রাসেল মাহমুদ : পবিত্র মাহে রমজান সামনে রেখে দেশের প্রায় সকল পণ্যই বেশি দামে বিক্রি হয়। ক্রেতারা অনেকটা বাধ্য হয়েই কেনেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। রমজানকে সামনে রেখে ইতিপূর্বেই বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ প্রায় সকল পণ্যের দাম। সেই সঙ্গে বেড়েছে সব ধরনের ফলের দাম। রমজানে সব ধরনের ফলের প্রতি ভোক্তাদের বাড়তি চাহিদা থাকে। এবছরও তাই।
তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, লকডাউনের কারণে আমদানিও কিছুটা কম। এটাও দাম বাড়ার অন্যতম কারণ।
ভোক্তারা বলছেন, রমজান আসলেই ফলের প্রতি আকর্ষণ কিছুটা বাড়ে। আবার বছরের অন্যান্য সময় যারা ফল কিনতে পারেন না তারাও চান ইফতারিতে অন্তত একটু ফল থাক। তাই রোজা আসলে ফলের দোকানে থাকে বাড়তি ভিড়।
জানা গেছে, সরকার ঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউন আর রোজা-দুইয়ের সমন্বয়ে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের ফল। নাশপাতি, খেজুর, আপেল, আঙ্গুর, মাল্টা, আনারস ও বেদানার দাম রীতিমতো বেড়েছে। এর মধ্যে কোনো কোনো ফলের দাম কেজি প্রতি ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
রোববার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, শনিরআখড়াসহ আশপাশের বাজারগুলোতে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। এছাড়া মগবাজার, মৌচাক, মালিবাগ, শান্তি নগর ও খিলগাঁও এলাকার বাজারগুলোতেও ফলের দাম বাড়তি বলে জানা গেছে।
বিক্রেতারা বলছেন, লকডাউনের কারণে ফল আমদানি কমেছে। এছাড়া রমজান মাসে এমনিতেই ফলের দাম একটু বেশি থাকে। তবে লকডাউনের কারণে একটু বাড়তি ফলের দাম। তাই পাইকারিতে বেশি দামে ফল কিনতে হচ্ছে। এ জন্য খুচরা বিক্রিতে দাম একটু বেশি ধরা হচ্ছে।
বিভিন্ন এলাকার ফলে দোকান ঘুরে দেখা গেছে- নাশপাতি, আপেল, খেজুর, আঙ্গুর, মাল্টা ও বেদানা বাড়তি দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। বাড়তি দামে বিক্র হচ্ছে কলাও। এসব ফলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে নাশপাতির। ফলটি কেজিপ্রতি ২৫০ থেকে ২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুই সপ্তাহ আগেও ফলটি কেজিপ্রতি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
কেজিপ্রতি মাল্টা বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায়। কোথাও ২০০ টাকাও বিক্রি হতে দেখা গেছে। দুই সপ্তাহ আগেও কেজিপ্রতি মাল্টা বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় ।
অন্যান্য ফলের সাথে বেড়েছে আপেলের দামও। সপ্তাহ দুয়েক আগেও আপেল ১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। এখন সে আপেল কেজিপ্রতি ২০০-২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সব ধরনের কলার দামও আকাশ চুম্বি। ক্রেতার পছন্দের শীর্ষে থাকা সবরি কলা প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকায়। গত সপ্তাহেও এক ডজন সবরি কলা মিলেছে ৯০-১০০ টাকায়।
ছোট আকারের জলডুগি আনারসের দাম কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে। রোজার আগে প্রতিপিচ ছোট আনারস ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখনো সে দাম অব্যাহত রয়েছে। তবে কিছু কিছু বিক্রেতা বেশি দামে বিক্রি করছে বলে জানা গেছে।
তরমুজের দামও স্থিতিশীল রয়েছে। রোজার আগে প্রতিকেজি তরমুজ ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আজও এ দামেও তরমুজ বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া প্রতি কেজি পেয়ারা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, খেজুর প্রকার ভেদে ২২০ থেকে ৩৫০ টাকা এবং আঙ্গুর বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়।
রাজধানীর কাজলা এলাকা থেকে তরমুজ ক্রেতা আওয়াল সাননিউজকে বলেন, রোজার আগেও প্রতিকেজি তরমুজ ৪০ টাকায় কিনেছিলাম। আজও সে দামেই কিনেছি। তবে আপেল, কমলা আর মাল্টার দাম অনেকে বেড়েছে বলে দাবি করেন এই ক্রেতা।
শনির আখড়ার ফল বিক্রেতা আজাদ বলেন, একদিকে রোজা অন্যদিকে লকডাউন। এ সময় ফলের আমদানি কম থাকায় দাম কিছুটা বেশি।
যাত্রাবাড়ী এলাকার ফল ব্যবসায়ী রশিদ বলেন, সর্বাত্মক লকডাউনে এমনিতেই সরবরাহ কম। এছাড়া রোজার সময় ফলের চাহিদা একটু বেশিই থাকে। তাই দাম একটু বেশি।
সাননিউজ/আরএম/এসএম