নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে ব্যাংকের লেনদেন সীমিত করা হয়েছে। একই সাথে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানতে জোড় তাগিদ দেয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। অতিরিক্ত গ্রাহক উপস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যববিধি উপেক্ষিত হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-ফিতরকে সামনে রেখে গ্রাহকরা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি লেনদেন করছেন। সেবা প্রাপ্তির সময়ও কম। দুয়ে মিলে ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। টাকা তোলা ও জমা দেওয়ার দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। তবে ভিড় সামলাতে সংশ্লিষ্টদের তৎপরতাও দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার (০৬ মে) রাজধানীর ব্যাংক পাড়া খ্যাত মতিঝিল এলাকায় এমন দৃশ্য দেখা গেছে। এছাড়া শনির আখড়া, দৈনিক বাংলা, পল্টনসহ রাজধানীর অন্যান্য এলাকার ব্যাংকগুলোর দৃশ্যও প্রায় একই ছিলো।
ইসলামী ব্যাংকের শনির আখড়া শাখায় দেখা গেছে টাকা জমা ও উত্তোলনে কাউন্টারে সামনে লম্বা লাইন। ফলে ব্যস্ত সময় পার করছেন ব্যাংকাররা।
বিষয়টি নিয়ে ওই শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. নাজিম উদ্দীন বলেন, ঈদের আগে গ্রাহকের ভিড় বাড়ে- এটা স্বাভাবিক। সকাল থেকেই প্রতিটি ক্যাশ কাউন্টারে গ্রাহকের ভিড়। ঈদে লোকজন গ্রামে যাবেন। আবার অনেকে কর্মীদের বেতন বোনাস দিবেন। সব মিলিয়ে ঈদ উপলক্ষে ব্যবসা ও নিজস্ব প্রয়োজনে টাকা উত্তোলন করছে। এছাড়া সঞ্চয়পত্রের মুনাফা তুলছেন। আবার অনেকে ডিপোজিটের অর্থ জমা করছে।
এসবিএসি ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, সকাল থেকে বাড়তি গ্রাহকের চাপে সেবা দিতে ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হিমশিম খাচ্ছে। তবে নগদ টাকার কোনো সমস্যা নেই। এছাড়া বৃহস্পতিবার ও রোববার একটু বেশি চাপ থাকে বলে জানান তিনি।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, ঈদের আগে আর মাত্র দুটি কার্যদিবস পাওয়া যাবে। তাই গ্রাহকরা আগেই প্রয়োজনীয় অর্থ উত্তলন করছেন ও জমা দিচ্ছেন।
ব্যাংক এশিয়ার কর্মকর্তা আবির হোসেন বলেন, গ্রাহকের সংখ্যা বেশি হওয়ায় শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মানা কষ্টসাধ্য হয়ে গেছে।
গ্রাহকরা বলছেন, ঈদের আগে এমনিতে গ্রাহকের চাপ বেশি থাকে। আবার সময় কম। এতে আমাদের ভোগান্তি বেড়েছে। তাই ইচ্ছা থাকা স্বত্ত্বেও স্বাস্থ্যবিধি মানা সম্ভব হচ্ছে না।
জানা গেছে, করোনার প্রাদুর্ভাব কমাতে গত মাসের ১৪ তারিখ থেকে সরকার কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে। বিধিনিষেধ চলাকালীন ব্যাংক লেনদেনও সীমিত করা হয়। গতকাল বুধবার (৫ মে) পর্যন্ত লেনদেনের সময় ছিলো সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত। আর আনুষঙ্গিক কাজের জন্য ব্যাংক খোলা রাখা হতো আড়াইটা পর্যন্ত।
তবে বৃহস্পতিবার (০৬ মে) থেকে আগামী ১৬ মে পর্যন্ত লকডাউন বৃদ্ধি করায় ব্যাংকের লেনদেনের সময়ও এক ঘণ্টা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অর্থাৎ আগামী ১৬ মে পর্যন্ত লেনদেন চলবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। আর আনুষঙ্গিক কাজের জন্য ব্যাংক খোলা থাকবে বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত।
সাননিউজ/আরএম/আরএস