এক বিক্রেতা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘চালের দাম বস্তায় ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেড়েছে। খুচরায় কেজিতে ২ টাকা বেড়েছে। আগে মিনিকেট বিক্রি করছি ৫৮ টাকায় এখন ৬০ টাকা। বিআর-২৮ চাল ছিল ৪৮ টাকা, এখন ৫০ টাকা। তেল তো আগে থেকেই ১৫৩ থেকে ১৫৫ টাকা লিটার।’
মুরগি বিক্রেতা জমির বলেন, ‘গতবার মুরগির দাম যেমন বাড়ছিল এবার বাড়ে নাই। ব্রয়লার এখনও ১৩৫ টাকা, পাকিস্তানি কক ২২০ টাকা। দুই দিন ধইরা কম কাস্টমারই দুইটার বেশি মুরগি কিনছে।’
সবজির দাম বাড়া-কমার বিষয়ে কাওরান বাজারের এক ক্রেতা জুলহাস বলেন, ‘সবজির বাজার এক সপ্তাহ বাড়ব-বাড়ব করছিল, দুই দিন ধরে বেশি বাড়ছে। কারওয়ান বাজারে প্রথমে মরিচের পাল্লা (৫ কেজি) ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্য কয়টি সবজি কিইন্যা আবার মরিচ কিনতে গেলাম, চাইল ১৪০ টাকা। দাম কমবো চিন্তা কইরা এবারও কিনি নাই। দাম কমে না দেইখা শেষে ১৭০ টাকায় পাল্লা কিনতে হইল। পরে মরিচই নাই বাজরে। দুই দিন আগেও মরিচের পাল্লা ছিল ৮০ টাকা।’
অন্য সবজির দাম বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, দুই দিন আগে ঢেঁড়সের পাল্লা কিনছি ১১০ টাকায়। আইজ কিনলাম ১৭০ টাকায়। কিন্তু বেচছি কেজি ৪০ টাকা, লাভ কম। ঝিঙ্গা বাজারে নাই, ধুন্দল বাজারে নাই। যে কয়টা আসছে, আড়তদারা যে দাম চায়, কেউ দাম করার পারে না। প্রায় সব সবজিতেই কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বাড়ছে।’
একই বাজারের অপর বিক্রেতা শিহাব বলেন, ‘গত কালের চেয়ে কাস্টমার কম। তবে আগের চাইতে একটু বেশি। লকডাউনের খবরে আগে থেইকা দাম একটু বাড়ছে। তবে পেঁয়াজের বাজার ভাল না। গত সপ্তাহের শুরুতে ৫৫ টাকাও উঠছে, পরে আবার কমছে। এখন প্রতিকেজি ৫০ টাকায় বিক্রি, কেজিতে ২-৩ টাকা লাভ করি। ২২ টাকার আলুও ২৫ টাকা হইছে। বড় রসুন ১৩০ টাকা, দেশি ছোট রসুন ৭৫ থেকে ৮০ টাকা। আদার দাম একটু কমছে ১৫০ টাকা। তয়, দাম আবার বাড়ব, বাজারে আদাই পাই নাই।’
সান নিউজ/এমএম