নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি হয়েছে ফারুক হাসান। সাতজন সংগঠনের সহ-সভাপতি হয়েছেন। এছাড়াও নির্বাচিত ৩৫ জন পরিচালক ২০২২-২০২৩ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করবে। মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে তারা দায়িত্বগ্রহণ করবেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিজিএমইএর নতুন সভাপতি ফারুক হাসান। তিনি বলেন, বোর্ড আমাদেরকে বিজিএমইএর নতুন পর্ষদ হিসেবে নির্বাচিত করেছে। মঙ্গলবার দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেবেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে স্বল্প পরিসরে অনুষ্ঠানটি হবে।
বিজিএমইর নতুন সহ-সভাপতিরা হলেন- চট্টগ্রামের সৈয়দ নজরুল ইসলাম। তিনি সংগঠনের প্রথম সহ-সভাপতি হয়েছে। অপরদিকে সংগঠনটির সিনিয়র সহ-সভাপতি হয়েছেন এস এম মান্নান কচি। আর বাকি পাঁচজন সহ-সভাপতি হলেন- শহীদউল্লাহ আজিম (ঢাকা), খন্দকার রফিকুল ইসলাম (ঢাকা), মিরান আলী (ঢাকা), মো. নাছির উদ্দিন (ঢাকা) ও রকিবুল আলম চৌধুরী (চট্টগ্রাম)।
রোববার (১১ এপ্রিল) ২০২২-২০২৩ মেয়াদের জন্য নির্বাচিত ৩৫ পরিচালকের মধ্য থেকে সভাপতি ও সাতজন সহ-সভাপতি পদে নির্বাচনের জন্য আটজন মনোনয়নপত্র জমা দেন। অন্য কেউ প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় ১২ এপ্রিল, সোমবার বোর্ড তাদের নামই ঘোষণা করে।
গত ৪ এপ্রিলের বিজিএমইএর দ্বিবার্ষিকী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত পরিষদ ঢাকা ও চট্টগ্রামের ৩৫ পরিচালক পদের মধ্যে ২৪টিতে বিজয়ী হয়। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে ড. রুবানা হকের প্যানেল থেকে জয়ী হয়েছিলেন ১১ জন।
এদিকে সোমবার ‘কোভিড অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউ : কীভাবে সামলাব?’ শীর্ষক বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ওয়েবিনার সংলাপে এক প্রশ্নের জবাবে বিজিএমই সভাপতি ও জায়ান্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক হাসান বলেন, সব গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন ও ঈদের বোনাস দেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে।
শ্রমিকদের রোজার ঈদের বোনাস ও বেতন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ফারুক হাসান বলেন, গত লকডাউনে এপ্রিল এবং মে মাসের বেতন ও ঈদের বোনাস দেওয়া হয়েছিল। আমরা আশা করি এবং প্রস্তুতিও থাকবে সব কারখানার শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস দেওয়ার। তবে কারখানা চালু রেখে শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস দেওয়া অব্যাহত রাখতে চাই। এক্ষেত্রে সরকারেরও সহযোগিতা প্রয়োজন।
লকডাউনে কারখানা খোলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের কারখানা বন্ধ হলে শিপমেন্ট দিতে পারব না। ভারতসহ বিভিন্ন দেশে লকডাউনে কারখানা চালু রেখেছে। আমরা ব্যবসার স্বার্থে স্বাস্থ্যবিধির প্রটোকল মানতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে বাধ্য করতে বিজিএমইএ'র ১০টি টিম আছে, যারা মনিটরিং করছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় পর্যায়ের মনিটরিং টিম রয়েছে। অন্যদিকে আমাদের কারখানাগুলো প্রতিনিয়ত তৃতীয় পক্ষ ও বায়ারদের প্রতিনিধি পরিদর্শন করছে। একটি কারখানা যদি আক্রান্ত হয়ে যায়, তাহলে তা সবার জন্য বিপদ। আমরা আমাদের নিজেদের স্বার্থে স্বাস্থ্য প্রটোকলগুলো মানতে বাধ্য।
ফারুক হাসান বলেন, কোভিডের কারণে বিশ্বের কেউ ভালো নেই। এর আগের লকডাউনে তৈরি পোশাক খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিজিএমইএর পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে যথেষ্ট মনিটরিং করা হয়েছে। তাছাড়া ৯০ শতাংশ কর্মী কারখানার আশেপাশে থাকে। তারা মোটামুটি স্বাস্থ্যবিধি মেনে থাকেন কিংবা গার্মেন্টস কারখানাও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা হয়। লকডাউন অবস্থায় যদি কারখানা বন্ধ হয়, তাহলে তারা বাড়ির দিকে ছুটবে। সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকেই যাবে। গতবারের অভিজ্ঞতা তাই বলছে।
সান নিউজ/এসএম