নিজস্ব প্রতিবেদক : এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ব্রয়লার মুরগি, ডিম, চাল ও আলুর দাম বেড়েছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ১০ টাকা বেড়ে ১৫০ টাকা হয়েছে। মুরগির ডিম ডজন প্রতি ১০ টাকা বেড়ে হয়েছে ১১০ টাকা। আর সব ধরনের চালের দাম প্রতি কেজিতে ১/২ টাকা বেড়েছে। তবে কমেছে পেঁয়াজের দাম। আর অপরিবর্তিত রয়েছে মাছ-মাংসের বাজার।
রাজধানীর এয়ারপোর্ট এলাকা, খিলক্ষেত, শ্যামলী, মোহাম্মদপুর ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
রাজধানীর এয়ারপোর্ট, খিলক্ষেত ও মোহাম্মদপুর কৃষি বাজারে ব্রয়লার মুরগি ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন ব্যবসায়ীরা। তবে কারওয়ান বাজারে ১৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতেও দেখা গেছে।
খিলক্ষেত কাঁচাবাজারের মুরগি বিক্রেতা মো. রুবেল মিয়া বলেন, ‘ব্রয়লার মুরগি ১৫০ টাকা কেজি দরে, সোনালিকা (কক) মুরগি আগের চেয়ে ২০ টাকা কমে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি।’
মোহাম্মপুরের কৃষি বাজারের ব্রাদার্স ব্রয়লার হাউসের মালিক মো. ইব্রাহীম বলেন, ‘ব্রয়লার মুরিগ গত সপ্তাহের চেয়ে ১০ টাকা বেড়ে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। আর সোনালিকা (কক) ২২০ থেকে ২৩০ টাকা এবং লেয়ার মুরগি বিক্রি করছি ২৫০ টাকা কেজি দরে।
খিলক্ষেতের খুচরা ডিম বিক্রিতা সজিব মিয়া বলেন, ‘ডিমের দাম দুই দিন ধরে বাড়তির দিকে রয়েছে। এখন ১১০ টাকা ডজন দরে মুরগির ডিম বিত্রি করছি। আর হাঁসের ডিম ১৫০ টাকা করে ডজন বিক্রি করছি।’
একই বাজারের আলীফ ডিমের আড়তের মালিক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘দুই দিন ধরে ডিমের দাম ডজন প্রতি পাইকারি পর্যায়ে ৫ টাকা বেড়েছে। আর খুচরা বাজারে ডজন প্রতি ১০ টাকা বেড়েছে।’
শ্যামলীর কাঁচাবাজার, মোহাম্মদপুরের কৃষি বাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে একই ধরনের চিত্র দেখা যায়।
শ্যামলী কাঁচাবাজারের ডিম বিক্রেতা রোকসানা খাতুন বলেন, ‘মুরগির ডিম ১১০ টাকা ডজন দরে বিক্রি করছি। দুই-তিন ধরে দাম বাড়তি। একই বাজারের মুরিগি বিক্রেতা জাহিদুল ইসলাম জানান, ‘ব্রয়লার মুরিগি ১১০ থেকে ১১৫ টাকা কেজি দরে, সোনালিকা (কক) ২৪০ টাকা কেজি আর লেয়ার মুরগি ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। দাম গত সপ্তাহের চেয়ে ব্রয়লার মুরগি ১৫ টাকা বেড়েছে। আর সোনালিকা মুরগি ১০ টাকা কমে ২৪০ টাকা দরে বিক্রি করছি।’
তবে বিকেলের দিকে কারওয়ান বাজারে ব্রয়লার মুরিগ ১৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। আর মুরগির ডিমের দাম অন্যান্য বাজারের মতো কারওয়ান বাজারেও ১১০ টাকা ডজন দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
কারওয়ান বাজারের খুচরা মুরগি বিক্রেতা আব্দুস সালাম বলেন, ‘ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা বেড়েছে। আমরা ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা কেজি দরে মুরগি বিক্রি করছি। আর সোনালিকা (কক) মুরিগি ২০ টাকা কমে ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি।’
সয়াবিন তেল: বাজারে এক লিটারের বোতলজাত সয়াবিনের সর্বোচ্চ খুচরা বিক্রয়মূল্য ১৫৩ টাকা। আর ৫ লিটারের বোতলের দাম ৭২৮ টাকা। তবে খিলক্ষেত, শ্যামলী, মোহাম্মদপুর ও কারওয়ান বাজারে বোতলের গায়ে লেখা দামের তুলনায় কিছুটা কম দামে বিক্রেতাদের সয়াবিন তেল বিক্রি করতে দেখা যায়। বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন তেল ১৫০, দুই লিটার ২৮০ এবং পাঁচ লিটারের বোতল ৭০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
পেঁয়াজ: পেয়াজের দামও গত সপ্তাহের চেয়ে ৫ টাকা কমেছে। গত সপ্তাহে ভারতীয় পেঁয়াজ ৫০-৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও চলতি সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা কেজি দরে।
দাম বেড়েছে মোটা চালের: রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে মোটা চাল খুচরায় ৪৫ থেকে ৪৭, বিআর আটাশ ৫০ থেকে ৫২, মিনিকেট ৬৪ থেকে ৬৬ এবং নাজিরশাইল ৬৭ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মোহাম্মপুর কৃষি বাজারের চালের আড়ৎদার দিনাজপুরে ট্রেডার্সের মালিক আসাদুজ্জামান বলেন, ‘বাজারে সব ধরনের চাল এই সপ্তাহে ১/২ে টাকা বেড়েছে। বিআর আটাশ ৪৫ থেকে ৪৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৬৭ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে।’ সামনের দিনগুলোতে চালের দাম আরও বাড়বে বলে জানালেন এই বিক্রেতা।
বাজার ঘুরে দেখা যায় সব ধরনের মাছ ও মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মোহাম্মদপুর কৃষি বাজারে গরুর মাংস ৫৫০ টাকা, খাসি ৮৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। চলতি সপ্তাহে মাছের দাম বাড়েনি।
সবজির সরবরাহও স্বাভাবিক রয়েছে। বাজার ঘুরে বিভিন্ন সবজির দরদামে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। তবে বেশিরভাগ বাজারে সবজির কেজি প্রতি দাম ৫ থেকে ১০ টাকার তারমধ্যে দেখা গেছে। বাজারে পেঁপে ৪০-৪৫ টাকা, বেগুন ৫০-৫৫, পটল ৪০-৪৫, করলা ৭০-৭৫ টাকা, টমেটো ১০০-১১০ টাকা, বরবটি ৬০-৭০ টাকা, লতা ৬০-৬৫ টাকা ঝিঙ্গা ৫০-৬০, চিচিঙ্গা-৫০-৫৫ টাকা, ঢেড়শ ৪০-৪৫ টাকা এবং ২২-২৫, ভারতীয় রসুন ১২০ টাকা, দেশি রসুন ১০০ টাকা, আদা ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
সান নিউজ/এসএম